১৭ অক্টোবর (সোমবার) অনুষ্ঠিতব্য শেরপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে ৩নং সাধারণ আসন নকলা উপজেলা থেকে সাধারণ সদস্য পদে ৩ জন এবং ২নং সংরক্ষিত মহিলা আসনে নকলা উপজেলা থেকে এক নারীসহ মোট ৪ জন প্রার্থী নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।
নকলা উপজেলা থেকে সাধারণ সদস্য পদের প্রার্থীরা হলেন- সদ্য সাবেক হওয়া জেলা পরিষদ সদস্য মো. ছানোয়ার হোসেন (তালা), উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার-প্রকাশনা সম্পাদক মো. আব্দুর রশিদ সরকার (টিউবওয়েল) ও গত ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মাজহারুল ইসলাম চেরু (হাতি) এবং সংরক্ষিত মহিলা আসনের প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দা উম্মে কুলসুম রেনু (দোয়াত কলম)।
জেলা রির্টানিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক সাহেলা আক্তার-এঁর অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলা পরিষদ নির্বাচনে ৩নং সাধারণ আসন নকলা উপজেলায় মোট ভোটার ১৩৩ জন; এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১০২ ও নারী ভোটার ৩১ জন। আর ২নং সংরক্ষিত মহিলা আসনে নকলা উপজেলা ছাড়াও নালিতাবাড়ী উপজেলায় মোট ভোটার ১৭২ জন; এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১৩২ জন ও নারী ভোটার ৪০জন ও ঝিনাইগাতী উপজেলায় মোট ভোটার ৯৪ জন; এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৭২ জন ও নারী ভোটার ২২জন।
৩নং সাধারণ আসন নকলা উপজেলা থেকে সাধারণ সদস্য পদের প্রার্থী মো. ছানোয়ার হোসেন, মো. আব্দুর রশিদ সরকার ও মো. মাজহারুল ইসলাম প্রতিদিন উপজেলার কোন না কোন ইউনিয়নে নিজ নিজ নির্বাচনী প্রচার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
অপর দিকে ২নং সংরক্ষিত মহিলা আসন (নকলা, নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতী)-এর সংরক্ষিত সদস্য পদে নকলা উপজেলা থেকে সৈয়দা উম্মে কুলসুম রেনু (দোয়াত কলম) এবং নালিতাবাড়ী উপজেলা থেকে ক্লোডিয়া নকরেক কেয়া (হরিণ) ও সদ্য সাবেক হওয়া জেলা পরিষদ সংরক্ষিত মহিলা সদস্য নাহেলিকা দিব্রা (ফুটবল) তাদের নির্বাচনী এলাকার কোন না কোন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের সাথে বৈঠক করে নিজ নিজ নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
মো. ছানোয়ার হোসেন বলেন, আমি গত মেয়াদে জেলা পরিষদের সদস্য হিসেবে ছিলাম। জনগনের পাশে থেকে সাধ্যমতো সেবা দিতে চেষ্টা করেছি। অতএব ভোটারগন আমাকে ভোট দিয়ে পুনরায় জয়যুক্ত করবেন। আমার পুরাতন নির্বাচনী এলাকার প্রায় প্রতিটি মসজিদ, মাদরাসা ও মন্দিরসহ সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে সামান্য হলেও আমার মাধ্যমে জেলা পরিষদের অনুদান এসেছে। শুধু ভোটারগন কেন? সংশ্লিষ্ঠ কেউ বলতে পারবেন না যে, এসকল অনুদান প্রাপ্তিতে একটি পয়সা কোথাও খরচ করতে হয়েছে। এই নৈতিকতার স্থান থেকে তিনি জেলা পরিষদ নির্বাচনে পুনরায় বিজয়ী হবেন বলে দৃঢ় বিশ্বাসী।
মো. আব্দুর রশিদ সরকার নির্বাচনের বিষয়ে বলেন, ভোটারগনের চাওয়াকে প্রাধান্য দিতে গিয়েই আমি জেলা পরিষদ নির্বাচনে সদস্য পদে প্রার্থী হয়েছি। আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে পদ পদবীকে পুঁজি করে কোন দিন কোন প্রকার প্রভাব খাটানোর নজির নেই। আমি জনসেবা করার লক্ষে প্রার্থী হয়েছি। ভোটারদের ধারে ধারে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছি। যদিও এই নির্বাচনের ভোটারগন অন্যসব সাধারণ ভোটারের মতো নয়। প্রতিটি ভোটার জনগনের ভোটে নির্বাচিত হয়ে এখন তারা আমাদের ভোটার হয়েছেন। তাদেরকে ভুলভ্রান্তি নয়-ছয় বুঝিয়ে কেউ ভোট নিতে পারবেন না। তাই আমি ভোটারদের কাছে গিয়ে শুধুমাত্র তাদের দোয়া ও সমর্থন কামান করছি। তার বিশ্বাস সচেতন ভোটারগন তাদের মূল্যবান সমর্থনের মাধ্যমে জেলা পরিষদের সদস্য হিসেবে বিপুল ভোটে তাকে নির্বাচিত করবেন।
মো. মাজহারুল ইসলাম জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচনী মাঠে আছেন। এর আগে তিনি ইউপি নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে কিছু ভোটের ব্যবধানে হেরেছেন। ইউপি নির্বাচনে বিভিন্ন স্তরের ভোটার থাকায় অধিকাংশ ভোটারের সমর্থন পাওয়া কঠিন ছিলো। তবে জেলা পরিষদ নির্বাচনের সকল ভোটার সচেতন। অতএব এসকল সচেতন ভোটারগন তাদের সুচিন্তিত সমর্থনের মাধ্যমে যোগ্য প্রার্থী হিসেবে তাকে নির্বাচিত করবেন বলে তিনি আশাবাদী।
সংরক্ষিত মহিলা প্রার্থী সৈয়দা উম্মে কুলসুম রেনু বলেন, আমি এর আগে নকলা উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে জনসেবায় নিয়োজিত ছিলাম। এরপরে জনপ্রতিনিধি না থেকেও জন সেবার লক্ষ্যে তাদের পাশে থেকে দিন রাত কাজ করে যাচ্ছি। এখন নকলা, নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতী উপজেলাবাসীর পাশে থেকে তাদের করার সুযোগ এসেছে। তিনি বলেন, এ নির্বাচনে ২নং সংরক্ষিত মহিলা আসনে নকলা উপজেলার ভোটার সংখ্যা ১৩৩, নালিতাবাড়ী উপজেলার ভোটার ১৭২ জন ও ঝিনাইগাতী উপজেলায় মোট ভোটার ৯৪ জন। আমার বিশ্বাস এসকল সচেতন ভোটারগন তাদের সুচিন্তিত রায়ের মাধ্যমে আমাকে নির্বাচিত করবেন। আজীবন জনসেবার কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখতে চান তিনি।
বেশ কয়েকজন ভোটারের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কোন প্রকার লোভ লালসা বা প্ররোচনায় পড়ে তাদের মহামূল্যবান ভোট নষ্ট করবেন না। ভেবে চিন্তে তাদের সমর্থনের মাধ্যমে যোগ্য প্রার্থীকে নির্বাচিত করবেন বলে অনেকে সুষ্পষ্ট জানান।