শেরপুরে জেলা সদর হাসপাতালের জুরুরি বিভাগে শান্তা (২৫) এক নববধূর মরদেহ ফেলে কৌশলে পালিয়েছে তার স্বামী নওশাদ আলম মুরাদ। এছাড়া জেলার নালিতাবাড়ীতে ইউনুছ আলী নামে শ্যালকের লোহার দন্ডের আঘাতে মজিবর রহমান ওরফে ময়েজ উদ্দিন (৬৫) নামের ভগ্নিপতির মৃত্যু ও নকলা উপজেলায় আইয়্যুব আলী (৬৫) নামে এক চাচাকে গলাকেটে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার ভাতিজা ও দুই নাতিরে উপর।
জানা গেছে, শেরপুরে সদর হাসপাতালের জুরুরি বিভাগে শান্তা (২৫) নামে এক নববধূর মরদেহ ফেলে পালিয়েছে তার স্বামী এসিআই কোম্পানির মেডিক্যাল প্রতিনিধি নওশাদ আলম মুরাদ। শুক্রবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটেছে।
শান্তার বাড়ি নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলায় ও তার বাবার নাম জুয়েল মিয়া বলে জানা গেছে। শান্তার সাথে গত পাঁচ মাস আগে পারিবারিক ভাবে নওশাদের বিয়ে হয়েছে বলে অনেকে জানান।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার বিকেলে নিহতের স্বামী মুরাদ তার স্ত্রীকে রিক্সা যোগে শহরের গরুহাটির ভাড়াবাসা থেকে শেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে জরুরি বিভাগে আনেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক পরিক্ষা নিরীক্ষা করে শান্তাকে মৃত ঘোষণা করেন। অবস্থা বেগতিক দেখে নিহতের স্বামী মুরাদ কৌশলে পালিয়ে যায়। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে মরদেহ হেফাজতে নেন।
শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল কর্মকর্তা ডা. হুমায়ুন আহমেদ নুর জানান, নিহত গৃহবধূর গলায় ফাঁসির দেওয়ার মতো আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
এ বিষয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই তারেক হাসান জানান, পুলিশ মরদেহের সুরতহালের রিপোর্ট তৈরি করেছে। এটি পরিকল্পিত হত্যা নাকি অন্যকোন বিষয় জড়িত তা তদন্ত শেষে বলা যাবে বলে এসআই তারেক হাসান জানান জানান।
অপর দিকে, জেলার নালিতাবাড়ীতে ইউনুছ আলী নামে শ্যালকের লোহার দন্ডের আঘাতে মজিবর রহমান ওরফে ময়েজ উদ্দিন নামের ভগ্নিপতির মৃত্যু হয়েছে।
জানা গেছে, শ্যালক ইউনুছ আলী ও তার ভগ্নিপতি মজিবর রহমানের এক বাড়ি ছিলো। ইউনুছ আলী বাড়ির মাঝখান দিয়ে বাঁশের বেড়া দিতে গেলে মজিবর রহমান বাধা দিতে গেলে উভয়ের মাঝে বাকবিতন্ডার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে শ্যালক ইউনুছ আলী ক্ষিপ্ত হয়ে হাতে থাকা লোহার দন্ড দিয়ে তার ভগ্নিপতি মজিবরের মাথায় আঘাত করেন। এতে ভগ্নিপতি মজিবর রহমান গুরুতর আহত হলে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎকগন তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন এবং পথিমধ্যে মজিবর মারা যান।
এ ঘটনায় নিহতের ছেলে জবেদ আলী বাদী হয়ে নালিতাবাড়ী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। নালিতাবাড়ী থানার ওসি ছানোয়ার হোসেন জানান, অভিযুক্ত শ্যালক ইউনুছ আলীকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরন করা হয়েছে।
এছাড়া, নকলা উপজেলার গৌড়দ্বার ইউনিয়নের রুনিগাঁও মধ্যপাড়া এলাকার আইয়্যুব আলী (৬৫) নামে এক চাচাকে গলাকেটে হত্যার অভিযোগে ভাতিজা মুকুল মিয়া (৪৫) ও তার দুই ছেলে (নিহতের নাতি) মহসিন হাসান (২৩) ও জিহান হাসান (২০) কে আটক করেছে পুলিশ।
নিহতের ছেলে রাজন মিয়া বলেন, আমাদের পরিবারের সাথে মুকুল মিয়ার জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ আছে। ঘটনার দুইদিন আগেও আমার বাবা আইয়্যুব আলীকে হত্যার হুমকী দেয় মুকুল মিয়া। এর জেরেই তাকে গলাকেটে হত্য করা হয়েছে বলে রিহতের পরিবারের দাবী।
নকলা থানার ওসি হাবিবুর রহমান জানান, নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তিন জনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনাটি যেহেতু রাতের আধারে ও গোপনে করা হয়েছে; সেহেতু তদন্ত কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিশ্চিত করে কিছু বলা যাবেনা। তদন্ত কাজসহ পরবর্তী আইনী কার্যক্রম চলমান আছে বলে তিনি জানান।