মহান জাতীয় সংসদের উপনেতা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, কৃষিমন্ত্রণালয় সম্পর্কৃত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, তিনবারের সফল সাবেক কৃষিমন্ত্রী ও শেরপুর-২ (নকলা-নালিতাবাড়ী) আসনের সংসদ সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী তাঁর নির্বাচনী এলাকার অংশ নকলা উপজেলাতে প্রায় দেড়কোটি টাকা ও শত বান্ডিল টিনসহ প্রায় সাড়েতিন হাজার কম্বল বিতরণ করেছেন।
বিতরণকৃত টাকা গুলোর মধ্যে, প্রাথমিক স্তরের ১১৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ২৫টি ইবতেদায়ী মাদ্রাসার দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির প্রতি ক্লাসের সেরা ২০ জন করে মোট ১১ হাজার ৫২০ জন শিক্ষার্থীর মাঝে আর্থিক প্রণোদনা হিসেবে প্রতিজনে এক হাজার টাকা করে মোট ১ কোটি ১৫ লাখ ২০ হাজার টাকা; মাধ্যমিক স্তরের ৩১টি বিদ্যালয়, ২৪টি মাদ্রাসা ও ৩৫টি ক্বওমী মাদ্রাসায় প্রতিটির জন্য ৩২ হাজার টাকা করে মোট ২৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা; ৫টি কলেজে প্রতিটির জন্য ৫০ হাজার টাকা করে মোট ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা; ১০০টি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে প্রতিটির জন্য এক বান্ডিল টিন ও ৩ হাজার টাকা করে মোট ৩ লাখ টাকা নগদ বিতরণ করেন।
এই হিসেব মতে, উপজেলার ১৯৫টি প্রতিষ্ঠানের সার্বিক মানোন্নয়নে এবং প্রাথমিক স্তরের ১৪৪টি স্কুল-মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের শিক্ষার গুণগতমান বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রণোদনা হিসেবে ১ কোটি ৪৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিতরণ করেন সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী এমপি।
এছাড়া একটি পৌরসভা ও ৯টি ইউনিয়নে প্রতিটির জন্য ২০০টি করে মোট ২ হাজার দরিদ্র জনগনের মাঝে একটি করে কম্বলসহ ৫১৪টি মসজিদের ১ হাজার ২৮ জন ইমাম ও মুয়াজ্জিন, ৪৩টি মন্দির ও গীর্জাসহ অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ৮৬ জন পালপুরোহিত ও সহকারী পুরোহিত এবং উপজেলার বিভিন্ন স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ২৮৪ জন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীর মাঝে একটি করে মোট ৩ হাজার ৩৯৮টি শীত নিবারনের কম্বল বিতরণ করেন তিনি।
সুবিধাভোগীদের যাতায়াত সুবিধার্থে পৌরসভার মুজিব শতবর্ষ মঞ্চে এবং ইউনিয়ন সমূহের মধ্যবর্তী কোন এলাকায় একটি করে ভ্যানুতে এসব বিতরণ করা হয়।
প্রতিটি বিতরণ অনুষ্ঠানে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া উম্মুল বানিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আম্বিয়া খাতুন, সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম জিন্নাহ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র হাফিজুর রহমান লিটন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সাইদুর রহমান, সহকারি কমিশনার (ভূমি) শিহাবুল আরিফ, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রিয়াদ মাহমুদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান ও আনিসুর রহমান সুজা, দপ্তর সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সুহেল, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা শহিদুল ইসলাম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক গোলাম হাফিজ সোহেল, শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক মুনসুর আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল হক হীরা, ছামিউল হক মুক্তা ও আব্দুর রশিদ সরকারসহ উপজেলা ও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ, উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক আবু হামযা