রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:১৬ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
নকলায় গৃহহীন জামাল উদ্দিন ২০ বছর ধরে রাত কাটান মসজিদে শেরপুর সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা, দ্রুত বিচার দাবী নকলায় টিসিবি পণ্যের ‘স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড’ বিতরণ চলছে কীটনাশক ব্যবহারে সচেতনতার অভাবে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে কৃষক! নকলায় তারুণ্য উৎসব উপলক্ষে আলোচনা সভা, বিভিন্ন প্রতিযোগিতা ও পুরষ্কার বিতরণ পৃথিবীর একমাত্র উড়ন্ত স্তন্যপায়ী প্রাণি বিলুপ্তির পথে নকলায় এসএসসি-৯৫ ব্যাচের মিলনমেলা উপলক্ষে প্রস্তুতি সভা শেরপুরে ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট বিজনেসম্যান ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন’র কমিটি গঠন নকলায় শাক সবজি চারার হাটে বেচাকেনার ধুম নকলায় দিন দিন তুলার জনপ্রিয়তা বাড়ছে, এখন তুলা যেন সাদা সোনা

শীতের রাতে শীতার্তদের ঘরে ঘরে কম্বল পৌঁছে দিচ্ছেন নকলার ইউএনও

নকলা (শেরপুর) প্রতিনিধি:
  • প্রকাশের সময় | বুধবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ২১৩ বার পঠিত

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের গারো পাহাড়ের পাদদেশীয় জেলা শেরপুরের সব কয়টি উপজেলায় শীতের তীব্রতা যেন ঝেকে বসেছে। সন্ধ্যা নামার আগেই শুরু হয় কুয়াশা পড়া। মাগরিব নামাজের পরে রাস্তায় বেড় হলে সামান্য দূরের কিছু সহজে দেখা যায়না। এমতাবস্থায় জেলার দরিদ্র শীতার্তরা শীতে নাকাল হয়ে পড়েছেন। কর্মহীন হয়ে পড়ছেন কৃষি শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষজন।

ঠিক এইসময় শেরপুর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দরিদ্র, অসহায় শীতার্ত প্রবীণ ও প্রতিবন্ধী মানুষের মাঝে শীত নিবারনের কম্বল বিতরণ কর্মসূচি চলছে। এর অংশ হিসেবে জেলা প্রশাসক (ডিসি) আব্দুল্লাহ আল খায়রুম-এঁর পরামর্শক্রমে নকলা উপজেলার দরিদ্র, অসহায় শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ শুরু হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া উম্মুল বানিন দিনের বেলায় অফিসে কাজ করেন, আর শীতের তীব্রতা বিবেচনায় কনকনে শীত উপেক্ষা করে রাতের আধারে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে দরিদ্র শীতার্তদের হাতে কম্বল পৌঁছে দেওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০ ডিসেম্বর বুধবার রাতে উপজেলার গনপদ্দী ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রামের, চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের বাছুর আলগা আশ্রয়ণ প্রকল্পের ও গৌরদ্বাড় ইউনিয়নের পাইস্কা আশ্রয়ণ প্রকল্পের শীতার্তদের মাঝে এবং পৌরশহরের কায়দা বাজারদী গুরস্থান এতিমখানা গিয়ে এতিম শিশুদের মাঝে কম্বল বিতরণ করেন।

কম্বল বিতরণের সময় ইউএনও সাদিয়া উম্মুল বানিন-এঁর সাথে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শিহাবুল আরিফ, প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস (পিআইও) এর উপসহকারী প্রকৌশলী নূর হোসেনসহ ইউএনও অফিসের বিভিন্ন স্তরের বেশ কয়েকজন কর্মচারী, পুলিশ ও আনসার বিভাগের সদস্য, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অর্থায়নে এবং উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এসব কম্বল বিতরণ করা হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া উম্মুল বানিন বলেন, “নকলা উপজেলার কোন মানুষ যেন শীতার্ত না থাকেন এর জন্য মান্যবর জেলা প্রশাসক আব্দুল্লাহ আল খায়রুম স্যারের নির্দেশনায় ও উপজেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অর্থায়নে উপজেলার দরিদ্র, অসহায় শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর অংশ হিসেবে বুধবার সন্ধ্যা থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ঘুরে শীতার্তদের মাঝে শতাধিক কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।”

