মুজিব শতবর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে শেরপুর পৌর শহরের সজবরখিলা এলাকার হরিজনরা পাচ্ছেন ৬তলা বিশিষ্ট পাকা বাসভবন। এ ভবনে পূনর্বাসিত হবে শেরপুর পৌরসভার হরিজন পল্লীর বাসিন্দা অন্তত ৩৬ পরিবার।
এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেলে পৌরসভার মিলনায়তনে নাগরিক প্ল্যাটফরম জনউদ্যোগ কমিটির আয়োজনে জনউদ্যোগ কমিটির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ-এর সভাপতিত্বে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
এ মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, শেরপুর পৌরসভার মেয়র গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন। তিনি জানান প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে হরিজন পল্লীতে এলজিইডি’র তত্বাবধানে নির্মিত হবে ৬ তলা বিশিষ্ট একটি ভবনটি। এরইমধ্যে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (একনেক) সভায় প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়েছে। এলজিইডি’র পক্ষ থেকে ভবন নির্মাণের জন্য হরিজন পল্লীতে জায়গা নির্ধারণ করে পরিমাপও করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাস খতিয়ানের ওই জায়গার অনাপত্তি পত্রও প্রদান করা হয়েছে। তাছাড়া হরিজন পল্লীর পুকুরটি কিভাবে সংরক্ষণ করা যায় এবং সেখানকার শিশুদের শিক্ষার জন্য একটি পাঠকেন্দ্র স্থাপন করার বিষয়েও প্রয়োজনী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
হরিজন পল্লীর বাসিন্দারা সেখানে একটি শিক্ষাকেন্দ্র চালু করা, সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, মাদক নিয়ন্ত্রণ সহ বিভিন্ন সমস্যাদি সমাধানেরও দাবী তুলে ধরেন। মেয়র সেসব বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন।
হরিজন নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নন্দ কিশোর চৌধুরী, বিমল বাসফোর, মুক্তা হরিজন ও মিলন হরিজন প্রমুখ। হরিজন পল্লীর বাসিন্দারা সেখানে বসবাসকারি হেলা ও বাসফোর সম্প্রদায়ের মধ্যে সমন্বয় করে ভবনটিতে বরাদ্দ দেওয়ার দাবী জানানো হয়। সেইসাথে সেখানকার পুকুরটি তাদের ধর্মীয় ও জীবনযাপনের অনুসঙ্গ হিসেবে উল্লেখ করে সেটি সংরক্ষনেরও দাবী জানান তারা।
মতবিনিময় সভায় ৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নিজাম উদ্দিন, শিক্ষাবিদ শিব শংকর কারুয়া, কমিউনিস্ট পার্টির সদর সভাপতি সোলায়মান আহমেদ, লেখ জ্যোতি পোদ্দার, নারী নেত্রী আইরীন পারভীন, আঞ্জুমান আলম লিপি, শিক্ষিকা আয়শা সিদ্দিকা বক্তব্য রাখেন।
অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন বিতার্কিক এসএম ইমতিয়াজ চৌধুরী শৈবাল, সংস্কৃতি সংগঠক এসএম আবু হান্নান, শিক্ষক আশিকুর রহমান আজিজ, নৃ-জনগোষ্ঠির নেতা সুমন্ত বর্মন ও সিনিয়র সাংবাদিক হাকিম বাবুল প্রমুখ ।
বক্তারা হরিজন পল্লীর বাসিন্দাদের সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান করার জন্য পৌর কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান। একইসাথে হরিজনদেরকেও পুরণো কুসংস্কার ও ধ্যান-ধারণার পরিবর্তন করে আধুনিক শিক্ষা ও প্রযুক্তিগত জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে নিজেদের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তাঁরা।