সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১১:০১ পূর্বাহ্ন

নকলায় সিত্রাং’র প্রভাবে কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি

নকলা (শেরপুর) প্রতিনিধি:
  • প্রকাশের সময় | মঙ্গলবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২২
  • ১১৬ বার পঠিত

সিত্রাং এর প্রভাবে শেরপুরের নকলায় সোমবার সকাল থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত টানা বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় আমন আবাদসহ শীত কালীন শাক সবজির ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সারারাত বিদ্যুৎ নাথাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে জনসাধারনকে।

গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে উপজেলার অন্তত ৫০ থেকে ৬০ হেক্টর জমির আমন আবাদ পানিতে ডুবে গেছে। ঝড়ো হাওয়ায় পানিতে পড়ে গেছে আরো প্রায় শত হেক্টর জমির ধান গাছ। তাছাড়া শীত কালীন শাক সবজির ক্ষেত ৬০ একর এবং বীজ বপণের জন্য তৈরী করা অরো প্রায় ৮০ থেকে ৯০ একর জমিতে পানি জমে জমির জোঁ নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

পাল্লা দিয়ে বেড়েছে লোড শেডিং। সারারাত ছিলোনা বিদ্যুৎ। তাতে স্বাভাবিক জীবন যাত্রা স্থবির হয়ে পড়েছে। বেশি দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন খেটে খাওয়া মানুষ, শিক্ষার্থী ও চাকুরিজীবিরা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠাতে শিক্ষার্থীর উপস্থিতির হার আশঙ্কা জনক ভাবে কমে গেছে।

শীত কালীন শাক সবজি চাষে ও উৎপাদনে ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে বলে মনে করছেন কৃষক। তাছাড়া সরেজমিনে ঘুরে ও বিভিন্ন তথ্য মতে জানা গেছে, উপজেলায় কলাগাছসহ দুই শাতধিক ফলজ বৃক্ষ উপড়ে পড়ে গেছে। রাস্তার ধারে অনেক পুকুর পাড়ে রোপন করা কলা গাছ ও ফলজ গাছ উপড়ে পড়ে যাওয়ায় অনেক রাস্তায় ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে।

ছোট মুজারের শাক সবজি চাষি কৃষক ফেরদৌস, আরফোজ ও মানিক; বানেশ্বর্দীর হাসমত, সোহাগ, কেনু ও কাজল; কান্দাপাড়ার আজিজুল, গেন্দা মিয়া, ফরিদ, ফরহাদ ও ফারুক; ধুকুড়িয়ার হাশেম, হারুন ও নজরুল; বাছুর আলগার মোক্তার, আজিম ও মোকসেদ মাস্টার; ছালাতুল্লার মজনু, মোতালেব, ফোরকান, তমিজ উদ্দিন, ফয়সাল, আলীনাপাড়ার আনারুল, মিনারুল, ছাইদুল, মোসলেম উদ্দিন, হালিম, আব্দুর রশিদ ও মান্নান; ভূরদী কৃষিপণ্য উৎপাদক কল্যাণ সংস্থার সদস্য কৃষাণি তাহমিনা, কৃষক জব্দুল, রায়হান, ছাইয়েদুল ও মোকলেছুর রহমানসহ অনেকের সাথে কথা হলে তারা জানায়, অন্য যেকোন আবাদের তুলনায় শীতকালীন শাক সবজি চাষে বেশি লাভ পাওয়া যায়; তাই তারা শীত কালীন শাক সবজি চাষের জন্য জমি তৈরী করছিলেন। হঠাৎ টানা বৃষ্টিতে সব আশা নষ্ট হতে চলছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বৃষ্টি কয়েক দিন অব্যহত থাকলে কৃষকের অপূরণীয় ক্ষতি হতে পারে। দুই এক দিনের মধ্যে বৃষ্টি বন্ধ হয়ে গেলে তেমন ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। আর যেসব আমন ধানের ক্ষেতে পটাশ ও জৈব সার কম প্রয়োগ করা হয়, সে সব জমির ধান গাছ অপেক্ষাকৃত কম শক্ত থাকে বিধায় সামান্য বাতাস হলেই পড়ে যায়। তাই নিয়মিত কৃষি বিভাগ থেকে পরিমিত পরিমাণে জৈব ও অজৈব সার প্রয়োগে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়। তার পরেও অনেক কৃষক মনগড়া ভাবে সার প্রয়োগ করেন বলেই হয়তোবা এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হন তারা। তাছাড়া অনেক কৃষক উঁচু জাতের ধান রোপন করাতেও বাতাসে অনেক সময় ধান গাছ পড়ে যায়। তবে বর্তমানের বৃষ্টিতে যে পরিমাণ ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে, তাতে উপজেলায় আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা অর্জনে কোন প্রভাব পরবে না।

মাঠ পর্যায়ের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা বলেন, যেসব জমি শীত কালীন শাক সবজি রোপনের জন্য তৈরী করা হয়েছিলো, বৃষ্টিতে আপাতত সেসব জমির জোঁ নষ্ট হলেও, অতি তাড়াতাড়ি জোঁ এসে যাবে। আর যেসব জমিতে শাক সবজি গজিয়ে গেছে, সে সব জমিতে বৃষ্টির পানি জমাট নাবাধলে, এই বৃষ্টি ক্ষতি করবে না; বরং ওই ফসলের উপকার হবে বলে তারা আশা ব্যক্ত করেন।

 

নিউজটি শেয়ার করুনঃ

এই জাতীয় আরো সংবাদ
©২০২০ সর্বস্তত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত | সমকালীন বাংলা
Develop By : BDiTZone.com
themesba-lates1749691102
error: ভাই, খবর কপি না করে, নিজে লিখতে অভ্যাস করুন।