শেরপুরের ঐতিহ্যবাহী নকলা প্রেস ক্লাবে চা পানের সুফল ও কুফল বিষয়ক আলোচনার মধ্যদিয়ে জাতীয় চা দিবস পালিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৪ জুন) সন্ধ্যায় প্রেস ক্লাবের অফিস কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ক্লাবটির সভাপতি মোঃ মোশারফ হোসাইন-এঁর সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ নূর হোসেনের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন- প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সদস্য মাহবুবুর রহমান, অর্থবিষয়ক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল-আমিন, সদস্য রেজাউল হাসান সাফিত ও দৈনিক কলিকাল পত্রিকার সম্পাদক প্রকাশক তারেক আহসান প্রমুখ।
বক্তারা চা পানের সুফর ও অতিরিক্ত চা পানের কুফল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন। আলোচনার পরে সবাই একসাথে মানব শরীরের জন্য উপকারী সবুজ চা পান করেন। এসময় প্রেস ক্লাবের নেতৃবৃন্দসহ তরুণ সাংবাদিক স্মার্ট ভিডিও এডিটর হাসান মিয়া ও সাংবাদিক লিমন আহম্মেদসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
‘স্মার্ট বাংলাদেশের সংকল্প, রপ্তানিমুখী চা শিল্প’ এই প্রতিপাদ্যকে ধারন করে বক্তারা জানান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় বাংলাদেশ চা বোর্ডের উদ্যোগে এবার চতুর্থবারের মতো দিবসটি উদযাপিত হয়। এবার দ্বিতীয়বারের মতো ৮টি ক্যাটাগরিতে চা শিল্পে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ বিভিন্ন চা কোম্পানি ও ব্যক্তিকে ‘জাতীয় চা পুরস্কার ২০২৪’ প্রদান করা হয় বলেও তারা জানান। বক্তারা আরো জানান, চা শিল্পের উন্নয়নে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু’র উদ্যোগের ধারাবাহিকতা ও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় চা শিল্প টেকসই উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। ২০২৩ সালে ইউরোপ, এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের ১৩টি দেশে প্রায় ১.৪ মিলিয়ন কেজি চা রপ্তানি করা হয়েছে, যা ২০২২ সালে তুলনায় প্রায় ৩৩ শতাংশ বেশি। আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা অনুযায়ী চা উৎপাদনে ও বাজার জাতকরনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কাজ করছে।
বাংলাদেশ চা বোর্ডের পরিসংখ্যানের বরাতে তারা জানান, দেশে মোট চা বাগানের সংখ্যা ১৬৭ টি; এর মধ্যে মৌলভীবাজার জেলায় ৯১টি এবং বাকি চা বাগানের মধ্যে সিলেটে ১৯টি, হবিগঞ্জে ২৫টি, চট্টগ্রামে ২১টি, পঞ্চগড়ে ৮টি, রাঙ্গামাটিতে ২টি ও ঠাকুরগাঁওয়ে ১টি চা বাগান রয়েছে। দেশে চা চাষের উপযোগী মোট ভূমির পরিমান ২ লক্ষ ৮৭ হাজার ৪২৩ একর বলে তারা জানান।
চায়ের বানিজ্যিক চাষের বিবরণ দিতে গিয়ে বক্তারা জানান, ১৮৪০ সালে দেশে প্রথম বাণিজ্যিকভাবে চট্টগ্রামে চা চাষের সূচনা হয়। তবে ১৮৫৪ সালে সিলেটের মালিনিছড়া চা বাগানে প্রথম বানিজ্যিক ভাবে চা চাষ শুরু করা হয়। ২০২১ সালে ১৬৭টি চা বাগানে ৬৬ হাজার হেক্টর জমিতে বাংলাদেশে রেকর্ড ৯৬.৫১ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন হয়।
উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৭ সালের ৪ জুন থেকে ২৩ অক্টোবর ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত প্রথম বাঙালি হিসেবে চা বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এঁর চা বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব গ্রহনের দিন (৪ জুন)-কে স্মরনীয় করে রাখতে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ঐতিহাসিক এই তারখিটিকে (৪ জুন) জাতিয় চা দিবস হিসেবে ঘোষনা করেন। এর পর ২০২১ সাল থেকে প্রতি বছরের ৪ জুন তারিখে জাতীয় চা দিবস পালন করা হয়।