“চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুর প্রহর গুনছে অসহায় বাক্কার”, “বাঁচতে চায় নকলার বাক্কার”, “অর্থের অভাবে চিকিৎসা ও খাদ্য সংকটে বাক্কার” এমন অনেক শিরোনামে সমকালীন বাংলা ও দৈনিক কালের কণ্ঠসহ বিভিন্ন পত্রিকায় খবর প্রকাশের পরে শেরপুরের নকলা উপজেলার সেই অসহায় বাক্কারের পাশে দাঁড়িয়েছে প্রশাসন।
খবরটি শেরপুরের জেলা প্রশাসক মো. মোমিনুর রশিদ-এঁর নজরে আসে। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদুর রহমানকে দ্রুত সময়ের মধ্যে অসহায় বাক্কার আলীর খোঁজ খবর নিতে নির্দেশক্রমে অনুরোধ জানান।
জেলা প্রশাসক মো. মোমিনুর রশিদ-এঁর নির্দেশনা পেয়ে বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদুর রহমান নগদ ১০ হাজার টাকা ও অন্তত দুই সপ্তাহের খাদ্য সামগ্রী নিয়ে ছুটে যান উপজেলার পাঠাকাটা ইউনিয়নের চকপাঠাকাটা গ্রামের অসহায় বাক্কার আলীর বাড়িতে।
এসময় বঙ্গবন্ধু প্রজন্ম লীগ উপজেলা শাখার সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ও পাঠাকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফয়েজ মিল্লাত, নকলা প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক মোশাররফ হোসেন সরকার বাবু, যুগ্ম সম্পাদক ও নকলা অদম্য মেধাবী সহায়তা সংস্থার সাধারন সম্পাদক নাসির উদ্দিনসহ স্থানীয় গন্যমান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
রক্ত সৈনিক বাংলাদেশ এর নকলা উপজেলা শাখার সভাপতি ফজলে রাব্বী রাজন জানান, দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত অসহায় বাক্কারের পায়ের পচন রোধে অপারেশনের জন্য যতটুকু রক্ত প্রয়োজন হবে, তার সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পরিমাণ রক্ত স্বেচ্ছায় সরবরাহ করা হবে।
পাঠাকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফয়েজ মিল্লাত জানান, তাঁর ব্যক্তিগত তহবিল থেকে অসহায় বাক্কার আলীকে খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে আর্থিক সহায়তা প্রদানসহ সার্বিক সহযোগিতা করবেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদুর রহমান দুর্ঘটনায় পঙ্গু বাক্কারের জন্য দ্রুত প্রতিবন্ধী ভাতাসহ চিকিৎসার জন্য সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাসদেন। উল্লেখ্য যে, চলাচলে অক্ষম বাক্কার আলীকে নকলা অদম্য মেধাবী সহায়তা সংস্থার পক্ষ থেকে একটি হুইল চেয়ার প্রদান করা হয়েছে।
জানাগেছে, বাক্কার মিয়া কয়েকমাস আগে জীবনের তাগিদে কাজের খোঁজে কুমিল্লা শহরে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় একটি পা হারান। সেখানকার স্থানীয়দের সহায়তায় বাক্কার মিয়ার বিষয়টি নজরে আসে শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার কৃতি সন্তান ডা. সোহরাব হোসেনের। এরপরে মানবদরদি ডা. সোহরাব হোসেনের তত্ত্বাবধানে তাকে চিকিৎসা দিয়ে কিছুটা সুস্থ করে নকলায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরে নকলা উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাকে ভর্তি করা হয়। তার পায়ের অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অর্থের অভাবে ও অপারেশনের জন্য রক্তের অভাবে আবার তাকে বাড়ি ফিরে আসতে হয়।