শেরপুরের নকলায় সরকারের সর্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্রান্ত অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (৭ মে) দুপুরের দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সম্মেলন কক্ষে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে এই অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া উম্মুল বানিন-এঁর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আম্বিয়া খাতুন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল মনসুর, জেলা পরিষদের সদস্য ছানোয়ার হোসেন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. মুহাম্মদ ইসহাক আলী, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুর রশিদ, নকলা ইউপির চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক ফারুক, বানেশ্বরদী ইউপির চেয়ারম্যান মাজহারুল আনোয়ার মহব্বত, পাঠাকাটা ইউপির চেয়ারম্যান মো. আব্দুস ছালাম, নকলা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উমর ফারুক ও নকলা অফিসার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. অনিক রহমান, মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি বিদ্যানিকেতনের প্রধান শিক্ষক ফকির মোহাম্মদ রেজাউল করিম প্রমুখ।
সরকারের এই মহতী উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে সর্বজনীন পেনশন স্কিম সম্পর্কে অবগত বক্তারা জানান, সরকার আপাতত ৪টি স্কিমের মাধ্যমে সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাস্তবায়ন কাজ শুরু করেছে। যেকোন পেশার যেকেউ চাইলে অনলাইন প্লাটফর্মে রেজিস্ট্রেশন করে যে কোনো একটি পেনশন স্কিমে যুক্ত হতে পারবেন।
পেনশন স্কিম চারটি হলো:
সমতা স্কিম যা দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারীদের জন্য মাসিক এক হাজার টাকা চাঁদার মধ্যে চাঁদা দাতা দেবেন ৫০০ টাকা এবং সরকার দেবে ৫০০ টাকা। ১০ বছর সঞ্চয়ের পর তারা মাসিক পেনশন পাবেন এক হাজার ৫৩০ টাকা করে।
সুরক্ষা স্কিম যা স্বকর্মে নিয়োজিত ব্যক্তিগন মাসিক এক হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা করে চাঁদা জমা করতে পারবেন। ১০ বছর সঞ্চয়ের পর তারা মাসিক পেনশন পাবেন এক হাজার টাকার স্কিমের জন্য এক হাজার ৫৩০ টাকা, ২ হাজার টাকার স্কিমের জন্য ৩ হাজার ৬০ টাকা, ৩ হাজার টাকার স্কিমের জন্য ৪ হাজার ৫৯১ টাকা ও ৫ হাজার টাকার স্কিমের জন্য ৭ হাজার ৬৫১ টাকা করে।
প্রগতি স্কিম যা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মচারী বা প্রতিষ্ঠানের মালিক মাসিক ন্যুনতম ২ হাজার টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা করে চাঁদা জমা করতে পারবেন। প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মচারীদের ক্ষেত্রে স্কিমের চাঁদার অর্ধেক কর্মী নিজে এবং অর্ধেক চাঁদার টাকা প্রতিষ্ঠান বা মালিক পক্ষ প্রদান করবে। এক্ষেত্রে কোনো প্রতিষ্ঠান এই স্কিমে অংশগ্রহণ না করলেও কর্মচারীগন নিজ উদ্যোগে এককভাবে এ স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। ১০ বছর সঞ্চয়ের পর তারা মাসিক পেনশন পাবেন ২ হাজার টাকার স্কিমের জন্য ৩ হাজার ৬০ টাকা, ৩ হাজার টাকার স্কিমের জন্য ৪ হাজার ৫৯১ টাকা ও ৫ হাজার টাকার স্কিমের জন্য ৭ হাজার ৬৫১ টাকা করে।
প্রবাস স্কিম যা বিদেশে কর্মরত বা অবস্থানকারী বাংলাদেশি নাগরিক মাসিক ৫ হাজার টাকা, ৭ হাজার ৫০০ টাকা ও ১০ হাজার টাকা করে চাঁদা জমা করতে পারবেন। ১০ বছর সঞ্চয়ের পর তারা মাসিক পেনশন হিসেবে পাবেন ৫ হাজার টাকার স্কিমের জন্য ৭ হাজার ৬৫১ টাকা, ৭ হাজার ৫০০ টাকার স্কিমের জন্য ১১ হাজার ৪৭৭ টাকা ও ১০ হাজার টাকার স্কিমের জন্য মাসিক পাবেন ১৫ হাজার ৩০২ টাকা করে।
এসময় গনপদ্দী ইউনিয়ন পরিষদের সচিব জাহিদ নেওয়াজ, নকলা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব এমদাদুল হক, উরফা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. জসিম উদ্দিন, গৌড়দ্বার ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. সেকান্দর আলী, বানেশ্বরদী ইউনিয়ন পরিষদের সচিব গোলাম হোসেন, টালকী ইউনিয়ন পরিষদের সচিব সুরুজ্জামান, চন্দ্রকোন ইউনিয়ন পরিষদের সচিব এ.বি.এম গোলাম রব্বানী, গনপদ্দী ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা রহুল আমিন, উরফা ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা রমজান আলী, গৌড়দ্বার ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা আব্দুল মোতালেব, পাঠাকাটা ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা ও নকলা প্রেসক্লাবের দপ্তর সম্পাদক সেলিম রেজা, টালকী ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা আসাদুজ্জামান, চন্দ্রকোনা ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা মোশারফ হোসেনসহ উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাগন, বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও নকলা প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
অবহিতকরণ সভার পরে নকলা উপজেলার জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন টার্গেট নিয়ে আলোচনা করা হয়। সবশেষে নকলা ইউনিয়ন পরিষদ জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন টার্গেট পূরণ করায় ওই ইউপির চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক ফারুক ও সচিব এমদাদুল হককে পুরস্কার প্রদান করা হয়।