১৫ মার্চ বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস। এ উপলক্ষে ‘ডিজিটাল আর্থিক ব্যবস্থায় ন্যায্যতা’-এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে দিবসটি পালিত হচ্ছে।
এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশের অন্যান্য জেলা-উপজেলার মতো শেরপুরের নকলা উপজেলায় বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস-২০২২ পালন উপলক্ষে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) দুপুরের দিকে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সের সামনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোস্তাফিজুর রহমান-এঁর সভাপতিত্বে এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আম্বিয়া খাতুন, সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম জিন্নাহ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত সিনিয়র সহকারী সচিব) কাউছার আহাম্মেদ, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফরিদা ইয়াসমিন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল ওয়াদুদ প্রমুখ।
এসময় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী প্রোগ্রামার সাইমুন শাহানাজ, উপজেলা মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, চন্দ্রকোনা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাজু সাইদ সিদ্দিকী, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাগন, নকলা প্রেস ক্লাবের নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয় সাংবাদিকবৃন্দ, উপজেলার টিসিবি ও খাদ্যপণ্যের ডিলারগন, উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ১৯৬২ সালের ১৫ মার্চ সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি কংগ্রেসে ভোক্তার স্বার্থ রক্ষার বিষয়ে বক্তৃতা দেন। ভোক্তার চারটি অধিকার সম্বন্ধে তিনি আলোকপাত করেন। এগুলো হলো- নিরাপত্তার অধিকার, তথ্য প্রাপ্তির অধিকার, পছন্দের অধিকার এবং অভিযোগ প্রদানের অধিকার। ১৯৮৫ সালে জাতিসংঘ কেনেডি বর্ণিত চারটি মৌলিক অধিকারকে আরও বিস্তৃত করে অতিরিক্ত আরও আটটি মৌলিক অধিকার সংযুক্ত করে। কেনেডির সেই ভাষণের দিনকে স্মরণীয় করে রাখতে দিনটিকে বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
বাংলাদেশে ভোক্তার স্বার্থ সংরক্ষণ ও ভোক্তা-অধিকার বিরোধী কাজ প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে ২০০৯ সালে সরকার ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন করে। এ আইন বাস্তবায়নের জন্য প্রতিষ্ঠা করা হয় জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ভোক্তা স্বার্থ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
যদিও বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ বিষয়টি বেশ ভিন্ন। দেশে ই-কমার্স দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বাড়ছে ই-কমার্স সেবা ও অনলাইন কেন্দ্রিক লেনদেনের প্রবণতা। চলছে ই-কমার্স, অনলাইন রাইড শেয়ারিং, অনলাইন ফুড ডেলিভারি সিস্টেম, ই-টিকেটিং, বিভিন্ন সফটওয়্যার, ওয়েবসাইট ও অ্যাপের বিক্রয়, মোবাইল ব্যাংকিংসহ অনলাইনে বিভিন্ন সেবা।
তবে শুধু অনলাইন কেনাকাটাতেই নয়, সশরীরে কেনাকাটাতেও বিভ্রান্ত হচ্ছে ও ভুগান্তিতে পড়তে হচ্ছে ভোক্তাদের। আসল-নকল ও দামের মারপ্যাঁচে প্রতিনিয়ত ক্রেতাকে কৌশলে ঠকানো হচ্ছে। অর্থাৎ প্রতিটি ক্ষেত্রেই ভোক্তা বঞ্চনার হার আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে।
তাছাড়া থেমে নেই ভেজাল পণ্য তৈরী ও বিক্রি। নিষিদ্ধ বা ক্ষতিকর দ্রব্যের মিশ্রণ দেয়া হচ্ছে সকল প্রকার খাদ্যে। অবৈধ প্রক্রিয়ায় মানহীন পণ্য উৎপাদন ও বিপণন চলছে। ক্রেতা-ভোক্তাকে আকৃষ্ট করতে মিথ্যা প্রলোভনের বিজ্ঞাপনে ছেয়ে গেছে বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যম গুলো। ওজনে কারচুপি নতুন কিছু না, হরহামেশা বিক্রি হচ্ছে নকল ও মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্যও।
যদিও সরকারের পক্ষে জেলা-উপজেলা প্রশাসন, ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়মিত তদারকি ও ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করছেন, অপরাধের সাথে সংশ্লিষ্টদের করা হচ্ছে জেলা জরিমানা।