বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং নিরেপেক্ষ সাংবাদিকতা হলো সমাজের আয়না স্বরূপ। যা রাষ্ট্রের চতুর্থ শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। সাংবাদিকতা একটি মহান পেশা। যে পেশা মানুষকে সচেতনতার পাশাপাশি আদর্শ ও নীতিবান করে গড়ে তোলে। অথচ পেশাদারের নামে কিছু অসাধু কার্ডধারী সাংবাদিকের কারনে আজকাল সাংবাদিকতার সেবা পণ্যের মতো পাওয়া যাচ্ছে। টাকার বিনিময়ে নামধারী সাংবাদিকদের দিয়ে প্রচার করানো যাচ্ছে সংবাদ। তাছাড়া তিলকে তাল বানানোর ভয় দেখিয়ে তথা ছোট খাটো বিষয়কে বড় আকারে প্রকাশের ভয় প্রদর্শন করে নামধারী অর্থলোভী সাংবাদিকরা হাতিয়ে নিচ্ছে টাকা। বিষয়টি যেন এমন- আপনি যদি সাংবাদিকদের খরচাপাতি না-দেন তাহলে আপনার মৃত বাবা-মাতো বটেই আপনার দাদা-দাদীকেও মরনোত্তর শস্তির আওতায় আনা হতে পারে! তাই সম্মানী লোকরা ভয়ে তাদের কষ্টার্জিত অর্থ নামধারী সাংবাদিকদের দিয়ে তাদেরকে পক্ষে নিতে বাধ্য হচ্ছেন। তাছাড়া বিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তারাও তাদের ইমেজ রক্ষায় আবোলতাবোল বা অসত্য তথ্য সম্বলিত লেখা প্রচার প্রসার বন্ধে ভয়ে বা নির্ভয়ে অর্থের বিনিময়ে নামধারী বা কার্ডধারী সাংবাদিকদের পক্ষে রাখতে বাধ্য হচ্ছেন। এতেকরে সাংবাদিকতার মতো মহৎ এই পেশাটিও আজ কলুষিত হচ্ছে। তবে এ কথা ঠিক যে, অসৎ ও কূটবুদ্ধির কাছে কখনও কখনও নীতি-নৈতিকতাও হার মানে এবং হার মানতে বাধ্য হয়। সাংবাকিতার মতো এমন মহৎ পেশা, সমাজের আয়না ও রাষ্ট্রের চতুর্থ শক্তির এই পেশাকেও সবাই ঘৃণা করবে। পরিচয় দিতে লজ্জা বা ভয় পাবেন বস্তুনিষ্ঠ লেখক সাংবাদিকগন। আজ দেশের সাংবাদিকতা চরম বিপাকে। দিন দিন গণমাধ্যম সম্পর্কে মানুষের মনে নেতিবাচক ধারণার জন্ম হচ্ছে। দুর্নীতি আজ যেন গণমাধ্যম পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করেছে। তাই সাংবাদিকতাকে যারা কলুষিত করেছে বা করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। পেশাদারি সাংবাদিকতায় যুক্ত বস্তুনিষ্ঠ সংবাদকর্মীদের স্বীকৃতি স্বরূপ সনদ প্রদান করা জরুরি। এতে করে সহজে কেউ সাংবাদিকতার পরিচয়ে নিজেদের অসাধু উদ্দেশ্য সাধন করতে পারবে না। নামধারী অর্থলোভী সাংবাদিকতা বন্ধে সরকারের পদক্ষেপ গ্রহন করা এখনই সময়। তা-না হলে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং নিরেপেক্ষ সাংবাদিকতা কোন একটা সময় বিলুপ্ত হয়ে যাবে। তাতে দেশ ও জাতির উন্নয়নে সরকারের গঠনমূলক সমালোচকের সংখ্যা কমে যাবে। যা কোন রাষ্ট্রের জন্যই শুভকর নয় বলে মনে করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে সাংবাদিকতা ও সংবাদপত্র প্রকাশের সুষ্পষ্ট নিতীমালা প্রণয়ন ও তা কঠোর হস্তে বাস্তবায়ন করার দাবী জানাচ্ছি।
-মো. মোশারফ হোসাইন
সভাপতি
নকলা প্রেস ক্লাব, শেরপুর।
ই-মেইল: musharaf9ab@gmail.com