শেরপুরের নকলায় তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচিতদের মধ্যে অধিকাংশরাই হলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরেপেক্ষভাবে ভোট গ্রহন হওয়ায় নিজ নিজ ভোট দিয়ে খুশি ভোটারগন।
রিটানিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জান গেছে, উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনিত চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে বেসরকারি ভাবে ৪টিতে বিজয়ী হয়েছেন, আর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন ৫টি ইউনিয়নে। বিজয়ীরা হলেন-
১ নং গনপদ্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে বর্তমান চেয়ারম্যান মো. শামছুর রহমান (আবুল) নৌকা প্রতীক নিয়ে ৬,৮১১ ভোট পেয়ে বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন; তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আমীর হামজা মোটর সাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ৫,৫৬৯ ভোট।
২নং নকলা ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আবু বকর ছিদ্দিক ফারুক মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে ৪,৩২৩ ভোট পেয়ে বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন; তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান চেয়ারম্যান নৌকা প্রতীকে মো. আনিসুর রহমান সোজা পেয়েছেন ৪,০৫৬ ভোট।
৩নং উরফা ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহাম্মদ নুরে আলম (ভূট্টো) চশমা প্রতীকে ৬,২১২ ভোট পেয়ে বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন; তাঁর নিকটতম ও একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান চেয়ারম্যান মুহাম্মদ রেজাউল হক হীরা নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৬,০৮২ ভোট।
৪ নং গৌড়দ্বার ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান মো. শওকত হোসেন খান (মুকুল) নৌকা প্রতীক নিয়ে ২,৫২৫ ভোট পেয়ে বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন; তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মোবারক হোসেন চশমা প্রতীকে পেয়েছেন ১,৯৯৫ ভোট।
৫নং বানেশ্বর্দী ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মো. মাজহারুল আনোয়ার (মহব্বত) আনারস প্রতীক নিয়ে ৪,৮১৪ ভোট পেয়ে বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন; তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী খন্দকার জাকির হোসেন (ফারুক) চশমা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২,৬১০ ভোট। আর নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আঞ্জুমান আরা বেগম (রুমী) ২,১৩০ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন। এ ইউনিয়নে কোন কেন্দ্রেই নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সর্বোচ্চ ভোট পায়নি!
৬নং পাঠাকাটা ইউনিয়নে মো. আব্দুস ছালাম নৌকা প্রতীক নিয়ে ৬,১৯১ ভোট পেয়ে বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন; তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মোবারক হোসেন আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ২,৭৯৯ ভোট।
৭নং টালকী ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোজাফফর মহিউদ্দিন (বুলবুল) ঘোড়া প্রতীক নিয়ে ৫,৪৮৭ ভোট পেয়ে বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন; তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আনারস প্রতীক নিয়ে মো. ছায়েদুল হক পেয়েছেন ১,৭৩৪ ভোট। আর নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান বদরুজ্জামান ১,২৭৬ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন। এ ইউনিয়নেও কোন কেন্দ্রেই নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সর্বোচ্চ ভোট পায়নি!
৮নং চর অষ্টধর ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম রব্বানি নৌকা প্রতীক নিয়ে ৭,৮৫১ ভোট পেয়ে বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন; তাঁর নিকটতম ও একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাহান আনারস প্রতীকে ৪,৮২৪ ভোট পেয়েছেন।
৯ নং চন্দ্রকোনা ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. কামরুজ্জামান (গেন্দু) আনারস প্রতীক নিয়ে ৭,৮৫১ ভোট পেয়ে বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন; তাঁর নিকটতম ও একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান চেয়ারম্যান মো. সাজু সাইদ ছিদ্দিকী নৌকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৬,৪২৭ ভোট।
অন্যদিকে জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনিত চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে ২জন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বীতায় ও ৩জন নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন; আর বাকি ৭টি ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বেসরকারি ভাবে বিজয়ী হয়েছেন। নালিতাবাড়ী উপজেলার বিজয়ীরা হলেন- ১ পোড়াগাঁও ইউনিয়নে মো. জামাল উদ্দিন (চশমা), ২ নন্নী ইউনিয়নে মো. বিল্লাল হোসেন চৌধুরী নৌক প্রতীক নিয়ে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ৩ রাজনগর ইউনিয়নে আতাউর রহমান (চশমা), ৪ নয়াবিল ইউনিয়নে মিজানুর রহমান (মোটরসাইকেল), ৫ রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নে মো. আমানউল্লাহ বাদশা নৌক প্রতীক নিয়ে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ৬ কাকরকান্দি ইউনিয়নে নিয়ামুল কাউসার (মোটরসাইকেল), ৭ নালিতাবাড়ী ইউনিয়নে মো. আসাদুজ্জামান (নৌকা), ৮ রুপনারায়নকুড়া ইউনিয়নে মঞ্জুর আল মামুন (ঘোড়া), ৯ মরিচপুরান ইউনিয়নে মো. আইয়ুব আলী (চশমা), ১০ যোগানিয়া ইউনিয়নে মো. আব্দুল লতিফ (নৌকা), ১১ বাঘবেড় ইউনিয়নে আব্দুস সবুর (নৌকা) ও ১২ কলসপাড় ইউনিয়নে আব্দুল মজিদ (আনারস) প্রতীক নিয়ে বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন বলে নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে।
নির্বাচনের সকল কার্যক্রম নিরপেক্ষ, অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করায় রিটার্নিং অফিসার, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, র্যাব সদস্য (র্যাব-১৪), পুলিশ বিভাগ, পুরুষ ও মহিলা আনসার-বিডিপি সদস্য, স্টাইকিং ফোর্স ও ব্যাটেলিয়ান, প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার, পোলিং এজেন্টসহ নির্বাচক মন্ডলীদের স্বচ্ছাতার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন সুধী মহলসহ সাধারণ ভোটারগন।