৯ ডিসেম্বর নকলা মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে শেরপুরের নকলা অঞ্চল পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত হয়। প্রতি বছর বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নকলা হানাদারমুক্ত দিবস পালিত হয়। দিবসটি উপলক্ষে এবছরও বর্ণাঢ্য র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
দিবসটির স্মরণে যৌথভাবে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও উপজেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কামান্ড, পারফেক্ট পাবলিক স্কুলসহ বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, বর্ণাঢ্য র্যালি ও আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালিত হয়।
সকালে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপে¬ক্সের সামনে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়। পরে একটি র্যালি বের হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এরপর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের তৃতীয় তলায় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ-এঁর সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ মো. বোরহান উদ্দিন এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম জিন্নাহ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র মো. হাফিজুর রহমান লিটন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল মুনসুর বক্তব্য রাখেন।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কামান্ড নকলা শাখার সভাপতি খোরশেদ আলম শ্যামলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. ফেরদৌস রহমান জুয়েল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব আনিসুর রহমান সুজা, দপ্তর সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম সুহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ছামিউল হক মুক্তা ও সদস্য মো. শামীমুজ্জামান মিঠুসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ, নকলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি মো. মোশারফ হোসাইনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ এবং উপজেলায় জীবীত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্য, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড, আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারী, স্থানীয় জনগন, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের এই দিনে (৯ ডিসেম্বের) এদেশের মুক্তিযোদ্ধারা ভারতীয় মিত্র বাহিনীর সহযোগিতায় সশস্ত্র রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে সীমান্ত জেলা শেরপুরের নকলা উপজেলাকে হানাদারমুক্ত করেছিলেন। পাকিস্তানি বাহিনীকে বিতারিত করে ১১নং সেক্টরের আওতায় থাকা নকলা অঞ্চলকে হানাদার মুক্ত করেন মুক্তিকামীরা। ওইদিন সকাল ১১ টায় নকলা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলার মানচিত্র খচিত বিজয়ের পতাকা উত্তোলণ করা হয়। এসময় মিত্রবাহিনীর মেজর বানাজিৎ শিং ত্যাগী, ল্যাফটেনেন্ট কর্নেল আবু তাহের, কোম্পানী কমান্ডার আব্দুল হক চৌধুরী ও গিয়াস উদ্দিন, ইপিআর ওয়্যার্লেস অপারেটর ফরহাদ হোসেন, নকলা, নালিতাবাড়ী ও শেরপুরের প্ল¬াটুন কমান্ডার যথাক্রমে নূরুল ইসলাম হিরু, জমির উদ্দিন ও এবি সিদ্দিক, কোয়ার্টার মাষ্টার জুলহাস উদ্দিন ফকির এবং মুক্তিযোদ্ধের গোয়েন্দা বিভাগের আবুল হাশেম ও অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাসহ হাজারো মুক্তিকামী সাধারণ জনগনের ঢল নামে।