বিভিন্ন কারনে দিন দিন দেশীয় মাছ বিলুপ্ত হচ্ছে। বিলুপ্ত হওয়ার উল্লেখযোগ্য কারন গুলোর মধ্যে নদী, বিল, খাল ভরাট হয়ে যাওয়া একটি। আর ভরাট হওয়ার কারন গুলোর মধ্যে কচুরি পানা পচে নিচে জমে ভরাট হওয়া একটি কারন। কচুরি পানা পচে বিল ভরাট হওয়া থেকে ও দেশীয় মাছ রক্ষায় শেরপুরের নকলা উপজেলার কুর্শাবিলে স্বেচ্ছাশ্রমে কচুরিপানা পরিস্কারের কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
উপজেলার নয়াবাড়ি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি ও সমাজ উন্নয়ন সংঘের সদস্যবৃন্দ, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা মিলে দেশীয় মাছ রক্ষায় কুর্শাবিল থেকে স্বেচ্ছাশ্রমে কচুরিপানা পরিস্কারের কার্যক্রম শুরু করেছে। এরই মধ্যে কুর্শাবিলের প্রায় ২০ একর এলাকার কচুরি পানা পরিস্কার করা শেষ হয়েছে। এই কার্যক্রম পানা শেষ না হওয়া পর্যন্ত চলবে। তারা ধারনা করে বলেন মাস ব্যাপী এই কার্যক্রম চলতে পারে।
স্বেচ্ছাশ্রমে যারা কচুরিপানা পরিস্কার করছেন তাদের মধ্যে নয়াবাড়ি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি আবু বক্কর, সাবেক সভাপতি হারেজ আলীসহ আনারুল ইসলাম, শিপন মিয়া, ছাত্তার খান, আবুল হোসেন কান, আলাল উদ্দিন, লাল চাঁন, সুজন মিয়াসহ অন্যান্য অনেকে, সমাজ উন্নয়ন সংঘের সহ-সভাপতি মাহফিজুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন সদস্য, ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক নাজমুল ইসলামসহ অন্যান্যদের নাম উল্লেখ করার মতো।
নয়াবাড়ি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি আবু বক্কর জানান, তাদের সমিতির পক্ষথেকে কয়েক বছর ধরে কুর্শাবিলটি সরকারের কাছে ইজারা নিয়ে মাছ চাষ করছেন। এবার প্রায় সাড়ে সাত লাখ টাকার বিনিময়ে তারা ইজারা নিয়েছেন। কিন্তু কয়েক বছর ধরেই কচুরি পানার কারনে তাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। মাছ চাষের আয়েই তাদের সংসার চলে। কয়েক বছরের লোকসানে তারা হতাশ। তাই স্বেচ্ছাশ্রমে কচুরিপানা পরিস্কারের কার্যক্রম হাতে নিয়েছেন।
ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক নাজমুল ইসলাম বলেন, কুর্শা বিলের ওপর নির্ভর করেই বিলের চারপাশের দেড় শতাধিক পরিবার জীবিকা নির্বাহ করেন। তাদের জীবন জীবীকার তাগিদে স্বেচ্ছাবেকদের নিয়ে বিল থেকে কচুরিপানা পরিস্কার শুরু করেছেন। বিল পরিস্কার হলে ভাগ্যের পরিবর্তন হবে অগণিত মৎস্যজীবী পরিবারের, এমনটাই জানান তিনি।
উপজেলা মৎস্যজীবী লীগের আহবায়ক আনোয়ার হোসেন বলেন, মৎস্যজীবীরা সাধারনত নিম্ন আয়োর মানুষ। তাদের পক্ষে টাকা দিয়ে বিলের কচুরিপানা পরিস্কার করা সম্ভব নয়। তাই স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তায় নিজেরা স্বেচ্ছাশ্রমে বিলের পানা পরিস্কার করছেন। সরকারি ভাবে তাদেরকে কিছু আর্থিক সহযোগিতা করলে উপজেলার অন্তত ৫শতাধিক মৎস্যজীবী পরিবারের ভাগ্যের পরিবর্তন হতো।
উপজেলা মৎস্যজীবী লীগের আহবায়ক আনোয়ার হোসেন, নয়াবাড়ি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি আবু বক্কর, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক নাজমুল ইসলামসহ অনেক সুশীল জনের দাবী মৎস্যজীবী পরিবারের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য উপজেলার জলামহাল গুলোর কচুরিপানা পরিস্কার করতে সরকারিভাবে যেন আর্থিক সহায়তা দেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়। এতে করে একদিকে যেমন উপজেলার মৎস্যজীবী পরিবারের ভাগ্য পরিবর্তন ঘটবে অন্যদিকে দেশীয় মাছ বিলুপ্তি হতে রক্ষা পাবে।