শেরপুর জেলার নকলা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নির্ধারিত ভোট (প্রদত্ত মোট ভোটের ১৫%) না পাওয়ায় সদ্যসাবেক চেয়ারম্যান, সদ্যসাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানসহ ৭ প্রার্থী জামানত হারাচ্ছেন।
নির্বাচন কমিশনের বিধান অনুযায়ী যাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে তাঁরা হলেন- সদ্যসাবেক চেয়ারম্যান শাহ্ মোঃ বোরহান উদ্দিন, সদ্যসাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মোছাঃ ফরিদা ইয়াসমিন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মোছাঃ কহিনুর বেগম ও আলেয়া পারভিন এবং ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী বেলায়েত হোসেন আকন্দ, মোঃ রেজাউল করিম ও মোঃ মামুন হোসেন।
ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী নকলা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মোট ভোট পড়েছে ৮২ হাজার ৬১২টি; যা মোট ভোটের ৪৬%। এতে সাবেক চেয়ারম্যান ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ.কে.এম মাহবুবুল আলম সোহাগ, দোয়াত-কলম প্রতীকে ২০ হাজার ৬৫৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোঃ মোকশেদুল হক শিবলু, কাপ-পিরিচ প্রতীকে পেয়েছেন ১৯ হাজার ২১৩ ভোট।
এছাড়া অন্য তিন প্রার্থীর মধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ শফিকুল ইসলাম জিন্নাহ, আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ১৬ হাজার ১০৭ ভোট। উপজেলা পরিষদের দুই বারের ভাইস চেয়ারম্যান মুহাম্মদ সারোয়ার আলম তালুকদার, ঘোড়া প্রতীকে ১৩ হাজার ১৬ ভোট ও উপজেলা পরিষদের দুইবারের চেয়ারম্যান শাহ্ মোঃ বোরহান উদ্দিন, মোটর সাইকেল প্রতীকে ১১ হাজার ৬৯৫ ভোট পেয়েছেন। প্রদত্ত মোট ভোটের ১৫% (১২ হাজার ৩৯১ টি) ভোট না পাওয়ায় শাহ্ মোঃ বোরহান উদ্দিনের জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মোট ভোট পড়েছে ৮২ হাজার ৫৩৩টি; যা মোট ভোটের ৪৫.৯৫%। এতে গত দুই বারের পরাজিত লাকী আক্তার, প্রজাপতি প্রতীকে ৬১ হাজার ২৬৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা পরিষদের সদ্যসাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মোছাঃ ফরিদা ইয়াসমিন, হাঁস প্রতীকে ৮ হাজার ১৩৪ ভোট পেয়েছেন।
এছাড়া অন্য দুই প্রার্থীর মধ্যে সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মোছাঃ কহিনুর বেগম, কলস প্রতীকে পেয়েছেন ৬ হাজার ৬৯৩ ভোট ও ৪নং গৌড়দ্বার ইউপির চেয়ারম্যানের স্ত্রী আলেয়া পারভিন, ফুটবল প্রতীকে ৩ হাজার ৫৪৪ ভোট পেয়েছেন। প্রদত্ত মোট ভোটের ১৫% (১২ হাজার ৩৭৯ টি) ভোট না পাওয়ায় মোছাঃ ফরিদা ইয়াসমিন, মোছাঃ কহিনুর বেগম ও আলেয়া পারভিন তথা এই পদে বিজয়ী প্রর্থী ছাড়া সবার জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে মোট ভোট পড়েছে ৮২ হাজার ৪৯৪টি; যা মোট ভোটের ৪৫.৯৩%। এতে উপজেলা ছাত্র লীগের আহবায়ক আবু হামযা কনক চশমা প্রতীকে ৩১ হাজার ১৯৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোশাররফ হোসেন সরকার বাবু পেয়েছেন ২৭ হাজার ১৪২ ভোট।
এছাড়া অন্য তিন প্রার্থীর মধ্যে ৭নং টালকী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন আকন্দ, তালা প্রতীকে পেয়েছেন ৫ হাজার ৪৫১ ভোট; উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক মোঃ রেজাউল করিম, টিউবওয়েল প্রতীকে ৪ হাজার ৫৬১ ভোট পেয়েছেন ও উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক মোঃ মামুন হোসেন, উড়োজাহাজ প্রতীকে পেয়েছেন ১১ হাজার ২৫৭ ভোট। প্রদত্ত মোট ভোটের ১৫% (১২ হাজার ৩৭৪ টি) ভোট না পাওয়ায় বেলায়েত হোসেন আকন্দ,মোঃ রেজাউল করিম ও মোঃ মামুন হোসেন জামানত হারাচ্ছেন।
সহকারী রির্টানিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া উম্মুল বানিন জানান, প্রতিটি কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোটারগন পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন। সকাল ৮ টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ৭৯ টি ভোট কেন্দ্রের ৪৬৪ টি ভোটকক্ষে (বুথে) গোপন ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোট গ্রহন করা হয়। তিনি আরো জানান, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপজেলার একটি পৌরসভা ও ৯টি ইউনিয়নের মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৭৯ হাজার ৬০৬ জন। এতে পুরুষ ভোটার ৮৮ হাজার ৩৭৬ জন এবং নারী ভোটার ৯১ হাজার ২৩০ জন। ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এ উপজেলায় মোট ভোটারের গড়ে ৪৫.৯৬% তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।