শেরপুরের নকলা উপজেলায় অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে নাপেরে মৃত্যুর প্রহর গুনছেন উপজেলার পাঠাকাটা ইউনিয়নের চকপাঠাকাটা গ্রামের অসহায় বাক্কার মিয়া।
সরেজমিনে দেখা যায়, চিকিৎসার অভাবে তার একটি পায়ে পচন ধরেছে। এখনই তার পায়ের সঠিক চিকিৎসা না হলে, তাকে হয়তোবা আর বাঁচানো যাবে না বলে অনেকে জানান। বাক্কার কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আমি বাঁচতে চাই। আপনারা আল্লাহর ওয়াস্তে সামর্থ অনুযায়ী সহায়তা করে আমাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসুন। তিনি বলেন, আপনারা এগিয়ে আসলে আল্লাহর রহমতে আমি বেঁচে থাকব।
পিতা-মাতা, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন কেউ বাক্কারের পাশে নেই, নেই বসবাসের কোন ভিটে মাটি। তার একমাত্র ১৩ বছরের কর্মহীন একটি ছেলে থাকলেও প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় দিনাতিপাত করতে হচ্ছে এ অসহায় বাক্কারের।
স্থানীয় লালু মিয়া নামে এক মুদি দোকানী বলেন, বাক্কার মিয়া খুব অসহায় মানুষ। তার কেউ নেই, নেই টাকা-পয়সা। তাই বাড়িতেই তাকে কষ্ট করতে হচ্ছে। এখন তাকে চিকিৎসা করানো দরকার। তানাহলে সে বিনা চিকিৎসায় মারা যাবে বলে তিনি ধারনা করছেন।
অজ্ঞাত অন্য এক পড়শি বলেন, আমরা আশে পাশের কয়েকজন মিইল্লা অন্যের বাড়ির পিছনে একটা টিনের চেপ্টা চালা ঘর তুইল্লা থাকবার দিছি। অহন তার চিকিৎসার দরকার।
নকলা অদম্য মেধাবী সহায়তা সংস্থার সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন জানান, তাদের সংস্থার পক্ষ থেকে বাক্কারকে একটি হুইল চেয়ার দেওয়া হবে। অসহায় বাক্কারের চিকিৎসার খরচ বহনের জন্য সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান তিনি।
পাঠাকাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফয়েজ মিল্লাত বলেন, বাক্কারের বিষয়ে আমরা সকলেই খোঁজ খবর রাখতেছি। কিন্তু তার যে সমস্যা এর জন্য উন্নত চিকিৎসা জরুরি।
নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ গোলাম মোস্তাফা জানান, বাক্কারের শরীর থেকে চামড়া প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে হয়তোবা পচন ঠেকানো সম্ভব। তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বা রাজধানী ঢাকার কোন ভালো হাসপাতালে নেওয়া জরুরি।
জানা গেছে, বাক্কার মিয়া কয়েকমাস আগে জীবনের তাগিদে কাজের খোঁজে কুমিল্লা শহরে গিয়ে ট্রেন দুর্ঘটনায় একটি পা হারান। সেখানকার স্থানীয়দের সহায়তায় বাক্কার মিয়ার বিষয়টি নজরে আসে শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার কৃতি সন্তান ডাঃ সোহরাব হোসেনের। এরপরে মানবদরদি ডাঃ সোহরাব হোসেনের তত্ত্বাবধানে তাকে চিকিৎসা দিয়ে কিছুটা সুস্থ করে নকলায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরে নকলা উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাকে ভর্তি করা হয়। তার পায়ের অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অর্থের অভাবে ও অপারেশনের জন্য রক্তের অভাবে আবার তাকে বাড়ি ফিরে আসতে হয়।