শেরপুরের নকলায় বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পেলো স্কুল পড়ুয়া অপ্রাপ্ত বয়স্ক এক শিক্ষার্থী। ১৫ বছর বয়সী ওই শিক্ষার্থী উপজেলার বানেশ্বর্দী ইউনিয়নের আড়িয়াকান্দা গ্রামের ফিরোজ মিয়ার মেয়ে এবং নকলা মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
অপ্রাপ্ত বয়স্ক নিজের মেয়ের বিবাহের আয়োজন করার দায়ে কিশোরী শিক্ষার্থীর বাবা ফিরোজ মিয়াকে ২ হাজার টাকা অর্থদন্ড করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বুলবুল আহমেদ। তাছাড়া মেয়ে প্রাপ্ত বয়স্ক তথা ১৮ বছর হওয়ার আগে বিবাহ দিবেন না মর্মে কনের বাবা-মায়ের মুচলেকা নেওয়া হয়। গত রাতে এই ঘটনাটি ঘটে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বুলবুল আহমেদ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন যে, আড়িয়াকান্দা গ্রামের ফিরোজ মিয়ার মেয়ে ও নকলা মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর বাল্যবিবাহের আয়োজন চলছে। এ সংবাদ পেয়ে সঙ্গীয় পুলিশ সদস্য নিয়ে কনের বাড়িতে হাজির হয়ে ভ্রাম্যমান আদালত বসান ইউএনও বুলবুল আহমেদ। আদালতের উপস্থিতি টের পেয়ে বরসহ রব পক্ষের লোকজন পালিয়ে যায়। পরে এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের সহযোগিতায় বাল্যবিবাহের আয়োজন বন্ধ করে দেওয়া হয়। তাছাড়া কনের বাবা ফিরোজ মিয়াকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এলাকার কোন ছেলে-মেয়ে প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার আগে যেন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে না পারে, সে দিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে বিবাহ সংশ্লিষ্ট পরিবারের সদস্য ও উপস্থিতিদের মৌখিক অঙ্গীকার করান ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বুলবুল আহমেদ।
ইউএনও বলেন, ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসের ৩০ তারিখে নকলাকে জেলার প্রথম বাল্যবিবাহ মুক্ত উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। অতএব, এ উপজেলায় বাল্যবিবাহ কোন ভাবেই মেনে নেওয়া হবেনা। এখানে বাল্যবিবাহের ঘটনা ঘটলে কোন ক্রমেই তা বরদাস্ত করা হবে না বলে তিনি হুশিয়ারি করেন। প্রয়োজনে বাল্যবিবাহ সংশ্লিষ্ট পরিবারের অভিভাবক, বর, আয়োজক ও নিকাহ রেজিষ্ট্রার (কাজী)-দেরকে আইনের আওতায় আনা হবে বলে তিনি জানান। বাল্যবিবাহ নিরোধ ও বন্ধে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ বাল্যবিবাহ নিরোধ কমিটির সংশ্লিষ্টরা সদা তৎপর রয়েছেন বলেও জানান ইউএনও বুলবুল আহমেদ।