শেরপুরের নকলায় মাত্র ৬ মাসে মহাগ্রন্থ পবিত্র আল কোরআন এর হাফেজ হয়ে বিস্ময় সৃষ্টি করা ৭ বছরের শিশু মো. মাহদী হাসান ওয়াছকুরুনীকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া উম্মুল বানিন তাঁর নিজস্ব তহবিল থেকে উদ্দীপনা পুরষ্কার হিসেবে নগদ অর্থ উপহার দিয়েছেন।
সোমবার (৬ নভেম্বর) বিকেলের দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিজ কার্যালয়ে শিশু হাফেজ মো. মাহদী হাসান ওয়াছকুরুনীর তিলাওয়াত শুনে মুগ্ধ হয়ে তার হাতে উদ্দীপনা পুরষ্কার হিসেবে নগদ অর্থ তুলেদেন।
এসময় শিশু হাফেজ মো. মাহদী হাসান ওয়াছকুরুনীর মা সুরাইয়া বেগম, নকলা দারুল উলুম মাদরাসার মুহতামিম মুফতি আনসারুল্লাহ (তারা আলম), ওয়াছকুরুনীর ভগ্নিপতি (দুলাভাই) হাফেজ মাওলানা আব্দুল আলীমসহ অনেকে উস্থিত ছিলেন।
ওয়াছকুরুনীর মা সুরাইয়া বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে ইউএনও স্যারের হাত থেকে উপহার পেয়ে খুব খুশি হয়েছে। ইউএনও স্যার আমার ছেলেকে যে উপহার দিয়েছেন তা চিরস্মরনীয় হয়ে থাকবে। আজ ওয়াছকুরুনীর যেন আনন্দের শেষ নেই। শিশু হাফেজ মাহদী হাসান ওয়াছকুরুনীর সফলতা ও ইউএনও স্যারের উদারতায় আমরা সবাই আনন্দিত।’ এতেকরে ওয়াছকুরুনীর মতো অন্যান্য শিশুরাও আগ্রহী হবে বলে অনেকে মনে করছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া উম্মুল বানিন বলেন, ৭ বছরের কোন শিশু মাত্র ৬ মাসে মহাগ্রন্থ পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ মুখস্থ করা সত্যিই বিস্ময়কর। এটা একমাত্র আল্লাহর অশেষ রহমতের কারনেই সম্ভব। শিশু হাফেজ মো. মাহদী হাসান ওয়াছকুরুনী নকলা উপজেলার সম্পদ বলে তিনি আখ্যায়িত করেন। সবশেষে ওয়াছকুরুনীর উজ্জল ভবিষ্যৎ কামনা করেন তিনি।
মো. মাহদী হাসান ওয়াছকুরুনী উপজেলার নকলা পৌরসভাধীন উত্তর কায়দা এলাকার মৃত হাবিব মিয়া ও সুরাইয়া বেগম দম্পতির ২ ছেলে ও ২ মেয়ের মধ্যে সবার ছোট সন্তান। ওয়াছকুরুনী ২ বছর বয়সেই তার বাবাকে চিরতরে হারায়। শিশু ওয়াছকুরুনী তার মেধার কারনেই ২০২২ সালে পাঁচ পারা (‘ক’ গ্রুপ) হিফজ প্রতিযোগিতায় উপজেলায় প্রথম স্থান, জেলায় পঞ্চম স্থান (শারীরিক সমস্যার কারনে) ও বিভাগীয় পর্যায়ে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলো।
ওয়াছকুরুনীর দুলাভাই হাফেজ মাওলানা আব্দুল আলীম জানান, বাবা হারা মাহদী হাসান ওয়াছকুরুনীর মেধা ও লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ দেখে নকলা দারুল উলুম মাদরাসার মুহতামিম মুফতি আনসারুল্লাহ (তারা আলম) যাবতীয় ব্যয়ভার গ্রহণের আগ্রহী হয়ে ওয়াছকুরুনীকে নকলা দারুল উলুম মাদরাসায় ভর্তি করেন। এখন পর্যন্তও তার যাবতীয় ব্যয়ভার মুফতি আনসারুল্লাহ বহন করছেন।
শিশু হাফেজ মো. মাহদী হাসান ওয়াছকুরুনীর উজ্জল ভবিষ্যৎ কামনায় ওয়াছকুরুনীর মা সুরাইয়া বেগম, ভগ্নিপতি হাফেজ মাওলানা আব্দুল আলীম, নকলা দারুল উলুম মাদরাসার মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা নাজমুল হক মজনু, মুহতামিম মুফতি আনসারুল্লাহ, শিক্ষক হাফেজ মাওলানা শফিকুল ইসলাম সোহাগসহ তার আত্মীয়স্বজন দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।