শেরপুর জেলার নকলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমানের মরদেহ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান নকলা পৌরসভার কায়দা এলাকার মৃত আব্দুল হামিদ-এর ছেলে।
মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) সকাল ১১টার সময় নকলা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে পুলিশের একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করেন এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জাহিদুর রহমান মরহুমের প্রতি রাষ্ট্রীয় শ্রদ্ধা জানাতে থানার ওসি মুশফিকুর রহমানকে সাথে নিয়ে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। পরে ওই মাঠেই মরহুমের জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা নামাজ শেষে কায়দা বাজারদী গোরস্থানে তাঁর মরদেহ সমাহিত করা হয়।
বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান হাজী জালমামুদ কলেজের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। তিনি ২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে নকলা উপজেলা আওয়ামী লীগের আমৃত্যু সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে নকলা থানা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক নির্বাচিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ১১নং সেক্টরের অধীনে সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে সক্রিয় ছিলেন। ১৯৭২ সালে নকলা থানা ছাত্রলীগের সভাপতি, ১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে সুনামের সহিত দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রতিষ্ঠানিক লেখাপড়া শেষে ১৯৮৪ সালে নকলা হাজী জালমামুদ কলেজে দর্শন বিভাগে অধ্যাপনা শুরু করেন। ২০০৯ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমানের মৃত্যুতে শেরপুর-২ (নকলা-নালিতাবাড়ী) সংসদীয় আসনের এমপি, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবেক কৃষি মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাতীয় সংসদের সরকার দলীয় হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিউর রহামান আতিক এমপি ও সাধারন সম্পাদক চন্দন কুমার পালসহ জেলা কমিটির অনেকে, উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জাহিদুর রহমান, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্মসম্পাদক শাহ মো. বোরহান উদ্দিনসহ উপজেলা পরিষদের অন্যান্যরা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম জিন্নাহসহ কমিটির অন্যান্যরা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাউছার আহাম্মেদ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম হিরু, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল মনসুর, পৌরসভার মেয়র মো. হাফিজুর রহমান লিটন, উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ.কে.এম মাহবুবুল আলম সোহাগ, সরকারি হাজী জালমামুদ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আলতাব আলী, বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদ নকলা উপজেলা শাখার সভাপতি মজিবর রহমান ও সাধারন সম্পাদক অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বিদ্যুৎসহ কমিটির অন্যান্যরা, উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক রফিকুল ইসলাম সোহেল, যুগ্ম আহবায়ক এফ.এম কামরুল আলম রঞ্জু ও রেজাউল করিম রিপনসহ কমিটির অন্যান্যরা, নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুশফিকুর রহমান, নকলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. মোশারফ হোসাইন ও সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন সরকার বাবুসহ কমিটির অন্যান্যরা, জেলা ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড কাউন্সিলের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সংসদ কমান্ড কাউন্সিলের নেতৃবৃন্দ ও উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাগন, বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষকবৃন্দসহ বিভিন্ন পেশাশ্রেণীর অনেকে আলাদাভাবে শোক প্রকাশ করেছেন। তাঁরা সকলেই মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনার পাশাপাশি মরহুমের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন।
উল্লেখ্য, সোমবার (২৩ আগস্ট) বিকাল ৫:২০ মিনিটের সময় শেরপুর সদর হাসপাতালে বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। তিনি স্ত্রীসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।