শেরপুর জেলার নালিবাড়ী উপজেলায় ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে বউ বেচা-কেনার ঘটনা ঘটেছে। এনিয়ে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। বিষয়টি এখন যেন টক অব দ্যা জেলা। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার গেরামারা গ্রামে।
জানা গেছে, ৮০ বছরের বৃদ্ধ সুরুজ্জামানের স্ত্রী মারা যাওয়ার পর নিঃসঙ্গ জীবন-যাপন করছিলেন। ছেলে-মেয়েরা আলাদা হয়ে যাওয়ায় দেখাশোনা ও সংসারের কাজ করার মতো কেউ ছিলো না তার সংসারে। ফলে বয়সের ভাড়ে নুয়েপড়া সুরুজ্জামান দ্বিতীয় বিয়ে করার জন্য পাত্রী খোঁজছিলেন। এমতাবস্থায় স্ত্রী মরিয়ম খাতুনকে নিয়ে গ্রামে গ্রামে ভিক্ষাবৃত্তি করা স্থানীয় প্রতিবন্ধী আওয়ালের সাথে দ্বিতীয় বিয়ের জন্য পাত্রী সন্ধান প্রার্থী সুরুজ্জামানের আলাপ হয়। আলপ চলাকালেই নিজের স্ত্রীকে পাঁচ হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন প্রতিবন্ধী ভিক্ষুক আওয়াল। পরে কথামতো টাকা বুঝে পেয়ে নিজের স্ত্রী মরিয়মকে সাথে নিয়ে বৃদ্ধ সুরুজ্জামানের বাড়িতে পৌঁছে দেন আওয়াল।
পাঁচ হাজার টাকায় বউ কিনেছেন বৃদ্ধ সুরুজ্জামান! এ কথা শোনে উৎসুক জনতা সুরুজ্জামানের বাড়িতে ভিড় জমান। গ্রামবাসীর উপস্থিতিতে এক লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য্যকরে নব্বই হাজার টাকা আদায় দেখিয়ে আওয়ালের স্ত্রী মরিয়ম খাতুনকে বিয়ে করেন বৃদ্ধ কৃষক সুরুজ্জামান। এর আগে একই বৈঠকে আওয়াল পাঁচ হাজার টাকা বুঝে পেয়ে নিজের স্ত্রী মরিয়ম খাতুনকে খোলা তালাক দেন।
এলাকা সূত্রে জানা গেছে, এমন ঘটনার আগে ওই মরিয়ম খাতুনের আরো একটি বিয়ে হয়েছিল করিম নামে জনৈক এক যুবকের সাথে। কিছুদিন সংসার করার পর গার্মেন্টসকর্মী মরিয়ম খাতুনকে ভাগিয়ে বিয়ে করেছিলেন আওয়াল। তিন বছর সংসার করার পর আওয়াল পাঁচ হাজার টাকায় হাত বদল করে স্ত্রীকে তুলে দেন বৃদ্ধ সুরুজ্জামানের হাতে। অবলীলায় এমন স্বীকারোক্তি দেন বিক্রি হওয়া মরিয়ম খাতুন।
বৃদ্ধ সুরুজ্জামান নতুন স্ত্রী পেয়ে বেজায় খুশি। তার কথা অনুযায়ী, রান্না-বান্নাসহ গৃহস্থালীর কাজ, এমনকি শেষ বয়সের সেবা পেতে একজন জীবন সঙ্গী পেয়ে সুরুজ্জামান যেন তার জীবনের নতুন গতি ফিরে পেয়েছেন। এ বিষয়ে সুরুজ্জামান আর কোন প্রতিক্রিয়া জানাতে আগ্রহী নন।
কোন নারীর দুই বিয়ের মাঝখানে তিন মাস বিরতি ছাড়া একই বৈঠকে আগের বিয়ের তালাক এবং পরবর্তী আরেক বিয়ের বৈধতা নিয়ে ইসলামে বিধি-নিষেধ রয়েছে বলে অনেকে জানান। তাছাড়া ইসলামের বিধানে টাকার বিনিময়ে স্ত্রী বেচা-কেনারও বৈধতা দেওয়া হয়নি।
এদিকে টাকার বিনিময়ে নিজের স্ত্রী বিক্রি করার বিষয়টিকে অতিরঞ্জিত বা অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি বলে দাবী করছেন বিয়ের আয়োজকরা। তবে জনসম্মূখে ৫ হাজার টাকা লেনদেনের বিষয়ে আয়োজকরা জানান, ওই ৫ হাজার টাকা স্ত্রী বিক্রির লেনদেন হিসেবে নয়, মূলত ঘটকের হাদিয়া হিসেবে লেনদেন হয়েছে।