শেরপুরের নকলা উপজেলার একমাত্র সরকারি হাজী জালমামুদ কলেজে প্রথমবারের মতো নতুন অধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যথাযথ কর্তৃপক্ষ প্রফেসর মো. আব্দুল বার্সেদ-কে প্রথমবারের মতো এই কলেজের পূর্ণাঙ্গ অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেন । তিনি অধ্যক্ষ পদে যোগদান করায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আলতাফ আলী তাঁর স্বপদে বহাল হলেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের (কলেজ-৪) এর জারি করা এক প্রজ্ঞাপন মারফত বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। প্রফেসর মো. আব্দুল বার্সেদ রবিবার (৫ নভেম্বর) পূর্বাহ্নে সরকারি হাজী জালমামুদ কলেজে অধ্যক্ষ (ক্যাডার) হিসেবে কাজে যোগদান করেন। তিনি এর আগে জামালপুরের সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিষয়ের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সরকারি হাজী জালমামুদ কলেজে মো. আব্দুল বার্সেদ অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করার পরে কলেজ স্টাফ ও নকলা প্রেস ক্লাবসহ বিভিন্ন মহল ফুলেল শুভেচ্ছাসহ নানান মাধ্যমে তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
জানা গেছে, মো. আব্দুল বার্সেদ ১৮তম বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) পরীক্ষায় বিসিএস মেধাক্রমে নবম স্থান অধিকারী হয়ে ১৯৯৯ সালের ২৫ জানুয়ারি সর্বপ্রথম গাইবান্ধা সরকারি কলেজে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিষয়ে প্রভাষক পদে যোগদান করেন। সেখানে ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। এরপরে ২০০৮ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত সহকারী অধ্যাপক পদে সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজে, অত:পর সহযোগী অধ্যাপক পদে পদায়ন পেয়ে নওগাঁ সরকারি কলেজে ২০১৬ সাল থেকে এক বছর কর্মরত ছিলেন। এরপরে ২০১৭ সালে বদলী হয়ে সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজে আসেন। সেখানে ২০১৭ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ৬ বছর সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন এবং ২০২৩ সালে একই কলেজে ৭ মাস অধ্যাপক পদে দায়িত্ব পালন করেন। এই সময়ে তিনি সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিষয়ের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি বর্তমানে বিসিএস ক্যাডার ৪র্থ গ্রেডের একজন কর্মকর্তা।
অধ্যক্ষ মো. আব্দুল বার্সেদ বলেন, ‘সরকারি হাজী জালমামুদ কলেজটি ঐতিহ্যবাহী একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আমি যতদিন এই কলেজের দায়িত্বে থাকবো, ততদিন প্রতিষ্ঠানটির একাডেমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করে যাব। এ কলেজের সুনাম বৃদ্ধিতে আমার সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করে যাব ইনশাআল্লাহ। এরজন্য এ কলেজে কর্মরত সকল অধ্যাপক, প্রভাষক, শিক্ষক-কর্মচারী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীসহ সকলের আন্তরিক সহযোগিতা জরুরি’। তিনি আরো বলেন, ‘যেকোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠনের সুনাম বজায়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে টিম ভিত্তিক বা ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করতে হবে; তবেই প্রতিষ্ঠনের সুনাম দিন দিন বাড়বে’। তাই শিক্ষার মানোন্নয়নের ক্ষেত্রে নকলা উপজেলাসহ দেশ ও জাতির মঙ্গলার্থে সকলের আন্তরিক সহযোগিত কামনা করেন তিনি।
তথ্য মতে, মো. আব্দুল বার্সেদ ১৯৮৭ সালে গোপালখিলা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস.এস.সি পরীক্ষায় বিজ্ঞান শাখা নিয়ে অংশ গ্রহন করে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। ১৯৮৯ সালে বিজ্ঞান শাখা নিয়ে শেরপুর সরকারি কলেজ থেকে এইচ.এস.সি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে দ্বিতীয়, ১৯৯২ সালে চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয় থেকে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিষয়ে বি.এসসি (অনার্স) পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে প্রথম শ্রেণিতে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন এবং ১৯৯৩ সালে একই বিশ^বিদ্যালয় থেকে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিষয়ে এম.এসসি (থিসিস)-এ অংশ গ্রহন করে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অর্জন করেন তিনি।
জানা গেছে, শেরপুর জেলাধীন শ্রীবরদী উপজেলার রহমতপুর গ্রামের মো. আব্দুর রহিম ও মোছা. বিলকিস বেগম দম্পতির ২ ছেলে ও ১ মেয়ের মধ্যে মো. আব্দুল বার্সেদ বড় সন্তান। আব্দুল বার্সেদ বৈবাহিক জীবনে ১ ছেলে ও ১ মেয়ে সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রী জামালপুর জেলাধীন নরুন্দির এক মহিলা কলেজে জীববিজ্ঞান বিষয়ের সিনিয়র প্রভাষক হিসেবে কর্মরত আছেন বলে অধ্যক্ষ মো. আব্দুল বার্সেদ জানান।