শেরপুরের নকলায় মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে এক মুক্তিযোদ্ধার মুখে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস শুনানো হয়েছে। শুক্রবার (১৭ মার্চ) বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এঁর ১০৩ তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস-২০২৩ উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এই ব্যতিক্রমী উদ্বুদ্ধ করণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে উপজেলার বানেশ্বরদী ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার কর্তৃপক্ষ।
শিক্ষার্থীদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে মাদ্রাসার মিলনায়তনে বানেশ্বরদী ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা মো. শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে মহান মুক্তিযুদ্ধের জীবন্ত স্বাক্ষী ও একমাত্র অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জুব্বার।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জুব্বার মহান মুক্তিযুদ্ধে স্বশস্ত্র অংশ গ্রহনের কারন, বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাওয়ার পথে বিভিন্ন বাধা ও অসহনীয় কষ্ট, ভারতের এক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ গ্রহন, প্রশিক্ষণ শেষে দেশে ফিরে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর সাথে সম্মুখযুদ্ধে অংশ গ্রহনের অভিজ্ঞতাসহ বিভিন্ন হৃদয় বিদারক তথা তিক্ত অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থীদের শুনান। এসময় তিনি নিজের অজান্তেই হয়তোবা বার বার আবেগপ্রবন হয়ে পড়েন এমনকি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। দেশের মানুষকে পরাধীনতা থেকে মুক্ত করতে স্বাধীন বাঙলার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এঁর ডাকে সাড়া দিয়ে একজন ছাত্র মুক্তিযোদ্ধা কতটা কষ্ট করেছেন তা একজন মুক্তিযোদ্ধার আবেগ প্রবণ কণ্ঠে শুনে শিক্ষার্থীরাও আবেগ প্রবণ হয়ে উঠে। এসময় পুরো মিলনায়তন নিরব-নিস্তব্ধ হয়ে যায়।
এসময় বঙ্গবন্ধু শিক্ষা গবেষণা পরিষদ নকলা উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ও নকলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি মো. মোশারফ হোসাইন, সহকারী শিক্ষক মোসাম্মৎ রোকেয়া আক্তার, শওকত আলী, নুসরাত জাহান নিপা, সহকারী মৌলভী মাওলানা মো. ফজলুল করিম ও ফুলেছা খাতুন, সহকারী শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান খান, জামাল উদ্দিন, তাহেরা সুলতানা, কব্দুল হোসেন, ইয়াছিন আহাম্মেদ, আমিন মিয়া, আরিফ হোসেন, লাবনী বেগম ও উজ্জল মিয়াসহ মাদ্রাসার অন্যান্য শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বাঙালি জাতির পিতা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এঁর ১০৩ তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা করা হয়। এতে সুপার মাওলানা মো. শহিদুল ইসলাম, সহকারী শিক্ষক মো. মোশারফ হোসাইন ও সহকারী মৌলভী মাওলানা মো. ফজলুল করিম স্বাধীনতার রূপকার, স্বাধীন বাঙলার স্থপতি, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এঁর জীবনাদর্শের উপর বিস্তারিত আলোকপাত করেন। তাছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কমনাসহ মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে আত্মত্যাগ কারী বীর সৈনিকদের রূহের শান্তি কামনা করেন তারা।
সব শেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও সকল শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনাসহ শেখ মুজিব পরিবারের সকল সদস্যগন এবং দেশ ও জতির মঙ্গল কামনায় বিশেষ দোয়া পরিচালনা করা হয়।