বাংলাদেশ থেকে জলাতঙ্ক নির্মূলে কুকুরকে টিকা দান (এমডিভি) কার্যক্রম চলছে। এর অংশ হিসেবে শেরপুরের নকলা উপজেলা থেকে জলাতঙ্ক নির্মূলের লক্ষ্যে কুকুরের টিকাদান-এমডিভি (২য় রাউন্ড) কার্যক্রম চলছে। ৪ জুন শুক্রবার থেকে এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে, চলবে ৮ জুন মঙ্গলবার পর্যন্ত।
এমডিভি কার্যক্রমের সুপারভাইজার মো. আরিফুর রহমান জানান, ৪ জুন থেকে ৮ জুন পর্যন্ত এ ৫ দিন সময়ের মধ্যে নকলা উপজেলার ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার কুকুরকে ২য় রাউন্ডের টিকা প্রদান করা হবে। মালিকানা ও বেওয়ারিশ সকল কুকুরকে টিকাদান করার জন্য পৌরসভা ও ইউনিয়ন ভিত্তিক দল গঠন করে দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি দলের জন্য ৬ জন করে লোক/কর্মী নিয়োজিত রয়েছেন। এর মধ্যে একজন করে ডাটা কালেক্টর, টিকাদানকারী, দক্ষ কুকুর ধরার লোক ও ভ্যান চালক এবং ২ জন স্থানীয় কুকুর ধরার লোক নির্বাচন করা হয়েছে।
এই কার্যক্রমকে সফলতার সহিত সম্পন্ন করতে এরই মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মিলনায়তনে উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা-এর সভাপতিত্বে অবহিতকরণ সভা করা হয়েছে। ওই সভায় উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিগন, সাংবাদিক, এমডিভি কার্যক্রমের রিসোর্স পারসনগন ও বিভিন্ন এলাকার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
তাছাড়া উপজেলার “নকলা হেল্প লাইন” নামের ফেইসবুক পেইজসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও স্বেচ্ছাসেবকগন নিজ নিজ টাইমলাইনে সচেতনতা মূলক লেখা পোষ্ট করেছেন। সর্বসাধারনের অবগতির জন্য পেইজের কর্তৃপক্ষরা তাদের ফেইসবুক পেইজে কুকুরের টিকাদান বিষয়ে কেউ বিভ্রান্ত না হয়ে বরং টিকাদান কর্মীদের সহযোগিতা করেছেন। তারা বলেন, সরকারি ভাবে কুকুরকে জলাতংক টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে, সেই সাথে টিকা দেওয়া কুকুর গুলোকে লাল রং দিয়ে চিহ্নিত করা হচ্ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা জানান, কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত রোগীর জন্য সরকারি ভাবে উপজেলা পর্যায়ে কোন টিকা বা ভ্যাক্সিন সরবরাহ করা হয়না। তাই কাউকে কুকুর বা জলাতঙ্ক ছড়ায় এমন কোন প্রাণি কামড় দিলে দ্রুত জেলা বা বিভাগীয় কোন হাসপাতাল থেকে জলাতঙ্ক রোগের ভ্যাক্সিন নিতে পরামর্শ দেন তিনি।
কুকুরকে টিকাদান বিষয়ে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ জানান, জলাতঙ্ক একটি ভয়ংকর মরণব্যাধি, এ রোগে মৃত্যুর হার প্রায় শতভাগ। পৃথিবীতে কোথাও না কোথাও প্রতি ১০ (দশ) মিনিটে একজন এবং প্রতি বছরে প্রায় ৫৫ হাজার মানুষ জলাতঙ্ক রোগে মারা যায়। জলাতঙ্ক রোগটি মূলত কুকুরের কামড় বা আচঁড়ের মাধ্যমে এদেশে বেশি ছড়ায়। তবে বিড়াল, শিয়াল, বেজী ও বানরের কামড় বা আচঁড়ের মাধ্যমেও এ রোগ হতে পারে বলে তিনি জানান। ২০২২ সালের মধ্যে এদেশকে জলান্তক মুক্ত করার লক্ষে ২০১০ সাল থেকে জাতীয় জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।