বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর ডাকা দেশব্যাপী তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচির শেষ দিনে বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) পর্যন্ত শেরপুরের নকলায় তাদের কর্মসূচি অকার্যকর ছিলো বলে লক্ষ্যকরা গেছে। পুলিশ বিভাগসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহল জোরদার ও অধিক তৎপরতার ফলশ্রুতিতে নকলার জনজীবন স্বাভাবিক রয়েছে।
তবে জামাত-বিএনপির সন্ত্রাসী কার্যকলাপের অংশ জ্বালাও পোড়াও শ্লোগানের ভয়ে যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী বাস ও ট্রাক তথা দূরপাল্লার পরিবহন চলাচল বন্ধ রেখেছেন পরিবহণ মালিকগন। এছাড়া অভ্যন্তরীন সড়কে আন্ত:জেলার মিনিবাস ও ছোট ট্রাকসহ অন্য পরিবহণ সমূহ অন্যান্য দিনের তুলনায় কিছুটা কম চলতে দেখা গেছে। কিন্তু অন্যান্য সকল পরিবহণ আগের মতোই অবাদে চলছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার ও অফিস আদালতের কার্যক্রম পুরোদমে স্বাভাবিক রয়েছে।
অবরোধ ঘিরে যেকোন প্রকার নাশকতা ঠেকাতে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পুলিশ ও র্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের টহল ছিল চোখে পড়ার মতো। বিশেষ করে শেরপুর পুলিশ সুপার মোনালিসা বেগম পিপিএম-সেবা নিজে শেরপুর সদর উপজেলাসহ জেলার সবকয়টি উপজেলার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহল ও তাদের কর্মতৎপরতা পর্যবেক্ষণ করছেন। তিনি জেলা-উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণসহ শেরপুর জেলার সকল গুরুত্বপূর্ণ স্থান সমূহের প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখছেন তিনি। অবরোধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে অনাকাঙ্খিত পরিবেশের আগাম বার্তা উদঘাটনে মাঠে কাজ করছেন এনএসআই, ডিএসবি ও র্যাবসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন।
নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের মিয়া বলেন, পুলিশ সুপার মোনালিসা বেগম পিপিএম-সেবা স্যারের নির্দেশনা মোতাবেক আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছি, পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। নকলার পরিবেশ খুবই শান্ত, অবরোধ কর্মসূচির কোন প্রকার প্রভাব পড়েনি। এখানকার জনজীবন বরাবরের ন্যায় স্বাভাবিক আছে। এরপরেও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও স্থানে পরিবহন শ্রমিকদের সতর্ক করা হচ্ছে যেন কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। তবুও কোথাও কোন প্রকার অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটলে বা ঘটার পরিবেশ সৃষ্টি হলে তাৎক্ষণিক পুলিশকে বা থানায় জানাতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এবং হচ্ছে।
নকলা পৌরসভার মেয়র হাফিজুর রহমান লিটন জানান, বিএনপির অবরোধ কর্মসূচি অগণতান্ত্রিক ও জনবিরোধী। এই অবরোধকে জনগনের পক্ষ থেকে সাড়া দেওয়ার কোন যৌক্তিকতা নেই। পরিবহণ মালিক-শ্রমিকরাও এমন কর্মসূচিতে কখনও সাড়া দেবেন না। জনগণ বিএনপির ডাকা অযৌক্তিক, অগণতান্ত্রিক ও জনবিরোধী অবরোধ প্রত্যাখ্যান করেছেন। নকলায় অবরোধের কোন প্রভাব পড়েনি, এখানকার পরিবেশ খুবই শান্ত আছে বলে সর্বসাধারণ জানান।
এখন পর্যন্ত জেলা শহরসহ জেলার কোন উপজেলাতেই অবরোধের সমর্থনে মিছিল, মিটিং ও পিকেটিংয়ের খবর পাওয়া যায়নি; ঘটেনি কোন প্রকার অনাকাঙ্খিত ঘটনা। তবে নকলা উপজেলায় প্রতিদিন বিকেলে থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিএনপির ডাকা অবরোধ কর্মসূচির বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ মিছিল ও পথসভা করে আসছে উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগসহ অন্যান্য অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।