আজ ৩ আগষ্ট ২০২৩ খ্রি., স্বাধীনতা পদক প্রাপ্ত দেশবরেণ্য সাংবাদিক, দৈনিক সংবাদ সম্পাদক, নকলার কৃতি সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা বজলুর রহমান-এঁর ৮২তম জন্মবার্ষিকী। ১৯৪১ সালের এইদিনে তৎকালীন ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর উপজেলার চরনিয়ামত গ্রামের আব্দুর রহমান মৌলভীর ঘর আলো করে সাংবাদিক, মুক্তিযোদ্ধের সংগঠক, প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক, দৈনিক সংবাদ সম্পাদক বজলুর রহমান জন্ম গ্রহর করেন। তাঁর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে উপজেলা, জেলা ও জাতীয় পর্যায়ে কর্মরত সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন নানান কর্মসূচি পালন করছেন।
বজলুর রহমান ফুলপুর উপজেলার স্থানীয় এক প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ৫ম শ্রেণি পাশ করার পরে শেরপুরের নকলা উপজেলার গণপদ্দি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মেট্টিক পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উর্ত্তীণ হন। পরে ময়মনসিংহ আনন্দ মোহন কলেজে ও বরিশালের বজ্রমহন কলেজে পড়া লেখা করেন। তারপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতা বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।
বজলুর রহমান সাংবাদিকতায় স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করার পর ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল সভাপতি ছিলেন। রাজনৈতিক জীবনে কচি কাচাদের শিশু সংগঠন খেলা ঘর নামে একটি অরাজনৈতিক সংগঠন গড়ে তুলেন। তার অনুপ্রেরণায় বাংলাদেশের ৩০টি জেলায় খেলা ঘর নামে সংগঠন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
তিনি ৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের পর ৫৮ সালের শিক্ষা আইনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন। অত:পর পর্য়ায়ক্রমে ৬২’র সংবিধান, ৬৬’র ৬দফা, ৬৯’র গণঅভ্যুথান, ৭০’র সাধারণ নির্বাচন, ৭১’র মুক্তিযুদ্ধ এসকল আন্দোলনে ও দিবস গুলিতে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন।
তাছাড়া প্রথিতযশা সাংবাদিক বজলুর রহমান তাঁর লেখায় সংবাদ পত্রিকার মাধ্যমে দেশ বিরোধীর বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। তিনি ছিলেন সংবাদের এক সাহসী কলম সৈনিক। বজলুর রহমান মুক্তিযোদ্ধের পক্ষে লেখালেখি করে পরামর্শ মূলক লেখনীর মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। নরসিংন্দি জেলার ব্যারিস্টার আহমেদুল কবিরের সংবাদে দীর্ঘদিন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ছিলেন। ৯৬ এর পরে নিজে সম্পাদক নির্বাচিত হন। তার লেখনী ধারা দেশ মুক্তিযোদ্ধে অনেক এগিয়ে যায়।
রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদান রাখা বজলুর রহমান ২০০৮ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি রাত সাতটার সময় পুরান ঢাকার অরলেস গেইটে সাবেক কৃষি মন্ত্রী, জাতীয় সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী’র সরকারি বাসভবনে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে রাজধানী ঢাকার কার্ডিয়াক হাসপাতালে বিশেষ কেবিনে চিকিৎসা দেওয়া অবস্থায় ২৬ ফেব্রুয়ারীতে তাঁর মৃত্যু হয়। নকলা উপজেলার হাইস্কুল মাঠে জানাযা নামাজ শেষে ঢাকায় আরও একটি জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। পরে শহীদ বুদ্ধিজীবি কবরস্থানে তাঁর মরদেহ দাফন করা হয়।
তাঁর জন্ম ও মৃত্যু দিবস উপলক্ষ্যে নকলা প্রেস ক্লাবসহ সারাদেশের সাংবাদিক সংগঠনসহ বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের মাধ্যমে যথাযথ মর্যাদায় পালন করা হয়। নকলা প্রেস ক্লাব এবারও ব্যতিক্রম করেনি। এবার নকলা প্রেস ক্লাব কার্যালয়ে প্রেসক্লাব পরিবারের পক্ষ থেকে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।