সারাদেশের ন্যায় শেরপুর জেলার নকলা উপজেলায় করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইন উদ্বোধন করা হয়েছে। শনিবার (৭ আগস্ট) সকালে আনুষ্ঠানিক ভাবে এ কার্যক্রম এ উদ্বোধন কার হয়। শনিবার দিনব্যাপী উপজেলার ইউনিয়ন পর্যায়ের ২৫ বছর ও তদুর্ধ্ব ৫ হাজার ৪০০ জনকে করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এর প্রথম ডোজের ভ্যাকসিন প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্স সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৯ টি ইউনিয়নের পুরাতন ১ নং ওয়ার্ড (বর্তমান ১, ২ ও ৩ নং ওয়ার্ড) এর ৯টি কেন্দ্রে একযোগে সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৩ টা পর্যন্ত কোভিড-১৯ এর টিকা প্রদান করা হচ্ছে। তবে ক্যাম্পেইন শুরুর প্রথম দুই ঘন্টা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পঞ্চাশোধ্ব বয়স্ক জনগোষ্ঠী ছাড়াও নারী ও শারীরিক প্রতিবন্ধীদেরকে ভ্যাকসিন প্রদান করা হলেও গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারী মা-দেরকে ভ্যাকসিন প্রদান করা হচ্ছে না।
ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইন পরিদর্শনে আছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ফরিদা ইয়াসমীন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জাহিদুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম জিন্নাহ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাউছার আহাম্মেদ, উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফাসহ বিভিন্ন ইউপির চেয়ারম্যানগন ও নেতৃবৃন্দরা।
স্বাস্থ্য সহকারী আনোয়ার হোসেন, হাবিবুর রহমান, মাসুম বেলাল মিন্টু, রেজাউল করিম, নাহিদুর রহমান, ফরহাদ হোসেন, শাহিনুর আলম তালুকদার বিপ্লব, হাফিজুল হাসান রানা, নাসরিন আক্তার, হাফছা আইারন মিলি, খন্দকার শরীফ হোসেন, রফিকুল ইসলাম, জাহিদা আক্তার, মোস্তাফিজুর রহমান, জান্নাতুন নাহার মুনমুন, আফরোজা বেগম ও শেফালী বেগমসহ অনেক টিকাদানকারীদের সাথে কথা বলে ও সরেজমিনে দেখা গেছে পূর্বে রেজিস্ট্রেশনকৃত ২৫ বছর ও তদুর্ধ্ব বয়সী যে বা যারা টিকা গ্রহন করার জন্য টিকা কার্ড ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি কার্ড) নিয়ে আসছেন তাদেরকে তালিকাভূক্তির পরে সরাসির প্রথম ডোজের ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। আর যারা পূর্বে রেজিস্ট্রেশন করেননি তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি কার্ড) মোতাবেক রেজিস্ট্রেশন করে পরে তাদেরকে কোভিড-১৯ এর প্রথম ডোজের টিকা প্রদান করা হচ্ছে। উভয় ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি কার্ড) প্রর্দশন আবশ্যক বলে জানিয়েছেন টিকাদানকারীরা।
২ নং নকলা ইউপির চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান সুজা, ৩নং উরফা ইউপির চেয়ারম্যান রেজাউল হক হীরা, ৫ নং বানেশ্বরদী ইউপির চেয়ারম্যান মাজহারুল আনোয়ার মহব্বত, ৬ নং পাঠাকাটা ইউপির চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ফয়েজ মিল্লাত ও ৯নং চন্দ্রকোনা ইউপির চেয়ারম্যান সাজু সাঈদ সিদ্দিকীসহ স্থানীয় ইউপি সদস্যরা জানান, তারা নিজ উদ্যোগে করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইন সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে নিজ মহল্লার মসজিদ-মাদ্রাসার মাইকে, ফেইসবুকেসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার-প্রচারনা করেছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বলেন, উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে জনগনের সুবিধাজনক স্থানে ৯টি অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। তাছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্থাপিত স্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রে কোভিড-১৯ এর টিকা প্রদান চলমান আছে এবং সরকারের পক্ষ থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত চলমান থাকবে।
ইউএইচএফপিও ডা. মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা জানান, কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইন সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করতে প্রতিটি কেন্দ্রের জন্য ১ জন করে মোট ৯ জন তদারককারী, ৩ জন করে মোট ২৭ জন সুপার ভাইজার, ৬ জন করে মোট ৫৪ জন অভিজ্ঞ টিকাদানকারী, ৯ জন করে মোট ৮১ জন স্বেচ্ছাসেবক কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়া জরুরি সেবা নিশ্চিত করতে এবং তাৎক্ষণিক নির্দেশনা প্রদানে উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফার নেতৃত্বে চিকিৎসকগনের সমন্বয়ে তাৎক্ষণিক নির্দেশনা ও পরামর্শ প্রদানকারী একটি টিম রয়েছে। টিকা নিদে আসা লোকদের ভীর নিয়ন্ত্রণে ও সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক নিরাপদ সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, বাংলাদেশ পুলিশ, গ্রাম পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করছেন বলে তিনি জানান।