আওয়ামী লীগ সরকারের দুঃশাসনের কারণে দীর্ঘ ১৬ বছর পর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী শেরপুর জেলা শাখার রুকন সম্মেলন ৩০ আগস্ট শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টায় শেরপুর জেলা শহরের পৌর অডিটোরিয়াম টাউন হলে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী শেরপুর জেলা শাখার আমীর মাওলানা মোঃ হাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী শেরপুর জেলা শাখার সেক্রেটারি নুরুজ্জামান বাদলের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ডক্টর সামিউল হক ফারুকী।
এসময় বক্তাগণ উপস্থিত জেলা ও উপজেলা থেকে সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী রুকনদের উদ্দেশ্যে বলেন, ১৬ বছর দেশে আওয়ামী লীগ সরকারের দুঃশাসনে যাকে বলে ফেরাউন ও নমরুদের মত অত্যাচারে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিল। এতে আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে ধ্বংস ও নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দদের মধ্যে প্রথম সারির বেশ কয়েকজন নেতাকে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ এনে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেন। শেরপুরের কৃতি সন্তান দেশের উজ্জল নক্ষত্র বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় সহকারি সেক্রেটারী জেনারেল শহীদ মুহাম্মদ কামারুজ্জামানকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেন। এসব নেতাদের ফাঁসি দিয়ে জামায়াতের আদর্শ ধ্বংস করতে পারেনি এবং কোন দিনেও জামায়াতের নীতি আদর্শ থেকে কাউকে সরানো যাবে না।
এসময় আল্লাহর আইন কুরআন সুন্নাহর আলোয় আলোকিত হয়ে বাংলাদেশে ইসলামী আইন প্রতিষ্ঠা করতে উপস্থিত রুকনদের ঈমানি শক্তি ধারণ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সংগঠনকে আরো শক্তিশালী করার আহ্বান জানান।
এছাড়াও বক্তারা আরো বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ইসলামী ব্যাংকের লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে ব্যাংকটিকে ধ্বংস করার অপচেষ্টায় লিপ্ত ছিল এবং তারপরেও ব্যাংকটি আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এদিকে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত তাদের বাঁধের পানি ছেড়ে দেয়ার কারণে দেশের ১২টি জেলা প্লাবিত হয়ে বাড়িঘর ক্ষতি সাধিত হয়েছে এবং অনেক মানুষ মারা গেছে। এমন অবস্থায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বন্যা কবলিত ও দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং তাদের পাশে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে বলে এমনটাই বলেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শেরপুর জেলা জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুল বাতেন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবির শেরপুর জেলা শাখার সভাপতি মোঃ আশরাফুলজ্জামান মাসুম। পরে শহদী পরিবারের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শহীদ মাহবুবের ভাই মাজহারুল ইসলাম মাসুদ, শহীদ সৌরভের ফুফা মিন্টু মিয়া, শহীদ সবুজের মামা কাউসার মাহমুদসহ শহীদ পরিবারের স্বজনরা।
বক্তব্য শেষে বাদ আসর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজধানী ঢাকা ও শেরপুর জেলায় নিহত ১৩ পরিবারের প্রত্যেককে ২ লাখ টাকা করে ২৬ লাখ টাকা অনুদান দেয়া হয়। এসময় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী শেরপুর জেলা কর্মপরিষদ সদস্য আনোয়ার হোসেন, আবুল কালাম, আব্দুল আওয়াল, আব্দুল কাদের, মাহফুজুল রহমান, মাওলানা নুরুল আমিন, ফারদিন হাসান হাসিব, মাওলানা আফসার উদ্দিন, মাওলানা নুরে আলম সিদ্দিকী, মাওলানা আতাউর রহমান, গোলাম সারোয়ার, আব্দুল হাকিম, মাহবুবর রহমান মিস্টারসহ জেলা জামায়াত-শিবিরের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।