শেরপুরের নকলায় বানেশ্বর্দী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বানেশ্বর্দী ইউপির ৮ নং ওয়ার্ডের কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ হামিদুর রহমানের বিরুদ্ধে বৈধ বেলট পেপার বাহিরে ফেলে দিয়ে ফলাফল ঘোষণা করার অভিযোগ এনে এবং পুনরায় ভোট গণনার দাবীতে মানববন্ধন করেছেন এ.কে আজাদ (ফুটবল প্রতীক) নামে এক ইউপি সাধারন সদস্য প্রার্থী ও তার কর্মী-সমর্থকগন।
থানা ও প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করার অনুমতি না পেয়ে শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলার বানেশ্বর্দী ইউপির বানেশ্বর্দী দক্ষিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে কয়েকশ নারী পুরুষ ভোটারের অংশ গ্রহনে ঘন্টাব্যাপী এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধন চলাকালে এ.কে আজাদ বলেন, গত ২৮ নভেম্বর তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের বানেশ্বর্দী ইউপির বানেশ্বর্দী দক্ষিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা বিবিরচর রহমানিয়া ফাযিল মাদরাসার প্রভাষক মোহাম্মদ হামিদুর রহমান ব্যালট পেপার গণনায় দুর্নীতি ও অনিয়ম করে রমজান আলী (টিউবওয়েল) প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষনা করেন। এর প্রতিবাদে প্রিজাইডিং কর্মকর্তার বিচারসহ ওই কেন্দ্রের ভোট পুনরায় গণনা বা প্রয়োজনে পুনরায় নির্বাচন দেওয়ার দাবীতে মানববন্ধন করা হয় বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, সম্মানিত ভোটারদের ভোটের মূল্যায়ন করতে সংশ্লিষ্ট এলাকার ভোটারদেরকে সাথে নিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা ছাড়া আর কোন উপায় ছিলোনা।
এ.কে আজাদ বলেন, বানেশ্বর্দী ইউপির ৮নং ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য (মেম্বার) পদে আমি (ফুটবল) প্রতীক, মোফাখখারুল ইসলাম (তালা) প্রতীক, রমজান আলী (টিউবওয়েল) প্রতীক ও শাহ আলী (মোরগ) প্রতীক নিয়ে লড়াই করি। ভোট গণনা শেষে প্রথমে আমাকে বিজয়ী ঘোষনা করেন, এ সংবাদ পেয়ে আমার কর্মী-সমর্থকগন বিজয় উল্লাস শুরু করেন। কিন্তু এ ঘোষণার আধা ঘন্টা পরেই আমার ফুটবল প্রতীকের ও প্রতিদ্বন্ধী রমজান আলীর টিউবওয়েল প্রতীকের ভোট সমান সমান ঘোষণা করা হয়। এর কিছুক্ষণ পরে অজ্ঞাত শক্তির প্রভাবের কারনে রমজান আলীকে (টিউবওয়েল প্রতীক) ২ (দুই) ভোট বেশি দেখিয়ে এবং আমাকে ২ (দুই) ভোট কম দেখিয়ে ফলাফল ঘোষণা করে দ্রুত কেন্দ্র ত্যাগ করেন প্রিজাইডিং কর্মকর্তাসহ কেন্দ্রে থাকা দায়িত্বপ্রাপ্তগন।
হার মেনে নিয়ে আমরা বাড়িতে চলে যাই। এরপরে রাত ১০টার দিকে আমার ছেলে আতিক হাসান কেন্দ্রের ভোট গণনার জন্য আমার দেওয়া সিমেন্টের বস্তা দিয়ে তৈরী ধান শুকানোর পিপরাল আনতে গেলে কেন্দ্রের বাহিরে জানালার পাশে একটি খাতা পড়ে থাকতে দেখেন। সে খাতাটি খোলে দেখেন ভিতরে আমার ফুটবল প্রতীকের ২ (দুইটি) বৈধ বেলট পেপার রাখা! পরে সে ওই বেলট পেপার দুটি বাড়িতে এনে আমাকে দেখায়। বিষয়টি নিয়ে তাৎক্ষণিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, থানার ওসি ও রিটানিং কর্মকর্তা উপজেলা প্রকৌশলী আরেফিন পারভেজকে জানাই। পরে তাদের কাছে লিখিত অভিযোগ নিয়ে জমা দেই। তারা সকলেই অভিযোগটি গুরুত্বের সহিত আমলে নিলেও, আমাকে কোন প্রাকর রিসিভ কপি দেওয়া হয়নি। বর্তমানে ফুটবল প্রতীকের সীল দেওয়া বৈধ ব্যালট পেপার দুইটি আমার হেফাজতে আছে। বিষয়টি বিভিন্ন পত্রিকাতে ছাপা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
তিনি আরো বলেন, এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ এ বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী, স্থানীয় সরকার সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রী ও জনপ্রশাসন সচিব মহোদয়ের বরাবরে সুষ্ঠু বিচার চেয়ে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছি। সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও কর্মকর্তাগন বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে আমলে নিয়ে ভোটারদের ভোটের যথাযথ মূল্যায়ন করতে দ্রুত সময়ের মধ্যে এ কেন্দ্রের পুনরায় ভোট গণনা বা পুনরায় নির্বাচনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে এ.কে আজাদসহ তার কর্মী-সমর্থকগন মনে করছেন।
প্রিজাইডিং কর্মকর্তা প্রভাষক মোহাম্মদ হামিদুর রহমান বলেন, সারা উপজেলার ন্যায় বানেশ্বর্দী দক্ষিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। উভয় প্রার্থী ও তাদের প্রতনিধির সামনে ভোট গণনা করে বিজয়ী প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। কেন্দ্রের পাশে ব্যালট পেপার কিভাবে আসল তা আমার জানা নেই। ফুটবল প্রতীকের প্রার্থী হেরে গিয়ে এসব কথা বলতেছে বলে প্রিজাইডিং কর্মকর্তার দাবী।