সরকারের নির্বাহী আদেশে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও এর ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির নিষিদ্ধ করায় শেরপুরের নকলায় উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ মিছিল করেছেন।
বৃহস্পতিবার (পহেলা আগস্ট) সন্ধ্যায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম জিন্নাহ-এঁর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনে থেকে মিছিলটি বের হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিন করে একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়।
পরে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম জিন্নাহ জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করায় সন্তোষ প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন।
মিছিলে উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্মসাধারণ সম্পাদক শাহ মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ.কে.এম মাহবুবুল আলম সোহাগ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বাবু ইন্দ্রজিৎ কুমার ধর সুভাষ, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান লিটন ও আনিসুর রহমান সুজা, দপ্তর সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সোহেল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক গোলাম হাফিজ সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল হক হীরা, ছামিউল হক মুক্তা ও আব্দুর রশিদ সরকার, সহ-দপ্তর সম্পাদক এফ.এম কামরুল আলম রঞ্জুসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ, উপজেলা যুবলীগের সদস্য মর্তুজ আলী ও আদিল আহমেদ পল্লবসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ, উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোশাররফ হোসেন সরকার বাবু ও সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ, উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক আবু হামযা কনকসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ এবং উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ, মৎস্যজীবী লীগ, ছাত্রলীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী অংশ গ্রহন করেন।
সরকার নির্বাহী আদেশে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও এর ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির নিষিদ্ধ করে বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে, পরে প্রজ্ঞাপনটি গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়। গেজেটে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে সংঘটিত গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতা বিরোধী অপরাধে দায়ী হিসাবে গণ্য করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে জামায়াতে ইসলামীকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন দেওয়া হয়। এরপর দলটির নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০০৯ সালে রিট আবেদন করেন তরিকত ফেডারেশনের তৎকালীন মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীসহ ২৫ ব্যক্তি। ২০১৩ সালের ১ আগস্ট হাইকোর্ট জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে রায় ঘোষণা করেন। আপিল বিভাগেও এ রায় বহাল থাকে। এরপর ২০১৮ সালের ৮ ডিসেম্বর দলটির নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন।
বাংলাদেশে ১৯৭২ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত নিষিদ্ধ ছিল জামায়াত। রাজনৈতিক নানান পট পরিবর্তনের পর দেশের রাজনীতিতে আবারও সক্রিয় হয় দলটি। ১৯৮৬ সালে প্রথম বাংলাদেশে নির্বাচনে অংশ নেয় জামায়াত। ২০০১ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার গঠন করলে জামায়াতের কয়েকজন নেতা মন্ত্রিসভায় স্থান পান, যা তখন ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছিলো।