আজ ৬ জুলাই শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার ঐতিহাসিক কাটাখালি-রাঙ্গামাটিয়া যুদ্ধ দিবস। এউপলক্ষ্যে শনিবার বিকেলে জেলা প্রশাসন ও আমরা ১৮ বছর বয়স-এর উদ্যোগে র্যালি, শ্রদ্ধা নিবেদন, আলোচনা সভা ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে প্রথমে কাটাখালি ব্রিজ পাড়ে শহীদ নাজমুলসহ শহীদদের স্মরণে নির্মিত বেদীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়। পরে জেলা প্রশাসক আব্দুল্লাহ আল খায়রুম-এঁর সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শেরপুর-৩ (শ্রীবরদী-ঝিনাইগাতী) আসনের সংসদ সদস্য এডিএম শহিদুল ইসলাম।
আমরা ১৮ বছর বয়স, ঝিনাইগাতী উপজেলা শাখার আহবায়ক তুষার আল নূরের সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার আকরামুল হোসেন পিপিএম, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম হিরো, ঝিনাইগাতী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বাদশা ও ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেল প্রমুখ।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আমরা ১৮ বছর বয়স’র জেলা ফেলো ও জনউদ্যোগের আহবায়ক আবুল কালাম আজাদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল, শহীদ নাজমুলের বোন খালেদা রায়হান রুবী প্রমুখ। আলোচনা সভা শেষে র্যালি ও কাটাখালি ব্রিজের পাশে বৃক্ষরোপণ করা হয়।
এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) হাফিজা জেসমিন, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক, বিশিষ্ট সমাজসেবী রাজিয়া সামাদ ডালিয়া, ঝিনাইগাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায়, মালিঝিকান্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক, শেরপুর ে প্রেসক্লাবের সভাপতি দেবাশীষ ভট্টাচার্য ও সাধারণ সম্পাদক মেরাজ উদ্দিনসহ বিভিন্ন পেশাশ্রেনীর জনগন উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ৬ জুলাই শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার ঐতিহাসিক কাটাখালি ব্রীজে পাক হানাদার বাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে ৩ মুক্তিযোদ্ধাসহ ১২ জন শহীদ হন। এতে শহীদ হন একই পরিবারের তিন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নাজমুল আহসান, মোফাজ্জল হোসেন ও আলী হোসেন। স্বাধীনতা অর্জনের পর শহীদ নাজমুলের নামে ময়মনসিংহ কৃষি বিদ্যালয়ে একটি হল, নালিতাবাড়ীতে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়। আর মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১৮ সালে শহীদ নাজমুলকে স্বাধীনতা পদক প্রদান করা হয়। এর মধ্য দিয়ে ‘অপারেশন কাটাখালি ও রাঙ্গামাটিয়া’ যুদ্ধের সরকারি স্বীকৃতি মিলেছে। এছাড়া স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ও চেতনা ভাস্বর করে রাখার জন্য স্বাধীনতার দীর্ঘ ৪৯ বছর ২০২০ সালে পুরোনো ওই সেতুটি সংরক্ষণে ইতোমধ্যে সংস্কারসহ একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে। সেইসাথে শহীদদের স্মৃতি সংরক্ষণের পাশাপাশি কাটাখালি ব্রীজ অঙ্গনে সম্প্রতি ইতিহাস লিপিবদ্ধকরণসহ দৃষ্টিনন্দন স্বাধীনতা উদ্যান প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। যা নতুন প্রজন্মের কাছে সেইসব ইতিহাস তুলে ধরবে।