আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদীয় আসন-১৪৪, শেরপুর-২ (নকলা ও নালিতাবাড়ী) আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশি হয়েছেন জাতীয় সংসদের উপনেতা আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি সহ ৯ জন। বেগম মতিয়া চৌধুরী ছাড়াও বাকিদের মধ্যে বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী।
নকলা ও নালিতাবাড়ী দুই উপজেলা নিয়ে গঠিত শেরপুর-২ আসন থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহনের জন্য নকলা উপজেলার ৪ জন এবং নালিতাবাড়ী উপজেলার ৫ জন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
নকলা উপজেলা থেকে যারা আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশি হয়েছেন তাঁরা হলেন- জাতীয় সংসদের উপনেতা আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি, ঢাকা মেডিকেল কলেজের অবসরপ্রাপ্ত ডীন ও বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি)’র সাবেক সদস্য বিসিএস ক্যাডার প্রথা প্রতিষ্ঠার অন্যতম নেতা ডা. সোহরাব আলী, সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব মো. নজরুল ইসলাম ও ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (আইইবি)’র সদস্য তরুণ সমাজ সেবক প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম।
নালিতাবাড়ী উপজেলা থেকে যারা মনোনয়ন প্রত্যাশি হয়েছেন তাঁরা হলেন- গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদশে সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (এসডিএফ)-এর বোর্ড অব ডিরেক্টরের চেয়ারপার্সন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব মো. আবদুস সামাদ ফারুক, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট চন্দন কুমার পাল, নালিতাবাড়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোকছেদুর রহমান লেবু, সমাজ সেবক রোজী সিদ্দিকী ও বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব কৃষিবিদ প্রয়াত বদিউজ্জামান বাদশার ছেলে তরুণ সমাজ সেবক রাগিব হাসান ভাসন।
জাতীয় সংসদের উপনেতা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি-এঁর সাথে দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্তির জন্য লড়তে যাওয়া বা এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ আসনে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে অনেকের সাথে কথা হলে তারা অকেটা নিশ্চিত ভাবেই বলেন, ‘আমরা অনেকটাই নিশ্চিত যে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেহেতু অগ্নিকন্যা বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি নকলা-নালিতাবাড়ী আসনে নির্বাচনের অংশ নেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন; সেহেতু এই আসনে দলীয় মনোনয়ন পেতে তাঁর বিকল্প নেই’।
তবে মতিয়া চৌধুরীর অনুপস্থিতিতে এ আসনে কান্ডারী হওয়ার আশায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব মো. আবদুস সামাদ ফারুক একমাত্র ও নিয়মিত সভা সেমিনার করছেন। মতিয়া চৌধুরীর পরেরজন হিসেবে জনপ্রতিনিধি হতে নেতাকর্মীসহ ভোটারদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করছেন একমাত্র আবদুস সামাদ ফারুক। আর বাকিরা সবাই পরবর্তী নির্বাচনের আগাম প্রস্তুতি স্বরূপ সাধারণ জনগণ ও দলীয় নেতৃবৃন্দের সাথে পরিচিত হতে বা পরিচিতি পেতে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন বলে অনেকেই মনে করছেন। তবে বাকিদের মধ্যেও বেশ কয়েকজন আছেন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী। দলীয় কোন পদ-পদবীতে না থাকা, এলাকাতে অবস্থান না করা ও জনগণের সাথে একদমই সম্পৃক্ততা না থাকা স্বত্ত্বেও জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করা অবাক হওয়ার বিষয় বলেও অনেকে মন্তব্য করেন।
তৃণমূলের নেতৃবৃন্দের অনেকে জানান, দলীয় মনোনয়নের বিষয়টির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়নি বা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। যদি কোন কারনে সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি-কে মনোনয়ন না দেওয়া হয়, সেক্ষেত্রে কে হবেন শেরপুর-২ (নকলা ও নালিতাবাড়ী) আসনের আওয়ামী লীগের কান্ডারী? এনিয়ে নানান জল্পনা-কল্পনা ও লবিং-গ্রুপিং চলছে। তবে যেই-ই নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিবেন তৃণমূলের নেতাকর্মীসহ আওয়ামী লীগের সবস্তরের নেতৃবৃন্দরা তার হয়েই কাজ করবেন বলে অনেকে সাফ জানিয়েছেন। আপাতত মনোনয়ন বোর্ডের সিদ্ধান্তের অপেক্ষাতে আছেন সাধারণ ভোটাররা।
উল্লেখ্য, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দিন থেকে নকলা উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগসহ অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও কর্মী-সমর্থকগন পৌর শহরে নিয়মিত মিছিল ও পথসভা করছেন। তাছাড়া তৃণমূল নেতা-কর্মী ও ভোটারদের নিয়ে বিভিন্ন ইউনিয়নে শুরু করছেন কর্মী সমাবেশ। সবাই তাকিয়ে আছেন মনোনয়ন বোর্ডের দিকে, কে পাচ্ছেন নৌকা প্রতীক তথা আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন। দলীয় মনোনিত প্রার্থীর নাম ঘোষণা হওয়ার পরে প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাওয়াসহ শুরু করবেন প্রচার প্রচারনার কাজ।