শেরপুরের নকলায় জেলা আওয়ামী লীগের সদ্যপ্রয়াত সদস্য, নকলা পৌরসভার সাবেক মেয়র ও চন্দ্রকোনা কলেজের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আলহাজ¦ মিজানুর রহমান-কে বিনম্র শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করতে এক স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার চন্দ্রকোনা কলেজের আয়োজনে কলেজ মিলনায়তনে অধ্যক্ষ ড. রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে এ স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
এ স্মরণসভায় সরকারি হাজী জালমামুদ কলেজের অধ্যক্ষ মো. আলতাব আলী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও চৌধুরী ছবরুননেছা মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল খালেক, চন্দ্রকোনা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ এনামুল হক, ধুকুড়িয়া এ-জেড টেকনিক্যাল এন্ড বি.এম কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ রেজাউল আলম, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সারোয়ার আলম তালুকদার, চন্দ্রকোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাজু সাঈদ সিদ্দিকী, চন্দ্রকোনা কলেজ পরিচালনা পরিষদের সাবেক সদস্য মাওলানা নূরুল হক, জেলা পরিষদ সদস্য রবিউল করীম মানিক, চন্দ্রকোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোখলেছুর রহমান, সদ্যপ্রয়াত অধ্যাপক মিজানুর রহমানের সহধর্মীনি কাকলি রহমান, চন্দ্রকোনা কলেজের পৌরনীতি বিভাগের সাবেক সহকারী অধ্যাপক আলিমুল ইসলাম, বাংলা বিভাগের প্রভাষক জয়ন্ত কুমার দেব এ্যাপোলোসহ অনেকে মরহুম মিজানুর রহমানের রাজনৈতিক, সামাজিক ও ব্যক্তি জীবনের ওপর স্মৃতিচারন মূলক বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা বলেন, মরহুম অধ্যাপক মিজানুর রহমান একাধারে একজন আদর্শ শিক্ষক, জনপ্রতিনিধি ও স্বচ্ছ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনি অখন্ড কুর্শা বাদাগৈড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, নকলা পৌরসভার প্রতিষ্ঠাকালীন নির্বাচিত মেয়র, চন্দ্রকোনা মহাবিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিসেবে নিষ্ঠার সহিত দায়িত্ব পালন করে গেছেন। তারা জানান, মিজানুর রহমান রাজনৈতিক জীবনে ১৯৮৩ সালে নকলা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, পরে সভাপতি নির্বাচিত হয়ে সততা ও নিষ্ঠার সহিত দায়িত্ব পালন করে সকলের মন জয় করেছিলেন। তিনি ১৯৯৬ সাল থেকে আমৃত্য্ ুশেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মানিত সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে গেছেন। নিজ গুণাবলীতেই সর্বমহলে প্রশংসার পাত্র ছিলেন তিনি। জনসেবার মাধ্যমে তিনি প্রতিটি মানুষের কাছে যেন অভিভাবক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। আওয়ামী রাজনৈতিক সংকটকালীন সময়ে উপজেলায় হাতে গুণা যেকয়জন লোক রাজনৈতিক মাঠে ছিলেন, তাদের মধ্যে মিজানুর রহমান ছিলেন একজন। তিনি দলীয় ও ব্যক্তি জীবনে একজন নির্ভীক ও নির্লোভ অভিভাবক, শিক্ষক ও রাজনৈতিক ব্যক্তি হিসেবে জেলা-উপজেলায় সুপরিচিত ছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এঁর আদর্শ ছিলো তাঁর পথচলার প্রেরনা। অধ্যাপক মিজানুর রহমান কারো হুমকি-ধামকি ও কোন প্রকার বাধাবিপত্তিতে বঙ্গবন্ধুর আর্দশ থেকে কোনদিন একমুহুর্তের জন্যও বিন্দুমাত্র পিছপা হননি। কোন প্রকার লোভ-লালসা ছিলোনা বলেই কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করার নজির তাঁর রাজনৈতিক জীবনের ইতিহাসে নেই। অধ্যাপক মিজানুর রহমান তাঁর কৃতকর্মের জন্যই পরপারে গিয়েও মানবের তরে অমর হয়ে থাকবেন, এমটাই মনে করেন সকল বক্তারা।
এসময় নকলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. মোশারফ হোসাইন, কার্যকরী সদস্য আলহাজ্ব মাহবুবর রহমান ও সিমানুর রহমান সুখনসহ স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী, স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুব লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, কলেজ পরিচালনা পরিষদের সদস্যবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবন্দ, মরহুমের পরিবারের লোকজন ও চন্দ্রকোনা কলেজের সহকর্মীসহ অন্যান্য শিক্ষক-কর্মচারী ও স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। পরে স্থানীয় জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাসুদ রানা কর্তৃক দোয়া মাহফিল শেষে সকলকে সাথে নিয়ে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য, পৌরসভার সাবেক মেয়র, সবার প্রিয় ব্যক্তিত্ব, সদালাপী, সদাহাস্যোজ্জল, নিরঅহংকার ও সাদা মনের মানুষ অধ্যাপক মিজানুর রহমান ১২ সেপ্টেম্বর রবিবার সকাল সাড়ে ৯টার সময় রাজধানী ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (পিজি হাসপাতাল) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। রবিবার রাত সাড়ে ৯টার সময় নকলা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মরহুমের জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।