শেরপুরে বিশ্ব দুগ্ধ দিবস-২০২১ উদযাপন উপলক্ষে “Sustainability in the dairy sector with messages around the environment, nutrition and socio-economics.”- এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ১ জুন মঙ্গলবার জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের বাস্তবায়নে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

কর্মসূচির অংশ হিসেবে সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে র‌্যালী, আলোচনা সভা, শিক্ষার্থীদের মধ্যে রচনা, চিত্রাঙ্কন ও কুইজ প্রতিযোগিতা শেষে জিয়ীদের মাঝে পুরষ্কার ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।

র‌্যালীটি জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের সামনে থেকে শুরু হয়ে জেলা শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় জেলা প্রাণি সম্পদ অফিস চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। পরে জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস চত্বরে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুল হাই-এর সভাপতিত্বে সীমিত পরিসরে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে শেরপুর পৌরসভার মেয়র গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আমিনুল হক, ডিআইওয়ান আবুল বাশার মিয়া। তাছাড়া অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- শেরপুর সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. পলাশ কান্তি দত্ত, ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো. ফজলুল হক, খামারি প্রকৌশলী তানজীব হাসান হিমেল প্রমুখ।

এসময় জেলা ও উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিসের, মৎস্য অফিসের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্মা-কর্মচারীবৃন্দ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

বক্তারা জানান, ২০০১ সালে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) ১ জুন তারিখকে বিশ্ব দুগ্ধ দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। ওই বছর থেকে বৈশ্বিক খাদ্য হিসেবে দুধের গুরুত্ব তুলে ধরা এবং দৈনন্দিন খাদ্য গ্রহণে দুগ্ধ ও দুগ্ধজাত পণ্য অন্তর্ভুক্ত করাকে উৎসাহিত করতে প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী এ দিবসটি উদযাপন হয়ে আসছে। তবে এবছর সারা বিশ্বে করোনার প্রভাবের কারনে অনুষ্ঠান সূচি সীমিত করা হয়েছে।

শেরপুর সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. পলাশ কান্তি দত্ত ও নকলা উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আবদুল আহাদ জানান, দুগ্ধ সপ্তাহের কর্মসূচির অংশ হিসেবে নির্দিষ্ট সংখ্যক দরিদ্র মানুষকে বিনামূল্যে দুধ পান করানো, প্রাণিসম্পদ দপ্তরের মাধ্যমে দুগ্ধ পণ্য বহুমুখীকরণে পরামর্শ ক্যাম্পেইন পরিচালনা, প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনীর আয়োজন, বিনামূল্যে প্রাণিসম্পদ চিকিৎসা ক্যাম্পেইন পরিচালনা, বিনামূল্যে প্রাণিসম্পদের জন্য কৃমিনাশক ওষুধ বিতরণ ও টিকা প্রদান ক্যাম্পেইন পরিচালনা এবং মিডিয়া ডায়ালগ আয়োজনসহ জনসচেতনতামূলক অন্যান্য প্রচার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুল হাই বলেন, দুধ একটি সুষম খাবার। দুধে সকল ধরনের পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান। সুস্থ্য জীবনের জন্য একজন মানুষের প্রতিদিন ২৫০ মিলিলিটার দুধ খাওয়া প্রয়োজন। তিনি জানান, প্রাণিসম্পদ ও ডেইরী উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় আগামী ৩ বছরের মধ্যে প্রতি উপজেলায় দুধ ও মাংস উৎপাদনের জন্য প্রডিওসার গ্রুপ তৈরী করা হবে। এসব প্রডিওসার গ্রুপের মধ্য থেকে আগ্রহীদেরকে উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরী করা হবে। যাতে তারা উৎপাদন পর্যায় থেকে বাজারজাতকরণ পর্যন্ত সাপ্লাই চেন হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারেন। তাছাড়া মাংসের চাহিদা পূরণে ও সহজে মাংস পেতে শেরপুর শহরের জেলখানার পাশে মীরগঞ্জ এলাকায় একটি অত্যাধুনিক শ্লটার হাউজ (কসাইখানা) নির্মাণ করা হবে বলেও তিনি জানান।

আলোচনা সভা শেষে স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে রচনা, কুইজ ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। সবশেষে রচনা, চিত্রাঙ্কন ও কুইজ প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন ক্যাটাগরীতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জনকারী মোট ১৫জন বিজয়ী প্রতিযোগী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।