গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার জনসেবার মান বৃদ্ধিতে বিভিন্ন উদ্যোগ হাতে নিয়ে, তা বাস্তবায়ন করছে। সরকারি দপ্তরের সেবার মান বৃদ্ধির জন্য সিটিজেন চার্টার প্রদর্শনসহ বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে।
তবে জনসেবার ক্ষেত্রে সরকারের ফলপ্রসূ উদ্যোগ গুলোর মধ্যে গনশুনানির ভুমিকা অতুলনীয়। সরকারি ভাবে জনসেবার মান বৃদ্ধিতে গনশুনানি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছে বলে সুশীলজন ও সেবা গ্রহীতাসহ অনেকে মনে করছে।
শেরপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি) সাহেলা আক্তার-এঁর কার্যালয়সহ জেলার সব কয়টি (৫টি) উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরে অনুষ্ঠিত নির্ধারিত দিন (প্রতি সপ্তাহের বুধবার) গনশুনানিতে সাধারণ জনগন তাদের বিভিন্ন সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধান পেয়ে সন্তুষ্ট হয়ে ঘরে ফিরছেন। ফলে জনসেবা বিষয়ক সরকারের সফল কর্মসূচি গনশুনানির প্রতি সাধারণ জনগনের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে।
সেবাসমূহ অধিক জনমূখী করতে জনগণের সমস্যা সম্ভাবনা নিয়ে জেলা প্রশাসক ও সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে জনগণের সভা নামে জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)-এঁর সাথে জনগণের আলোচনা বা সরাসরি সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
সপ্তাহের অন্যান্য দিনের রুটিন মোতাবেক সাক্ষাৎ ছাড়াও প্রতি বুধবার দিন ব্যাপী জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগনসহ বিভিন্ন দপ্তর প্রধানগন জনগণের অভাব, অভিযোগ, আবেদন, নিবেদন শুনছেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে নিষ্পত্তিযোগ্য বিষয়সমূহ তৎক্ষণাৎ নিষ্পত্তি করে জনগণকে সেবা প্রদান করছেন।
এছাড়া টেলিফোনে বা মোবাইলে বা লিখিতভাবে বিভিন্ন পেশা শ্রেণীর লোকজনের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে সাধারণ জনগণের অভাব, অভিযোগ, আবেদন, নিবেদন ইত্যাদি নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। জনগণের সভার বা গনশুনানির সিদ্ধান্তসমূহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের কাছে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের জন্য লিখিতভাবে পাঠানো হয় বলেও জানা গেছে।
শেরপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি) সাহেলা আক্তার-এঁর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের (২০২২ সালের) এপ্রিল মাসের ৬০ কার্যদিবসে ৫৭১টি গনশুনানি হয় এবং মে মাসের ৪৫ কার্যদিবসে ৪৫৯টি গনশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। তা বৃদ্ধি পেয়ে একই বছরের সেপ্টেম্বর মাসের ৬০ কার্যদিবসে ৫৭৩টি এবং অক্টোবর মাসের ৪৫ কার্যদিবসে ৪৫৯টি গনশুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
সিনিয়র সহকারী কমিশনার (স্থানীয় সরকার শাখা, আইসিটি শাখা, জেলা ব্র্যান্ডিং সেল ও পর্যটন সেল) কাউছার আহাম্মেদ বলেন, শেরপুরে গনশুনানির সংখ্যা ধারাবাহিক ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাঁর দেওয়া তথ্য মতে, ২০২২ সালের শেষ ৪ মাসে তথা সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসের মোট ২৪৪ টি গনশুনানি কার্যদিবসে ২ হাজার ৩২৯টি গনশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এসব শুনানি শেষে নিষ্পত্তিযোগ্য বিষয়সমূহের প্রায় সবকয়টির তাৎক্ষণিক নিষ্পত্তি করে দেওয়া হয়েছে বলে কাউছার আহাম্মেদ জানান। তিনি বলেন, জেলা প্রশাসক (ডিসি) সাহেলা আক্তার মহোদয় গনশুনানির বিষয় সমূহ অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখেন। তাই দিন দিন গনশুনানির সংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে সেবা গ্রহীতার পরিমাণ, নিষ্পত্তি হচ্ছে সাধারণ জনগনের হাজারো অভাব-অভিযোগ, আবেদন-নিবেদন সংশ্লিষ্ট নানান সমস্যা।
সংশ্লিষ্ট তথ্য মতে জানা গেছে, যে কেউ তার কোনো সমস্যা, অভিযোগ বা বিষয় সমূহ প্রতি বুধবার অনুষ্ঠিত জনগণের সভায় তথা গনশুনানি অনুষ্ঠানে জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সরাসরি জানাতে পারেন। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রতি বুধবার সকাল ১০টা হতে দুপুর ১টা পর্যন্ত সাধারনত গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। গণশুনানির দিন বিভিন্ন অভিযোগ নিষ্পন্ন করা হয়ে থাকে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গোপনীয় শাখায় নির্ধারিত রেজিস্টার খাতায় নাম লিপিবদ্ধ করার মাধ্যমে গনশুনানিতে অংশ গ্রহন করা যায়। তবে সমস্যা, অভিযোগ বা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাধি ও প্রমাণপত্র সঙ্গে রাখা বাধ্যতা মূলক।