“ক্রেডিট ইউনিয়নের উজ্জল ভবিষ্যত বিনির্মাণে আর্থিক সমৃদ্ধি নিশ্চিতকরণ”-এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও ৭৩তম আন্তর্জাতিক ক্রেডিট ইউনিয়ন দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে।
এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) শেরপুর জেলার নকলায় ‘নকলা উপজেলা শিক্ষক কর্মচারী কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লীগ অব বাংলাদেশ’ (কালব)’র আয়োজনে এবং দি কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লীগ অব বাংলাদেশ লিমিটেড (কালব) এর সহযোগীতায় নকলা কালব অফিসে সংক্ষিপ্ত এক আলোচনা সভাসহ কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মোতাবেক বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়।
‘নকলা উপজেলা শিক্ষক কর্মচারী কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লীগ অব বাংলাদেশ’ (কালব)’র সভাপতি নজরুল ইসলাম-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন কর্মসূচিতে সহ-সভাপতি শাহজাহান আলাম, সাধারন সম্পাদক আজাহারুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ সেলিম মিয়া, সদস্য সোহেলুর রহমান ও শাখাওয়াত হোসেন, উপজলা প্রোগ্রাম অফিসার কুলসুমসহ উপজেলা কালব অফিসে কর্মরত বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষিকা, নকলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি মো. মোশারফ হোসাইনসহ অন্যান্য সাংবাদিকগন উপস্থিত ছিলেন।
তথ্য অনুযায়ী জানা গেছে, বাংলাদেশে কালব ভূক্ত এক হাজার ১৩৮টি ক্রেডিট ইউনিয়নের ৭ লক্ষ ৫০ হাজার ব্যক্তি সদস্যসহ বিশ্বের ১১৮টি দেশে ৮৬ হাজার ৮৫টি ক্রেডিট ইউনিয়নের ২৯ কোটি ১৪ লক্ষ ৩৩ হাজার সাধারণ সদস্যগণ দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করেন।
বিশ্বব্যাপী করোনাকালে ক্রেডিট ইউনিয়ন গুলো তাদের সদস্যদের একটি উচ্চমানের পরিসেবা প্রদান অব্যাহত রাখায় এবং ক্রেডিট ইউনিয়নের সদস্যদের প্রতি উদারতা প্রদর্শন করায় অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে আলাদা একটি উচ্চমাত্রার মহিমা প্রকাশ পেয়েছে। ক্রেডিট ইউনিয়ন ব্যতিক্রমধর্মী আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে করোনাকালে সদস্যদের জন্য এসব উদারতা, সহমর্মিতা, সহনশীলতা ও সহযোগিতার হাত সম্প্রসারিত করায় ক্রেডিট ইউনিয়ন ‘বিশ্ব সম্প্রদায়ের জন্য অনুপ্রেরণামূলক প্রত্যাশা’ জোরালো ভাবে প্রকাশ পেয়েছে।
১৯৪৮ সাল থেকে আমেরিকায় জাতীয়ভাবে এবং ১৯৬৪ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর অক্টোবর মাসের তৃতীয় বৃহস্পতিবার দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। ১৯৫৫ সালে ফাদার চার্লস জে, ইয়াং সিএসসি ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে মাত্র ৪৬ জন সদস্য নিয়ে দ্য খ্রিস্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন, ঢাকার প্রতিষ্ঠা করে এ দেশে ক্রেডিট ইউনিয়নের গোড়াপত্তন করেন।
ক্রেডিট ইউনিয়ন গুলো দীর্ঘদিন থেকেই এর আর্থিক ভিত সুদৃঢ়, সুরক্ষিত ও সমৃদ্ধকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। সাধারণ সদস্যরা তাদের আমানতের নিরাপত্তা বিধান ও ভবিষ্যতে এর নিশ্চিত ভাবে সুরক্ষার বিষয়ে ক্রেডিট ইউনিয়নের ওপর যথেষ্ট আস্থা রয়েছে। বৈশ্বিক অতিমারি কারণে বিশ্বের অনেক বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান, মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানি, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ ব্যক্তি মালিকানাধীন অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। যার ফলে লক্ষাধিক মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে।
তবে প্রত্যাশার বিষয় হলো বিশ্বের কোথাও কোনো ক্রেডিট ইউনিয়ন করোনা অতিমারির কারণে বন্ধ হয়ে যায়নি এবং কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মহীন হয়ে পড়েনি। বরং বিশ্বব্যাপী সম্প্রদায়ের সার্বিক অবস্থা বিশেষ করে তাদের অনুপ্রেরণার কথা বিবেচনায় নিয়ে ডিজিটাল পদ্ধতি অবলম্বনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিশ্বে ক্রেডিট ইউনিয়ন গুলোর কার্যক্রম সীমিত পরিসরে পরিচালিত হয়েছে এবং করোনা অতিমারিকালে সদস্যদেরকে সচেতনতা বৃদ্ধিকরণে ও মানসিকভাবে শক্ত থাকতে সর্বদা অনুপ্রাণিত করেছে।
১৯৮৬ সালের ৩ জুন ‘দ্য কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিগ অব বাংলাদেশ (কালব) সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধন লাভ করে।