শেরপুরের নকলায় শফিকুল ইসলাম শফিক (৫৫) নামে এক ব্যবসায়ীর গলাকাটা ও ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাতের যেকোন সময় শফিককে এলাপাথারি কুপিয়ে ও গলাকেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। উপজেলার টালকী ইউনিয়নের সাইলামপুর পূর্বপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সে ওই এলাকার মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শফিকুল ইসলাম শফিক পেশায় পল্লী চিকিৎসক ছিলেন। তার বাড়ির অদূরে দিহান স্টোর এন্ড মেডিসিন পয়েন্ট নামে একটি দোকান ছিল; সেখানে ঔষধসহ মনোহারী সামগ্রী ও বিকাশ ব্যবসা পরিচালনা করতেন। দোকানের নিরাপত্তার জন্য দীর্ঘদিন যাবৎ তার দোকানে রাত্রী যাপন করতেন। প্রতিদিনের ন্যায় শনিবার রাতের খাবার শেষে সাড়ে ৯টার দিকে দোকানে যায়। পরের দিন রোববার সকাল ৮টার দিকে নিহত শফিকের পুত্রবধু প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আনার জন্য দোকানে গিয়ে সাটার বন্ধ দেখে ডাকাডাকি করতে থাকেন। পরে কোন সাড়া না পেয়ে দোকানের পিছন দিকের দরজা খোলা পেয়ে ভিতরে গিয়ে দেখেন দোকানের সব মালামাল এলোমেলো ও মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় শশুরের (শফিকের) মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। পরে তার ডাকচিৎকারে স্থানীয়রা মরদেহ উদ্ধার করেন। দেশের ক্রান্তিকালীন পরিস্থিতির কারনে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়নি।
এলাকাবাসী জানান, নিহত শফিকুল ইসলাম শফিকের এক ভাই ৭নং টালকী ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সহ-সভাপতি ও অপর এক ভাই ৮নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের দাবী, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে এমন ন্যাক্কার জনক ও ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটানো হয়ে থাকতে পারে।
টালকী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাফফর মহিউদ্দিন বুলবুল ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় শফিকের মরদেহ থানায় আনার পরে সুরতহাল প্রস্তুত শেষে ময়না তদন্তের জন্য মরদেহ শেরপুর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
স্থানীয়দের অনেকে ধারনা করে জানান, রাতের আধারে দুর্বৃত্তরা দোকানের দরজার তালা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে শফিককে এলোপাথারী কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে দোকানের নগদ টাকা ও মালামালসহ সবকিছু লোটপাট করে নিয়ে গেছে।
খবর পেয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ.কে.এম মাহবুবুল আলম সোহাগ, উপজেলা বিএনপির আহবায়ক খোরশেদুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এই ঘটনার সাথে যেই-ই জড়িত থাকুক, দ্রুত চিহৃত করে হত্যাকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবী করেন তারা।
নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের মিয়া সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।