পাহাড়ী অঞ্চলের সীমান্ত জনপদে বন্যহাতি হত্যার প্রতিবাদ, হাতির জন্য অভয়াশ্রম তৈরী এবং বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সুরক্ষার দাবিতে শেরপুরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
রবিবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে নাগরিক সংগঠন জনউদ্যোগ এ মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে। মানববন্ধনের সাথে একাত্মতা পোষণ করে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, শিক্ষক, সাংবাদিক, আইনজীবী, রাজনীতিক, পরিবেশ কর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
জনউদ্যোগ আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদের সঞ্চালনায় এসময় জেলা জাসদ সভাপতি মনিরুল ইসলাম লিটন, জেলা মহিলা পরিষদ নেত্রী আইরীন পারভীন, জেলা বারের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম আধার, সাংবাদিক নেতা মানিক দত্ত, জেলা উদীচী সভাপতি তপন সারওয়ার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এছাড়া প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মলয় মোহন বল, সদর উপজেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি সোলায়মান আহমেদ, আদিবাসী নেতা সুমন্ত বর্মন, নারী নেত্রী আঞ্জুমান আলম লিপি, বিতার্কিক ইমতিয়াজ চৌধুরী, খন্দকার শাহরিয়ার সৌরভ, শিশু সংগঠক মুশফিকুর রহমান রিদম প্রমুখ একাত্মতা প্রকাশ করে বক্তব্য দেন।
এসময় বক্তারা শেরপুরের গারো পাহাড়ে ১০ দিনের ব্যবধানে দুইটি হাতি হত্যার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং বনে হাতিদের অভয়ারণ্য গড়ে তুলে হাতি-মানুষের দ্বন্দ্ব নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান। পরে জনউদ্যোগের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত ৪ দফা দাবী সম্বলিত একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মোক্তাদিরুল ইসলাম স্মারকলিপি গ্রহণ করেন। উল্লেখ্য, শেরপুরের পাহাড়ি জনপদের শ্রীবরদীর মালাকোচা ও নালিতাবাড়ীর পানিহাতা এলাকায় ১০ দিনের ব্যবধানে ২টি বন্যহাতির মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। বনবিভাগ এবং জেলা বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কার্যালয়ের তথ্যমতে, ১৯৯৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত শেরপুরের পাহাড়ি জনপদে ৩১টি বন্যহাতির মরদেহ উদ্ধার হয়েছে।
এদিকে, রবিবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় শেরপুরের সীমান্ত জনপদে বন্যহাতি হত্যা এবং হাতি-মানুষের দ্বন্দ্ব নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সীমান্ত অঞ্চলে হাতি সুরক্ষায় বিভিন্ন বক্তার আলোচনায় নানা ধরনের প্রস্তাব ওঠে আসে। সভার সভাপতি জেলা প্রশাসক মো. মোমিনুর রশীদ এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আশ^াস প্রদান করেন।