নিউমোনিয়া সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে সারা দেশের ন্যায় শেরপুরের নকলায় বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবস-২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে সচেতনতামূলক র্যালি ও সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সকালে ‘আসুন নিউমোনিয়া বন্ধ করার লড়াইয়ে সক্রিয় সহযোগী হই’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আয়োজনে র্যালিটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে থেকে শুরু হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা-এর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত র্যালির অগ্রভাগে ও আলোচনা সভায় আবাসিক মেডিক্যাল কর্মকর্তা ডা. মাহমুদুল হাসান, এমটিইপিআই আব্দুর রহিম, সেনেটারী ইন্সপেক্টর (এসআই) হাসান ফেরদৌস আলম, সিনিয়র অফিস সহকারী আবু তারেক মুহাম্মদ মোতাচ্ছিম বিল্লাহ, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর জহিরুল ইসলাম, নার্সিং সুপারভাইজার রিনা বেগম, উপজেলা সরকারি কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সভাপতি স্টোরকিপার ইনচার্জ মো. মোস্তাফিজুর রহমান, মেডিক্যাল এ্যাসিসটেন্ট সরোয়ার হোসেন, মেডিক্যাল টেকনোলজিষ্ট আবু কাউসার বিদ্যুৎ, ওয়ার্ড ইনচার্জ আলেয়া পারভীন, সিনিয়র স্টাফ নার্স আসমা বেগম, মিডওয়াইফাই নুরনাহার মির্জাসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত চিকিৎসক ও নার্সসহ অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীগন উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, নিউমোনিয়া ফুসফুসের প্রদাহজনিত মারাত্মক একটি রোগ। এরোগে আক্রান্ত রোগীর ফুসফুসে সাধারণত স্ট্রেপটোকক্কাস জাতীয় ব্যাকটেরিয়া কিংবা শ্বাসযন্ত্রের সিনসিশিয়াল ভাইরাস (আরএসভি) সংক্রমণ ঘটায়। এতে ফুসফুস ফুলে যায় ও পুঁজে বা তরল পদার্থে ভরে ওঠে। যা অক্সিজেন গ্রহণ করে নিঃশ্বাস নেওয়ার ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। তখন ফুসফুসে প্রদাহ হয়। বিশেষ করে শীতকালে এ রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ে এবং শিশু ও বৃদ্ধরাই এতে বেশি আক্রান্ত হয়।
চিকিৎসকদের মতে, অপুষ্টি, বায়ুদূষণ, টিকা না নেওয়া ও অ্যান্টিবায়োটিকের অভাবে শিশুরা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে থাকে। এ ছাড়া অল্প বয়স্ক, স্বাস্থ্যবান এবং তরুণদেরও নিউমোনিয়া হতে পারে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যানের তথ্যমতে, দেশে দৈনিক গড়ে ৭০৯ জনের শরীরে নিউমোনিয়া শনাক্ত হচ্ছে। চলতি বছরের গত ১০ মাসে দেশে ২ লাখ ১৬ হাজার ৪২৬ শিশু নিউমোনিয়াতে আক্রান্ত হয়েছে। গত বছর এ রোগে আক্রান্ত হয়েছিল ২ লাখ ৪ হাজার ৪১২ শিশু। তথ্য মতে, প্রায় শতভাগ নিউমোনিয়া প্রতিরোধে সরকারি টিকা প্রদান করা সম্ভব হয়েছে।
নিউমোনিয়া প্রতিরোধে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, সুষম খাবার গ্রহণ ও ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে। অন্যের সামনে হাঁচি বা কাশি দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। হাঁচি বা কাশি দেওয়ার সময় মুখে হাত দিয়ে বা রুমাল ব্যবহার করতে হবে। নিউমোনিয়া আক্রান্ত রোগীদের রক্তে অক্সিজেনের ঘাটতি (হাইপক্সেমিয়া) দেখা দেয়, যা একটি জটিল সমস্যা। রক্তের অক্সিজেনের ঘাটতির কারণে শিশুদের বেশি মৃত্যু হচ্ছে। তাই জেলা, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ সকল হাসপাতালে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।