শেরপুরের নকলায় ভুলতথ্য সম্বলিত আবেদনের প্রেক্ষিতে ওয়ারিশান সনদ প্রদানের কারনে সনদ জালিয়াতির মামলায় সহযোগী আসামী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ২ নং নকলা ইউপির দুদফায় নির্বাচিত চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান সুজা জামিন পেয়েছেন।
তবে কারাগারে আটক রয়েছেন অপর এক আসামী উপজেলার নকলা ইউনিয়নের ধনাকুশা গ্রামের মৃত আশরাফ আলীর ছেলে ও ছত্রকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নাজমুল ইসলাম (৪৩)।
বৃস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১ টারদিকে আইনজীবী মমতাজউদ্দীন মুন্না শেরপুর জেলার মামুলী আদালতে আনিসুর রহমান সুজার জামিন আবেদ করলে আদালত উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচার বিশ্লেষণ করে তাকে জামিন প্রদান করেন।
জানা গেছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষক ও তার বোন কর্তৃক তাদের সৎ মা ও ভাই-বোনের তথ্য গোপন রেখে ভুলতথ্য সম্বলিত আবেদনের প্রেক্ষিতে ওয়ারিশান সনদ প্রদানের কারনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ২ নং নকলা ইউপির চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান সুজাকে সহযোগী আসামী করা হয়।
এ মামলায় গত মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আনিসুর রহমান সুজা ও শিক্ষক নাজমুল ইসলাম স্বেচ্ছায় আদালতে আত্মসমর্পণ করেন এবং জামিনের আবেদন করেন। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরিফুল ইসলাম খান তাদের জামিনের আবেদ নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী মমতাজ উদ্দিন মুন্না বলেন, নাজমুল ইসলাম ও তার বোন কামরুন্নাহার পারভীনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ইউপি চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান সুজা ওই ওয়ারিশান সনদ দিয়েছেন। কাজেই চেয়ারম্যান ওই ঘটনায় জড়িত নন। চেয়ারম্যানকে সামনে রেখে তারা বাড়তি সুবিধা নিতেই অন্যায়ভাবে একজন সম্মানিত লোককে এ মামলায় জড়ানো হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে অভিযোগটি জাল-জালিয়াতির নয়। এটাকে বড়জোর তথ্যগত ভুল বলা যেতে পারে তিনি মনে করেন। তাছাড়া এ মামলায় আনিসুর রহমান সুজা একজন সহযোগী আসামি মাত্র। এসব বিবেচনা এনেই হয়তোবা বিজ্ঞ আদালত আনিসুর রহমান সুজার জামিন মঞ্জুর করেছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও নকলা ইউপির চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান সুজা বলেন, ওয়ারিশান সনদের কোন রেজিস্টার সংরক্ষণ করা হয় না। তাই ২০১৩ সালে ওয়ারিশান সনদ দেওয়ার বিষয়টি যাচাই করার কোন প্রকার সুযোগ ছিল না। পরবর্তীতে তার অজ্ঞাতসারেই নাজমুল ইসলাম ও তার বোন কামরুন্নাহার পারভীনের আবেদনের ভিত্তিতে ২০১৯ সালে তাদেরকে ওয়ারিশান সনদ দেওয়া হয়েছে। যেহেতু এই সনদটি ভুল তথ্যের ভিত্তিতে ও দ্বিতীয় বারে দেওয়া, সেহেতু আগেরটাই বলবত থাকবে এটাই স্বাভাবিক। আর যদি কেউ ভুল তথ্যের ওয়ারিশান সনদ নিয়ে নিজ নামে জমি খারিজ করেই থাকে, তা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদনের প্রেক্ষিতে খারিজ বাতিল হতে পারে। অতএব এ মামলায় আমাকে আসামী করার কোন যৌক্তিকতা খোঁজে পাচ্ছিনা। তাকে সামাজিক ভাবে হেয় করার জন্য কোন গোপন চক্রান্ত বা ইন্দনদাতা আছে বলে তিনি জানান। বিজ্ঞ আদালত স্বাক্ষী প্রমানের ভিত্তিতে এ মামলা থেকে তাকে স্বসম্মানে ও বিনাশর্তে মুক্তি দান করবেন বলে আনিসুর রহমান সুজার দৃঢ় বিশ্বাস।