শেরপুরের নকলা উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের জন্য ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। তারখি ঘোষনার পরের দিন থেকেই নিজ নিজ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌঁড়ঝাপ শুরু হয়েছে।
যেসকল ইউনিয়নের জন্য ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে সেগুলো হলো- ১নং গণপদ্দী ডিজিটাল ইউনিয়নের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন হবে ২৯ সেপ্টেম্বর শুক্রবার, ৪নং গৌড়দ্বার ইউনিয়নে হবে ৩০ সেপ্টেম্বর শনিবার ও ২নং নকলা ইউনিয়নের সম্মেলন হবে পহেলা অক্টোবর রবিবার।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গণপদ্দী ইউনিয়নের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে গজারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে বিকেল ৩ ঘটিকার সময়, গৌড়দ্বার ইউনিয়নের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে গৌড়দ্বার বি.এল উচ্চ বিদ্যালয় ও গৌড়দ্বার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যৌথ মাঠে দুপুর ২ ঘটিকার সময় মাঠে ও নকলা ইউনিয়নের সম্মেলনটি ধনাকুশা উচ্চ বিদ্যালয় ও ধনাকুশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যৌথ মাঠে দুপুর ২ ঘটিকার সময় শুরু হবে।
সম্মেলনকে সামনে রেখে কমিটির গুরুত্বপূর্ণ দুইটি পদ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের সম্ভাব্য প্রার্থীরা জেলা ও উপজেলার সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সাথে সম্পর্ক জোড়ালো করতে নিজ নিজ অবস্থান থেকে বিভিন্ন ভাবে যোগাযোগ রক্ষার প্রক্রিয়া কয়েকগুণ বৃদ্ধি করেছেন। তাছাড়া নিজের কর্মীদের সাথে নিয়ে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের এলাকা ঘুরে ঘুরে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতৃবৃন্দের সমর্থন পেতে ও সম্মেলনে নিজের পক্ষে সাধারণ জনগনসহ আওয়ামী লীগের সমর্থকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন তারা।
তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কেউ কেউ জানান- গত কয়েকমাস আগে উপজেলার ৮নং চরঅষ্টধর ইউনিয়নের ও ৭নং টালকী ইউনিয়নের সম্মেলনে স্থানীয় তথা তৃণমূলের অধিকাংশ নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মতামতকে অপেক্ষাকৃত কম প্রাধান্য দেওয়ায় তাদের মনেরমত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়নি। ফলে ওই দুই ইউনিয়নের তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের ঐক্যে ফাটল দেখা দেয়। যার ফলশ্রুতিতে চরঅষ্টধর ইউনিয়নের নবগঠিত কমিটির অধিকাংশ নেতৃবৃন্দ ও সদস্যগন নিজ নিজ পদ-পদবী থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন। পদত্যাগী নেতৃবৃন্দ ও সদস্যগন চরঅষ্টধর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নবগঠিত কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সাথে সমন্বয় করে পুনরায় সম্মেলন কারার দাবীতে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছেন। যদিও টালকী ইউনিয়নের কমিটি নিয়ে ইউনিয়নের তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সৃষ্ট অসন্তোষ আস্তে আস্তে কমে আসছে।
তাই নিজের ইউনিয়নের সুনাম রক্ষায় সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের তৃণমূলের শান্তিপ্রিয় নেতা-কর্মী ও আওয়ামী লীগের ভোটার সমর্থকদের দাবী- যেসকল ইউনিয়নে সামনে সম্মেলন হতে যাচ্ছে বা নতুন কমিটি করা হবে তা যেন স্থানীয় নেতা-কর্মী ও আওয়ামী লীগের ভোটার সমর্থকদের অধিকাংশ সমর্থনের ভিত্তিতে করা হয়। নতুবা চরঅষ্টধর ইউনিয়ন ও টালকী ইউনিয়নের সম্মেলনের মতো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে, ফাটল ধরতে পারে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের ঐক্যের মধ্যেও; এমনটাই আশঙ্কা করছেন তারা।
গণপদ্দী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রার্থী ১নং গণপদ্দী ডিজিটাল ইউপির চেয়ারম্যান শামসুর রহমান আবুল বলেন- কেউ ভুলের উর্ধ্বে নয়। চরঅষ্টধর ও টালকী ইউনিয়নের সম্মেলন থেকে নেতৃবৃন্দ ভুল সংশোধনের শিক্ষা গ্রহন করেছেন। পরবর্তীতে নেতৃবৃন্দের এমন ভুলের পুনরাবৃত্তি হওয়ার কথা নয়। বিশেষ করে মহান জাতীয় সংসদের উপনেতা, কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবেক সফল কৃষি মন্ত্রী শেরপুর-২ (নকলা-নালিতাবাড়ি) আসনের এমপি বেগম মতিয়া চৌধুরীর মতো একজন স্বচ্ছ নেত্রীর নির্বাচনী এলাকায় একই ভুল বার বার করার সুযোগ কম। তিনি আরো বলেন- নকলার মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি উপজেলায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে কোন প্রকার অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হোক তা অন্তত আগত জাতীয় নির্বাচনের আগমুহুর্তে কারো কাম্যনয়।