ইউএনও আরো বলেন, “আমার কর্মস্থল নকলা উপজেলার সব কয়টি এলাকার প্রতিটি জনগণই আমার স্বজনতুল্য। তারাই আমার শক্তি, তারাই আমার সাহসদাতা। তাদেরকে সেবা দিতে পারলেই আমি নিজেকে নিয়ে গর্ব করতে পারি। অতএব আমার কর্মএলাকার প্রতিটি শীতার্তদের হাতে শীত নিবারনের জন্য কম্বল বা শীতবস্ত্র তুলে দিতে পারলেই আমি নিজের পরিশ্রমকে সার্থক বলে মনে করবো।”

কনকনে শীতের রাতে ঘুরে ঘুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কম্বল বিতরণ করা দেখে তাঁর মানবতা, মহানুভবতা, পরোপকারিতা ও সহনশীলতাসহ বিভিন্ন মানবীয় গুণাবলী সরাসরি উপলব্ধী করতে পেরে নকলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি মো. মোশারফ হোসাইন ও সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন সরকার বাবুসহ প্রেস ক্লাবের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ, নকলা প্রবীণ ও প্রতিবন্ধী হিতৈষী সংস্থার সভাপতি আসাদুজ্জামান সৌরভ ও সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বিী রাজনসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকগন ইউএনও-এঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের পাশাপাশি তাদের মতো অনেকেই শীতার্তদের পাশে দাঁড়াতে অনুপ্রাণিত হচ্ছেন বলেও তারা জানান।

উপজেলার সর্বোচ্চ প্রশাসনিক ক্ষমতাধর কর্মকর্তার এমন উদারতা ও মানবিকতা দেখে অনেক শীতার্ত দরিদ্র মানুষ খুশিতে আত্মহারা হয়ে পড়েন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হাত থেকে কম্বল পেয়ে শীতার্তদের শীত যেন দূরে চলেগেছে। শীতার্ত অনেকের মুখে হাসি দেখে এমনটাই মনে করছেন সব পেশাশ্রেণীর মানুষ। কুড়েঘরে বসে থেকে ইউএনও-এঁর হাত থেকে কম্বল পেয়ে অসহায় শীতার্ত মানুুষগুলো যেন শীতের ভয়কে জয় করে ফেলেছেন। তারা কম্বল হাতে পেয়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) আব্দুল্লাহ আল খায়রুম ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া উম্মুল বানিনসহ বিতরণ কাজে অংশ গ্রহনকারী ও সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশ্যে কোন কোন শীতার্তকে আবেগময় অবস্থায় দুই হাত তুলে দোয়া করতে সরেজমিনে দেখা গেছে।

এবিষয়ে ইউএনও সাদিয়া উম্মুল বানিন আরো বলেন, “চলমান কনকনে শীতে দরিদ্র শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ করতে পেরে আমি সরকারি একজন আমলা হিসেবে সরকারের উদ্দেশ্যকে সফলতার দিকে দাবিত করতে পেরে নিজেকে সত্যিই ভাগ্যবান মনে করছি।” তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এঁর নির্দেশনা মোতাবেক দেশের কোন মানুষ ভূমিহীন ও গৃহহীন থাকবে না। অতএব দেশের কোন একটি মানুষ শীতার্ত থাকার প্রশ্নই আসেনা। যেসকল দরিদ্র শীতার্তরা শীত বস্ত্র বা কম্বল পায়নি, প্রয়োজনে তাদের মাঝে কম্বল বিতরণ কাজ অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি জানান।

নিউজটি শেয়ার করুনঃ

এই জাতীয় আরো সংবাদ
©২০২০ সর্বস্তত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত | সমকালীন বাংলা
Develop By : BDiTZone.com
themesba-lates1749691102
error: ভাই, খবর কপি না করে, নিজে লিখতে অভ্যাস করুন।