বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ০৩:৩০ অপরাহ্ন

এসএসসি/১৯৯৫ ব্যাচের শীতকালীন আনন্দোৎসব

এম.এম হোসাইন, এসেএসসি/১৯৯৫ ব্যাচ:
  • প্রকাশের সময় | রবিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
  • ৪৫৯ বার পঠিত

নিয়মিত কাজ করতে করতে সবারই প্রায়ই মনে হয়, প্রাকৃতিক কোন খোলামেলা পরিবেশে ঘুরে আসতে পারলে বা প্রকৃতি থেকে শিক্ষা গ্রহন করতে পারলে মন্দ হতোনা। আর তাইতো সুযোগ পেলেই প্রকৃতির সাথে মিশে যেতে মন চায়। তাই দূরে কোথাও বা প্রাকৃতিক কোন পরিবেশে হারিয়ে যেতে পারলে মন্দ হয় না।

আর তাইতো নিজ নিজ কর্মব্যস্ততার মধ্যে, যেকোন মাধ্যমে যখন কোন মনোরম পরিবেশের দৃশ্য বা অরণ্যের ছবি দেখি, তখন মনে হয় সকল বন্ধুরা মিলে যদি সেখানে ঘুরে আসা যেতো, কতইনা আনন্দ হতো! ঝরনার ছবি দেখে করুণ চোখে চেয়ে থাকি, সাগরের ছবি দেখে বুকের ভেতরটা হাহাকার করে ওঠে, অরণ্যের ছবি দেখে মনে হয় হারিয়ে যাই। একদিন হারিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন নিয়ে আমরা প্রতিদিন নিজ নিজ কাজের পিছনে ছুটে বেড়াই, অফিস করে যাই নিয়মিত।

এরই ফাঁকে সত্যিই একদিন সকল কাজ রেখে ঘুরে বেড়ানোর দিন আসে! আর সেই সুযোগটাও কিনা হয় বাংলা-ভারত সীমান্ত জেলা শেরপুরের পর্যটন এলাকা গারো পাহারের মধুটিলা ইকোপার্কে দিনব্যাপী ঘুরে বেড়ানোর।

বলছি ১০ ফেব্রুয়ারী, অফিসের অফ-ডে শুক্রবারের কথা। এই দিনটি নিজস্ব পারিবারিক কাজ ছাড়া তেমন কোনো কাজ থাকেনা। অভিজ্ঞ ও কর্মঠ বন্ধুদের সিদ্ধান্তের প্রতি অনুগত হয়ে আমরা এ শুক্রবারকেই ঠিক করি মধুটিলা ইকোপার্কের চোখ জুড়ানো বনে হারিয়ে যেতে। এ দিন যা হয় তার সবটুকুই বন্ধুরা মিলে আনন্দ আর আনন্দ। এই একটা দিন আনন্দ করা এবং পাহাড়ে উঠা নামার সামান্য চিন্তা ছাড়া তেমন কোনো কাজ ছিলোনা। এদিন শেরপুর জেলার এসএসসি-১৯৯৫ ব্যাচের বন্ধুরা শুধুই হাসি, গান, আড্ডা, গল্প আর দলবেধে বনের মাঝে ঘুরে বেড়ানোই যেন ছিলো সবার কাজ।

শীতের মাঝামাঝিতে আমরা বেড়াতে চলে গেলাম নিজ জেলা শেরপুরের পর্যটন এলাকা মধুটিলা ইকোপার্কে। আনন্দ ভ্রমন বলে কথা! হালকা বাতাস আর শীতকে পাত্তা না দিয়ে সকাল আটটায় রওনা দেই সেই আনন্দময় স্থানের উদ্দেশ্যে। যাতায়াতের সুবিধার্থে বাসে করে সকাল সাড়ে দশটায় কাঙ্খিত স্থানে পৌঁছে বুঝি আমরাই হয়তোবা এদিনের জন্য প্রথম ভ্রমন পিপাসু। আমরা চা নাস্তার পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকার বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করতে করতেই আরো অনেক ভ্রমন পিপাসু পৌঁছে গেলেন।

তবে আজ হয়ত আমরাই মধুটিলা ইকোপার্কের সেরা দল। সাহস ও ইচ্ছা শক্তির কাছে আমরা সবাই জয়ী হয়ে পাহাড়ে উঠা শুরু করি। শুরু হলো গ্রুপে গ্রুপে এদিক সেদিক ঘুরা ঘুরি, আর যার যেমন মন চাচ্ছে ক্যামেরা বন্ধী হওয়া। ১৯৯৫ সালের এসএসসি ব্যাচের পরিবার পরিজনের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠল সারা মধুটিলা ইকোপার্কে। আমরা আমরাইতো, তাই বেশ মজা হলো।

নির্দিষ্ট সময়ে ও নির্দিষ্ট স্থানে আমরা সবাই খেতে চলে গেলাম। আমরা প্রায়ই হয়তো এরকম খাবার খাই কিন্তু এতবড় অনুষ্ঠানে খোলামেলা পরিবেশে বনের গাছের নিচে বসে খাওয়ার নজির সবার জীবন ইতিহাসে কমই স্থান পেয়েছে। তাছাড়া এতবড় বন্ধু সমাজ নিয়ে একসাথে বসে এভাবে খাবার খাওয়া সচরাচর হয়না। খাওয়া শেষে একটু বিশ্রাম নেয়ার পালা। ঘাসের বিছানায় বা চেয়ারে বসে পান চিবানো, ছোট ছোট দল হয়ে গল্প, আড্ডা, ছবি তোলা, সুরেলা আর বেসুরেলা গলায় গান আর অযথাই হাসাহাসি। বিশ্রাম শেষে কিছুক্ষনের জন্য শিশুদের মনখুশি করতে কেনা কাটা শুরু হলো। এরই মধ্যে ক্রমেই দিন শেষ হতে থাকে, আমাদের মনটা বেদনায় ভরতে থাকে। কারন ফিরার সময় হয়ে আসে।

ফিরার জন্য প্রস্তুতির আগেই আমাদের এই ভ্রমনকে স্মৃতি হিসেবে ধরে রাখতে সবাই ফটো সেশনে অংশ নেন। স্মৃতিচারণ মূলক ফটো সেশনে অংশ গ্রহনকারীদের মধ্যে ছিলেন- উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), ব্যাংক কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী বা চাকুরিজীবী, ছিলো বিভিন্ন পেশাশ্রেণীর ১৯৯৫ এসএসসি’র প্রিয় বন্ধুরা।

অন্যদিকে সবাই নিজ নিজ পরিবার পরিজন ও বন্ধুদের নিয়ে ইচ্ছা অনুযায়ী ঘুরাঘুরি, ফটো সেশন, গান, আড্ডায় পুরোসময় মাতিয়ে রেখেছিলেন মধুটিলা ইকোপার্ক।

ভ্রমন পিপাসু ১৯৯৫ এসএসসি’র বন্ধুরা মিলে ১০ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার আমাদের বিশাল বহরে মাতিয়ে এলাম ওই পার্কটিতে। তাই দিনটি হয়তো অনেকের কাছেই স্মরনীয় হয়ে থাকবে বলে মনে করছেন ভ্রমন পিপাসু ওইসব প্রকৃতি প্রেমী বন্ধুরা।

নিউজটি শেয়ার করুনঃ

এই জাতীয় আরো সংবাদ
©২০২০ সর্বস্তত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত | সমকালীন বাংলা
Develop By : BDiTZone.com
themesba-lates1749691102
error: ভাই, খবর কপি না করে, নিজে লিখতে অভ্যাস করুন।