শেরপুরের নকলা উপজেলা পরিষদের নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে এ.কে.এম মাহবুবুল আলম (সোহাগ) বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। মঙ্গলবার (২১ মে) রাতে উপজেলা পরিষদের নির্বাচনী ফল ঘোষণা কেন্দ্র থেকে সহকারী রির্টানিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া উম্মুল বানিন মাইকে ফলাফল ঘোষণা করেন।
নকলা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এ.কে.এম মাহবুবুল আলম (সোহাগ), দোয়াত-কলম প্রতীকে ২০ হাজার ৬৫৪টি ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোঃ মোকশেদুল হক শিবলু, কাপ-পিরিচ প্রতীকে পেয়েছেন ১৯ হাজার ২১৩ ভোট।
চেয়ারম্যান পদে অন্যান্যদের মধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ শফিকুল ইসলাম জিন্নাহ, আনারস প্রতীকে ১৬ হাজার ১০৭ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থান; উপজেলা পরিষদের দুই বারের ভাইস চেয়ারম্যান মুহাম্মদ সারোয়ার আলম তালুকদার, ঘোড়া প্রতীকে ১৩ হাজার ১৬ ভোট পেয়ে চতুর্থ স্থান ও উপজেলা পরিষদের দুইবারের চেয়ারম্যান শাহ্ মোঃ বোরহান উদ্দিন, মোটর সাইকেল প্রতীকে ১১ হাজার ৬৯৫ ভোট পেয়ে পঞ্চম স্থানে রয়েছেন।
এদিন সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। সকাল দিকে ভোটারের উপস্থিতি একটু কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে ভোটার উপস্থিতি। দিন শেষে মোট ভোটারের শতকরা ৪৫.৯৬ ভাগ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।
এদিকে নির্বাচনকে উৎসবমুখর, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার লক্ষ্যে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনী এবং স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োজিত ছিল। এ ছাড়াও প্রতিটা ইউনিয়নে নিয়োজিত ছিলেন একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট। তবে জালভোট দেওয়ার চেষ্টা করায় এক তরুণকে ৩ দিনের জেল, একজনকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা ও এক তরুণকে কয়েক ঘন্টার জন্য আটকের ঘটনা ঘটে।
বিজয়ী চেয়ারম্যান এ.কে.এম মাহবুবুল আলম সোহাগ নকলা উপজেলাবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ পূর্বক তাঁর অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, আমি ১৯৯৬ সালে যুবলীগের থানা কমিটির সদস্য হিসেবে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে প্রবেশ করি। ২০১৫ সালে নকলা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হই। বর্তমানে আমি সভাপতির দায়িত্ব পালন করছি। আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে কোনো অনিয়ম, অবিচার বা আর্থিক কেলেঙ্কারি আমাকে স্পর্শ করতে পারেনি। আমি ২০১৮ সালে নকলা উপজেলা পরিষদের উপনির্বাচনে প্রথমবারের মতো নৌকা প্রতীকে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছিলাম। তখনকার এক বছর আমি সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পরিষদ পরিচালনা করেছি। সেই সঙ্গে আমি শেরপুর জেলার মধ্যে শ্রেষ্ঠ উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলাম। ২০১৯ সালে আমি দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে দলের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচন করে বিজয় ছিনিয়ে আনতে সমর্থ হই। এবছর বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনের প্রার্থীতা উন্মুক্ত করে দিয়েছেন, তাছাড়া জনগণের চাহিদা পূরণে তাদের চাপের মুখে আমি নির্বাচনে প্রার্থী হতে বাধ্য হয়েছি। আমি নকলাকে স্মার্ট উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলতে বড় একটি নির্বাচনী ইসতেহার দিয়েছি। এখন আমার প্রথম কাজ হলো আমার দেওয়া অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করা।
উল্লেখ্য, নকলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে ৫ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছেন। উপজেলায় ১ লাখ ৭৯ হাজার ৬০৬ জন ভোটার রয়েছেন। মোট ভোটারের ৪৫.৯৬ ভাগ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।