শেরপুরের নকলায় পরিত্যক্ত দ্বিতল ভবন থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন মধ্যবয়সি অজ্ঞাত এক নারী উদ্ধার করেছে থানার পুলিশ। রবিবার দিবাগত রাত ১০টার দিকে পৌর শহরের জোড়াব্রীজ পাড় এলাকার প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম রব্বানীর পরিত্যক্ত দ্বিতল ভবনের দুই তলার এক কক্ষ থেকে কঙ্কালসার ওই নারীকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধারকৃত নারীটিকে রাত সাড়ে ১০টার দিকে নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। একদিনের চিকিৎসা ও খাবার খাওয়ার পরে নারীটি কিছুটা সুস্থ্য হয়ে তার নাম পারভীন বলে জানায়। নিজের নাম ছাড়া আর কিছু বলতে পারছেন না।
জানা যায়, বাড়িটির মালিক বীর মুক্তিযোদ্ধা রব্বানী আনুমানিক ৪-৫ বছর আগে মারা যাওয়ার পর দুতলা ওই বাড়িটিতে কারো যাতায়াত নেই। স্থানীয়রা ধারনা করছেন, ফাঁকা পরিত্যক্ত বাড়ি পেয়ে সবার অজান্তে মানসিক ভারসাম্যহীন এ নারী দুতলার পিছনের একটি কক্ষে গিয়ে ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করেদেয়। ৩-৪ দিন ধরে ভবনটির ভিতর থেকে অস্বাভাবিক শব্দ শোনতে পান স্থানীয়রা। পরে স্থানীয়রা রবিবার রাত ১০টার দিকে থানায় খবর দিলে, উপ-পরিদর্শক (এস.আই) চন্দন কুমার পাল তাঁর সঙ্গীয় ফোর্স নকলা পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদ আহাম্মেদ লালন ও স্থানীয়দের উপস্থিতিতে দরজা ভেঙ্গে অতিদূর্বল ও অসহ্য দুর্ঘন্ধযুক্ত কঙ্কালসার অজ্ঞাত এ নারীকে উদ্ধারের পরে নকলা হাসপাতালে ভর্তি করেন।
হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরে নারীটিকে মমতাময়ী নার্স হাসি বেগম হাসপাতালে কর্মরত পরিচ্ছন্ন কর্মীদের সাথে নিয়ে বস্ত্রহীন, ধূলোবালি মাখা, অতিদূর্বল ও অসহ্য দুর্ঘন্ধযুক্ত কঙ্কালসার ওই নারীকে গোসল করান এবং বস্ত্র পরিধান করিয়ে নিজ হাতে খাবার খাওয়ান।
এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফার নির্দেশে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. একেএম নাজমুস সাকিবের তত্বাবধানে ওই নারীকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এবিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বলেন, প্রাথমিকভাবে ওই নারীর বড় ধরনের কোন সমস্যা চিহ্নিত হয়নি। দীর্ঘসময় অনাহারে থাকার কারনে একদম শুকিয়ে গেছে। চিকিৎসা ও নিয়মিত খাবার পেলে দ্রুত সময়ের মধ্যে সুস্থ্য হয়ে উঠবেন বলে জানান ডা. মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা।
ছিন্নমূল এ নারীটি কারো পরিচিত হলে বা কেউ যদি চিনতে পারেন, তাহলে নকলা হাসপাতালে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি এই ছিন্নমূল রোগীকে চিকিৎসা সেবার জন্য যারা বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করেছেন তাদের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতাসহ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা, থানা ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতৃবৃন্দ এবং নকলা প্রবীণ ও প্রতিবন্ধী হিতৈষী সংস্থার মতো বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকগন।