শেরপুরের নকলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী দ্বারা পরিচালিত ক্ষুদে ডাক্তারদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ফাইলেরিয়াসিস নির্মূল, ক্রিমি নিয়ন্ত্রণ ও ক্ষুদে ডাক্তার দলের কার্যক্রম পরিদর্শন করেছেন ঢাকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক (ডিডি) ডা. এ. বি. মোঃ শামছুজ্জামান সেলিম। শনিবার (২৫ মে) নকলা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও নকলা পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্ষুদে ডাক্তারদের কার্যক্রম পরিদর্শন করা হয়।
নকলা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের কার্যক্রম পরিদর্শনের সময় বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মোঃ ওমর ফারুক, সহকারী প্রধান শিক্ষক নাজিম উদ্দিন, মেডিকেল অফিসার এন্ড ডিজিস কন্ট্রোল (এমওডিসি) ডা. ওয়ালি উল্লাহ, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ইপিআই) মো. আব্দুর রহিম, স্বাস্থ্য পরিদর্শক (এইচআই) রফিকুল ইসলাম, সেনেটারী ইন্সপেক্টর (এসআই) হাসান ফেরদৌস আলমসহ অন্যান্য সহকারী শিক্ষকগন ও ক্ষুদে ডাক্তার দলের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে নকলা পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্ষুদে ডাক্তারদের ফাইলেরিয়াসিস নির্মূল, ক্রিমি নিয়ন্ত্রণ ও কার্যক্রম পরিদর্শনের সময় নকলা পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রবসহ এমওডিসি ডা. ওয়ালি উল্লাহ, মো. আব্দুর রহিম, এইচআই রফিকুল ইসলাম, এসআই হাসান ফেরদৌস আলমসহ সহকারী শিক্ষকগন ও ক্ষুদে ডাক্তার টিমের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান শিক্ষকগন জানান, নির্ধারিত পাঠদান কর্মসূচির বাহিরেও শিক্ষার মানোন্নয়নে ক্ষুদে ডাক্তারদের বিভিন্ন কাজে লাগানো হয়। যেমন- শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সকল ছাত্র-ছাত্রীসহ অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য শ্রেণীকক্ষে আগাম ঘোষনা দেয়া, ঝরে পড়া ছেলে-মেয়েদের উপস্থিতি নিশ্চিত করে তাদেরকে অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীর সাথে কৃমি নাশক ঔষধ সেবন করানো, বিভিন্ন বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা, ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য পরিচর্যা যেমন- ভালোভাবে হাত ধোয়া, নিয়মিত নখ কাটা, হাঁচি-কাশি দেওয়ার নিয়ম কানুন ও দাঁত ব্রাশসহ বিভিন্ন বিষয়ের কৌশলসমূহ ব্যবহারিক প্রদর্শনীর মাধ্যমে উপস্থাপন করাও ক্ষুদে ডাক্তারদের কাজ বলেও তিনি জানান।
জানা গেছে, ক্ষুদে ডাক্তারদের মূল দায়িত্ব গুলোর মধ্যে ফ্লীপচার্ট থেকে নির্ধারিত শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদেরকে স্বাস্থ্য বার্তা পড়ে শোনানো, কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহে কৃমিনাশক ঔষধ সেবনে সক্রিয় অংশ গ্রহণ, স্বাস্থ্য পরীক্ষা কার্যক্রমে সক্রিয় অংশগ্রহন (ওজন, উচ্চতা মাপা ও দৃষ্টি শক্তি পরীক্ষা করা )। এছাড়া স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন দিবস উদ্যাপনে সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ, বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস, ম্যালেরিয়া দিবস, বিশ্ব জলাতংক দিবস, হাত ধোয়া দিবস ও মীনা দিবস উদ্যাপন উল্লেখ্যযোগ্য।
ক্ষুদে ডাক্তারদের জন্য নির্ধারিত কার্যক্রমের বার্ষিক পঞ্জিকা অনুযায়ী জানা গেছে, তাদের মূল কাজ গুলো হলো- জানুয়ারী মাসে পুষ্টিহীনতা ও জলাতংক বিষয়ে সচেতনতা মূলক আলোচনা সভা; ফেব্রæয়ারীতে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য পরিচর্যা ও জলাতংক; মার্চে কৃমি নিয়ন্ত্রণ ও অসংক্রামক রোগ; এপ্রিলে কৃমিনাশক ঔষধ সেবন করানো, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উদ্যাপন, ম্যালেরিয়া দিবস উদ্যাপন (শুধুমাত্র ম্যালেরিয়া অধ্যুষিত জেলাসমূহে); মে মাসে পুষ্টিহীনতা ও জলাতংক, জুনে অসংক্রামক রোগ ও ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য পরিচর্যা; জুলাই মাসে কৃমি নিয়ন্ত্রণ; আগষ্টে পুষ্টিহীনতা ও জলাতংক, সেপ্টেম্বরে কৃমি নিয়ন্ত্রণ, বিশ্ব জলাতংক দিবস উদ্যাপন ও মিনা দিবস উদ্যাপন; অক্টোবর মাসে কৃমিনাশক ঔষধ সেবন করানো, স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস উদ্যাপন; নভেম্বরে পুষ্টিহীনতা ও অসংক্রামক রোগ; ডিসেম্বর মাসে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য পরিচর্যা করা।
স্বাস্থ্য পরীক্ষায় গঠিত ক্ষুদে ডাক্তারদল তাদের জন্য নির্ধারিত শ্রেণির সব শিক্ষার্থীর ওজন, উচ্চতা ও দৃষ্টিশক্তি পরিমাপসহ আনুষঙ্গিক অন্যান্য তথ্য সংগ্রহ করে তা স্বাস্থ্য পরীক্ষার ফরমে লিপিবদ্ধ করে রাখে।