পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু রোধকল্পে দুই দিন ব্যাপি সাংবাদিক প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন করা হয়েছে। শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যম ও উন্নয়ন যোগাযোগ সংগঠন সমষ্টি’র আয়োজনে এ প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মো. মোমিনুর রমীদ।
শেরপুর শহরের একটি হোটেলের সভা কক্ষে অনুষ্ঠিত এ প্রশিক্ষণে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর কারণ, ভয়াবহতা ও প্রতিকারের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়। সেইসাথে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু রোধে দিবাযত্ন কেন্দ্র চালু, কমিউনিটি সাঁতার প্রশিক্ষণ ও গভীরতা ধর্মী প্রতিবেদন তৈরীর কৌশল হাতে-কলমে শেখানো হয়।
প্রশিক্ষণ পরিচালনা করেন চ্যানেলআই’র উর্ধ্বতন বার্তা সম্পাদক মীর মাশরুর জামান, গ্লেবালা হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর কমিউনিকেশনস ম্যানেজার সারওয়ার ই-আলম, সমষ্টি পরিচালক মীর সাহিদুল আলম, রেজাউল করিম, প্রোগ্রাম সমন্বয়কারি মুনাব্বির আহমেদ।
এতে অতিথি হিসেবে আলোচনায় অংশনেন শেরপুরের সিভিল সার্জন ডা. অনুপম ভট্টা চার্য, সিআইপিআরবি প্রকল্প সমন্বকারি ডা. আল-আমিন, সাংবাদিক হাকিম বাবুল প্রমুখ। এ প্রশিক্ষণে জেলায় কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের ২২ জন সাংবাদিকসহ ইন্টার্নিতে থাকা দুইজন অংশগ্রহণ করছেন।
প্রশিক্ষণে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু রোধে দিবাযত্ন কেন্দ্র চালু, কমিউনিটি সাঁতার প্রশিক্ষণ, গভীরতাধর্মী প্রতিবেদন তৈরির কৌশল শেখান। দুই দিন ব্যাপী এই প্রশিক্ষণের প্রথম দিনের প্রশিক্ষণে ইউনিসেফ ও সিআইপিআরবি’র গবেষণা জরিপের তথ্য উল্লেখ করে জানানো হয়, বাংলাদেশে প্রতিদিন প্রায় ৪০ জন অনূর্ধ্ব ১৮ বছরের শিশু পানিতে ডুবে প্রাণ হারায়। পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুদের ক্ষেত্রে এ সংখ্যা প্রতিদিন প্রায় ৩০ জন। আর এর বেশীর ভাগ ঘটনাই ঘটে থাকে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টার মধ্যে।
জরিপটিতে অধিক সংখ্যক উন্মুক্ত জলাশয়, সচেতনতার অভাব, ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে অপর্যাপ্ত তত্ত্বাবধান, শিশুদের সাঁতার না জানা এবং কমিউনিটিতে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান বিষয়ক কোনো প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা না থাকা বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে শিশুদের পানিতে ডুবে যাওয়ার প্রধান প্রধান কারণ হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। এ জন্য কমিউনিটি ভিত্তিক দিবাযত্ন কেন্দ্র চালু এবং শিশুদের সাঁতার শেখাতে পারলে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর হার কমিয়ে আনা সম্ভব। সাংবাদিকরা এক্ষত্রে গভীরতা ধর্মী প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধি ও রাষ্ট্রীয় নীতি-নির্ধারনী পর্যায়ে মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারেন।
ইতোমধ্যে পানিতে ডুবে শিশু মত্যুরোধে একনেক সভায় গত ২২ ফেব্রুয়ারি ২৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি পাইলট প্রকল্পের ডিপিপি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তিন বছর মেয়াদী এ প্রকল্পের আওতায় দেশের ১৬টি জেলার ৪৫টি উপজেলায় ৮ হাজার ২০০ দিবাযত্ন কেন্দ্র চালুকরা হবে এবং ৩ লাখ ৬০ হাজার শিশুকে সাঁতার শেখানো হবে।