কনক, নকলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু শিক্ষা-গবেষণা পরিষদ নকলা উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মোশারফ হোসাইন, প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি খন্দকার জসিম উদ্দিন মিন্টু, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নকলা প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন, প্রেস ক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলে রাব্বী রাজন ও নূর হোসেন, দপ্তর সম্পাদক সেলিম রেজাসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ এবং উপজেলা যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষকলীগ, মৎস্যজীবী লীগ, ছাত্রলীগ ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
দ্বিতীয় বারের মতো প্রণোদনা প্রাপ্ত নকলা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোশাররাত তাসনিম রায়তা বলে- আমরা ভালো ফলাফল করলে বাবা-মা ও স্যারেরা আমাদেরকে বিভিন্ন উপহার দিয়ে উৎসাহ দিতেন। কিন্তু এবছর বাবা-মা ও স্যার ছাড়াও আমাদের সবার প্রিয় মতিয়া চৌধুরী দুই বার এক হাজার করে টাকা দিয়েছেন। দুই বারের ২ হাজার টাকায় সারা বছরের খাতা-কলম কিনার টাকা হয়ে গেছে। এছাড়াও প্রতিবছর ঈদ উপহার পাওয়ায় আমাদের অভিভাবকগন বাড়তি চাপ থেকে মুক্তি পাচ্ছেন। অন্য এক শিক্ষার্থী মোশফিরাত তাসনিম নুঝাত জানায়, তারা সবাই মোবাইলের মাধ্যমে নিয়মিত উপবৃত্তি পায়। তাদের লেখাপড়ার প্রায় সব খরচ ওই উপবৃত্তির টাকা দিয়েই চলে যায়। তাই তাদের চাওয়া মতিয়া চৌধুরী যেন বার বার নকলা-নালিতাবাড়ীর এমপি হিসেবে নির্বাচিত হন। এতে তাদের ছাড়াও উপজেলার নিম্নভিত্ত ও নিম্ন-মধ্যভিত্ত অনেক পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থীদের বাবা-মায়েরা কিছুটা হলেও বাড়তি চাপমুক্ত থাকতে পারবেন বলে সে মনে করে।
পূর্ব খন্দকারপাড়া হাজীবাড়ী গোরস্থান জামে মসজিদের ইমাম ক্বারী আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, আমি কয়েক যুগ ধরে বিভিন্ন মসজিদে ইমামতি করে আসছি, কিন্তু এই সরকারের আমলে আমাদের আশাতীত মূল্যায়ন করা হয়েছে বা হচ্ছে। যা অন্য কোন সরকারের আমলে স্বপ্নেও দেখিনাই। বিশেষ করে গত করোনা মহামারির সময় বর্তমান সরকার কর্তৃক আমাদের দেওয়া আর্থিক প্রণোদনা প্রতিটি ইমাম ও মুয়াজ্জিনসহ অন্যান্য ধর্মের ধর্মীয় নেতাদের জীবনে স্মরনীয় হয়ে আছে এবং থাকবে। এছাড়া বেশ কয়েকজন ইমাম ও মুয়াজ্জিনের সাথে কথা হলে তারা জানান, এরআগে তত্বাবধায়ক সরকারসহ অন্তত দুইটি দল দেশ পরিচালনা করেছিল, কিন্তু তারা সবাই বিভিন্ন মিটিং-মিছিল তথা জনসভায় মুখে মুখে আমাদেরকে অনেক কিছু দেওয়ার কথা বললেও, ভুলেও কোন দিন উল্লেখ করার মতো আমাদেরকে কিছু দেয়নি। বর্তমান সরকার এরই মধ্যে দেশের প্রতিটি উপজেলায় সরকারি ভাবে মডেল মসজিদ নির্মাণ করে সেখানে সরকারিভাবে ইমাম ও মুয়াজ্জিন নিয়োগ দিচ্ছেন; যা যুগান্তকারী একটি ইতিহাস সৃষ্টি করার সামিল বলে তারা মনে করেন। ধর্মীয় ক্ষেত্রে এমন অগণিত ইতিহাস সৃষ্টিকারী বর্তমান সরকার আবারো দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পাবে বলে তাদের দৃঢ় বিশ্বাস।
দরিদ্র কফিল, হাসেম, করফুলি ও রুমেছাসহ বেশ কয়েকজন দরিদ্র নারী-পুরুষ তাদের মতো করে বলেন, আমলীগের (আওয়ামী লীগ) আমলে প্রতি বছর শীতের সুমু (মধ্যে) আমরা কম্বল পাই। এছাড়াও সময় সময় সরকারি বিভিন্ন টেহা পাই (ভাতা), ঈদের আগে শাড়ি-নঙ্গি ও টাওজার পাই। তবে এই বছর শীত আরম্ভর আগেই মতিয়া আপা আংগরে কম্বল দিলো। এবছর আংগরে আর শীতে ধরতে পারত না। আমলীগ (আওয়ামী লীগ) সরকার বার বার দরকার, নৌকা মার্কার সরকার বার বার দরকার, শেখ হাসিনার সরকার বার বার দরকার, মতিয়া আপার সরকার বার বার দরকার। দরিদ্র সুবিধাভোগীরা সাংবাদিকদের কাছে একেক জন একেক ভাবে তাদের মনের কথা গুলো এভাবেই ব্যক্ত করেন।