শেরপুরে প্রথম বারেরমতো গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কর্মসংস্থান ও জনশক্তি দপ্তরের তত্বাবধানে সরকার অনুমোদিত এলায়েন্স গ্রুপের এলায়েন্স ওভারসিজ-এর অফিস উদ্বোধন করা হয়েছে। এতে করে বিদেশে কর্মী প্রেরণে তথা অভিবাসনের ক্ষেত্রে নতুন সুযোগ সৃষ্টি হলো।
বুধবার বিকেলে শেরপুরের নবীনগর এলাকার পাসপোর্ট অফিসের পাশে তাদের নতুন অফিস উদ্বাধন করা হয়। শেরপুর জেলার দায়িত্বে থাকা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস, জামালপুরের সহকারী পরিচালক ইকরামুন্নাহার ও শেরপুর পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র নজরুল ইসলাম এ অফিসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। উদ্বাধনী অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানটির এমডি জুলফিক্কার আলী কামরুল, পরিচালক জুলফিক্কারের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসাইন, পরিচালক সফিকুল ইসলাম বিপ্লবসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
এলায়েন্স ওভারসিজ শেরপুর জেলার প্রথম কোন সরকার অনুমোদিত রিক্রুটিং এজেন্ট; যারা জেলা সদর থেকে বিদেশে কর্মী পাঠানো শুরু করলো। এর আগে শেরপুরে সরকার অনুমোদিত কোন রিক্রুটিং এজেন্ট ছিলোনা। যার ফলশ্রুতিতে এ জেলার লোকজন দালালদের খপ্পরে পরে নানাভাবে প্রতারিত হতেন। জেলার অনেক মানুষ ইতিপূর্বে বিদেশে পাড়ি দিতে গিয়ে ভিটেমাটি হারিয়েছেন। তাই অনেকের ইচ্ছা থাকা সত্বেও তারা বিদেশ যেতে আগ্রহ হারিয়েছেন। তবে সরকারের কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের তত্বাবধানে সরকার অনুমোদিত এলায়েন্স গ্রুপের এলায়েন্স ওভারসিজ শেরপুরে তাদের কার্যক্রম শুরু করায় অভিবাসনে আগ্রহীরা বেজায় খুশি। এখন থেকে দালালহীন বৈধ প্রক্রিয়ায় সরাসরি বিদেশ যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হলো বলে অনেকে মনে করছেন।
এলায়েন্স গ্রুপের এমডি জুলফিক্কার আলী কামরুল বলেন, আমরা সরাসরি বিদেশ যেতে ইচ্ছুকদের বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বৈধ ভাবে পাঠাতে বদ্ধ পরিকর। আমাদের মাধ্যমে কেউ বিদেশে গেলে প্রতারিত হওয়ার কোন কারন বা সুযোগ নেই।
শেরপুর জেলার দায়িত্বে থাকা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস, জামালপুরের সহকারী পরিচালক ইকরামুন্নাহার জানান, দক্ষ মানব সম্পদ রপ্তানী তথা বিদেশে কর্মী প্রেরনের ক্ষেত্রে সারাদেশের মধ্যে শেরপুর জেলা পিছিয়ে আছে। তিনি বলেন, জেলার ৫টি উপজেলা থেকে প্রতি বছর ১০ হাজার দক্ষ-অদক্ষ কর্মী বিদেশে যাওয়ার কথা থাকলেও, বিদেশে যাচ্ছেন হাতে গুনা কয়েকজন। এর কারন হিসেবে তিনি জানান, শুধুমাত্র জনসচেতনতা ও সঠিক তথ্য জানা না থাকার ফলে অপার সুযোগ থাকা সত্বেও শেরপুর জেলার মানুষ বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ গ্রহন করতে পারছেন না।
সহকারী পরিচালক ইকরামুন্নাহার আরো বলেন- আমরা চাই শেরপুর জেলার মানুষ নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিদেশ যাক, তাদের কর্মসংস্থান হউক। আমরা টিটিসি ও যুবউন্নয়ন অফিসের সহযোগিতায় সরকার অনুমোদিত এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিদেশে লোক পাঠাতে পারি। এখানে কোন সমস্যা করা হলে আমরা এ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের খুব সহজেই ধরতে পারবো, পারবো আইনের আওতায় আনতে। কিন্তু দালালের মাধ্যমে কেউ প্রতারিত হলে তখন আমরা দালালদেরকে আইনি ভাবে ধরতে পারিনা।
তবে জেলার নকলায় শেরপুর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও সদর উপজেলায় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। জেলার বাকী তিন উপজেলাতে পর্যায়ক্রমে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হবে বলে জানান কর্মসংস্থান ও জনশক্তি দপ্তরের কর্মকর্তারা।