শেরপুরের ১২ জন সিনিয়র শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি ও এমপিও ভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ লিঁয়াজো ফোরামের মুখপাত্র মো. নজরুল ইসলাম রনি। তিনি বৃহস্পতিবার প্রতিষ্ঠানটির অফিসিয়াল ফেসবুক গ্রুপে একটি পোস্টের মাধ্যমে এই নিন্দা জ্ঞাপন ও প্রতিবাদ জানান। সেই সাথে শিক্ষকদের সাথে অন্যায় কিছু হলে প্রয়োজনে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারীও দেন তিনি।
তিনি পোস্টে লিখেন, একসময় এমপিও ভুক্ত শিক্ষকদের রাজনীতি করা এমনকি এমপি বা স্থানীয় নির্বাচন করা নিষেধ ছিল। পরে মহামান্য হাইকোর্টের রায় নিয়ে শিক্ষকদের রাজনীতি শুরু হয়। শিক্ষকরা রাজনীতি না করলে রাজনীতিতে মেধার চর্চা হবে কিভাবে? এখন আবার শুরু হলো শিক্ষকদের সাংবাদিকতা করা যাবেনা। স্থানীয় সাংবাদিকদের কেউ কেউ শিক্ষা অফিসারকে প্ররোচিত করছে। সত্য প্রকাশে আপোষহীন বলেই শিক্ষক সাংবাদিকদের এভাবেই কোণঠাসা করার অপচেষ্টা করে আসছে শিক্ষা অফিস মিলে এই অপশক্তিগুলো। এটা হিংসা থেকে করা হচ্ছে।
সাংবাদিকতা কোন লাভজনক পেশা না হওয়া সত্বেও শেরপুর জেলা শিক্ষা অফিসার শিক্ষক সাংবাদিকদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন বলে লোক মুখে শুনা যাচ্ছে ও ফেইসবুকে ছড়িয়েছে। জাতি গড়ার কারীগরদের বস্তুনিষ্ঠ ও সুস্থধারার লেখনিকে থামাতে এমনটা করা হচ্ছে বলে ধারনা। এমন ঘটনা এই প্রথম দেখলাম, হতবাক হলাম! এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
সরকার এ বিষয়ে কোন প্রজ্ঞাপন জারি করেনি, তবে অতি উৎসাহী হয়ে এসব করে শিক্ষকদের মাঝে অসন্তোষ সৃষ্টির পায়তারা করছে ওই মহলটি। এতে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ হচ্ছে। হতে পারে এটা নিজের অপকর্ম ঢাকার একটি চেষ্টা। এঘটনায় সাংবাদিক ও শিক্ষক সমাজে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকে নাবুঝে শিক্ষকদেরকে হেয় করে কথা বলেছেন। অতএব বিষয়টি দ্রুত সুরাহা নাহলে দেশের শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ শিক্ষানুরাগী মহলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।
শিক্ষকরা সাংবাদিক হলে এমপিও ভুক্তিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিক্ষক হয়রানী বন্ধ হবে। শিক্ষকরা এমপি বা যেকোন স্তরের জনপ্রতিনিধি হলে মহান সংসদে শিক্ষা জাতীয়করণের দাবী তুলবেন। সমাজ ও দেশের উন্নয়নের কথা বলবে তাতে সমস্যা কি? বরং শিক্ষকরা সাংবাদিকতা করলে পেশাদারিত্ব আরো মজবুত হয় বলে আমার ধারণা। পেশাগত দ্বায়িত্ব পালন করে দেশের সকল জেলায় শিক্ষকদের অনেকেই সাংবাদিকতার চর্চা করেন এটা কি এমন মহাভারত অশুদ্ধ হলো? শিক্ষক সাংবাদিকদের কোন অসম্মান সহ্য করা হবেনা। উপরের দিকে থুতু ফেলার চেষ্টা করবেন না। এমপিও নীতিমালাতে কিছু শর্ত থাকলেও তা রাভজনক হতে হবে। শিক্ষকরা শিক্ষকতার পাশাপাশি অবসর সময়ে কৃষিকাজসহ নিজস্ব বিভিন্ন পেশায় জড়িত হবেন এটা স্বাভাবিক বিষয়। অলাভজনক পেশা লেখালেখি করার জন্য তাদেরকে শোকজ করলে, যে সকল শিক্ষক অবসর সময়ে কৃষিকাজসহ নিজস্ব বিভিন্ন পেশায় জড়িত এসব বন্ধ করতেও শোকজ করুন। কিন্তু তা সম্ভব নয়। অতএব দেশের শান্তি নষ্ট হয়, অসন্তোষ সৃষ্টি হয়, এমন কাজ করা থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করছি।
তবে এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রেজুয়ান সাংবাদিকদের বলেন, অভিযোগ দিয়ে অভিযোগকারী তার লোকজন দিয়ে প্রতিনিয়ত নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করছিলো। তাই জেলা প্রশাসকের নির্দেশে আমি কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছি। তবে কোন শিক্ষকের বিরুদ্ধেই বিধি পরিপন্থী কোন কিছু করবেন না বলে শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রেজুয়ান জানান।