শেরপুরের নকলায় এক অসহায় পরিবারের উপর চিহৃত মাদকসেবী কর্তৃক পাশবিক হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলার শিকার হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২১ বছর ধরে বিধবা হওয়া অপারেশন রোগী বৃদ্ধা রাশিদা খাতুন (৬৫) ও অসুস্থ ছেলে রাব্বী নূর রহমান (২২)।
রাশিদা খাতুন উপজেলার বানেশ্বরদী ইউনিয়নের দক্ষিন কায়দা গ্রামের মৃত হানিফ উদ্দিনের স্ত্রী ও রাব্বী নূর রহমান মৃত হানিফ উদ্দিনের একমাত্র ছেলে।
বুধবার (৪ আগস্ট) দুপুরের দিকে হামলাকারী মৃত হানিফ উদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে লোহার শাবল দিয়ে এলাপাথারি পিটিয়ে এ হৃদয়বিদারক ঘটনাটি ঘটায়। আহতরা বর্তমানে নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক নম্বর কেবিনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বুধবার বিকালে এবিষয়ে নকলা থানায় ৩ জনকে আসামী করে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন আহত বৃদ্ধার কলেজ পড়ুয়া মেয়ে আফরিন জাহান।
অভিযোগের ভিত্তিতে এসআই আনোয়ার হোসেন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন এসআই আনোয়ার হোসেন। জমিতে গাছের ডাল যাওয়াকে কেন্দ্র করে ও পারিবারিক শত্রুতার জেরে প্রায়ই তাদের ওপর হামলা করা হয় বলে জানান আফরিন জাহান।
বাদী পক্ষের লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, অভিযোগ দায়ের করে বাড়িতে গেলে তারা পুনরায় শাবল ও রামদা নিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করে। তাদের ঘরে কোন পুরুষ মানুষ নাথাকায় তারা ভয়ে দরজা বন্ধ করে ফেললে হামলাকারীরা বাহির থেকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে ও প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। হামলাকারীরা নাকি বলে তুদের জানেমেরে রোদে শুকাতে দিলেও কেউ কিছু করতে পারবে না। টাকা হলে নাকি সবই সম্ভব বলে মাদকসেবীরা জনগনের সাথে বলে ফিরেন। বেশি জামেলা করলে রাব্বীকে গাজা দিয়ে ও ঘরে অবৈধ জিনিস রেখে দিয়ে পরিবারের সকলকে পুলিশে ধরিয়ে দিবে বলেও হুমকি দেয় মাদকসেবী হামলাকারীরা। এনিয়ে নিরীহ পরিবারের মধ্যে জান-মালের ভয় ও হয়রানী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে তারা জানান।
আফরিন জাহান বলেন, আমাদের টাকা পয়সা নেই। নেই লোকবল। পরিবারে নেই প্রাপ্ত বয়স্ক কোন পুরুষ। তাদের পরিবারে বৃদ্ধা মা (আহত), বিধবা এক বড় বোন, নবম শ্রেণীতে পড়ুয়া এতিম এক ভাগ্নী, অবিবাহিত দুই মেয়ে ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক একমাত্র ভাই (আহত)। এসুযোগে তাদের উপরে হামলার ঘটনা ঘটায়। এর আগেও হামলাকারী মাদকসেবীরা কয়েকবার এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। পরে এলাকাবসীরা মিমাংসা করে দিলে অসহায়ত্বের কারনে তারা নিরবে মেনে নিতে বাধ্য হয়।
এলাকাবাসীদের জিঙ্গাসায় জানা গেছে, বিবাদীরা চিহৃত মাদকসেবী। তারা কয়েকবার জেল খেটেছে। এখন আর তাদের মধ্যে জেল জরিমার ভয় নেই। তাদের নাকি জেল খানার সবাই পরিচিত! তারা উত্তর কায়দা এলাকার হেলালের ছেলে বাবুলকে হত্যার উদ্দেশ্যে ছুরি দিয়ে গলা কেটে ফেলার মামলায় প্রায় একমাস জেল খেটে জামিনে বেড়িয়েছে। তাছাড়া হামলাকারীদের বাবা মিন্টু মিয়া (মিনু) নিজের ছেলেকে ২/৩ বার মাদকসহ পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এমন লোকের ভয়ে এলাকার কেউ তাদের বিষয়ে মুখ খুলতেও ভয় পান বলে অনেকে জানান।
যে পরিবারের সন্তানদের হাতে বাবা নিজে নিরাপদ নয়! যেসকল সন্তানদের বাবা নিজে মাদকসহ পুলিশের হাতে তুলে দিতে বাধ্য হয়, এমন একটি পরিবারের মাদকসেবীর ভয়ে কায়দা এলাকার প্রতিটি পরিবার শঙ্কায় দিনাতিপাত করেন বলে অনেকে জানান। বিশেষ করে মিন্টু মিয়ার বড় ছেলে সোহাগ মিয়ার ভয়ে থাকেন এলাকার সবাই। এমতাবস্থায় হামলার শিকার পরিবারসহ এলাকাবাসীরা চিহৃত ওই মাদকসেবীদের দ্রুত গ্রেফতার করে তাদের সুষ্ঠ বিচার দাবী করছেন।