পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সচিবালয়ে হেনস্তা ও শারীরিক নির্যাতনের স্বীকার জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করে কারাগারে প্রেরণের প্রতিবাদসহ তার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে শেরপুরের নকলা প্রেস ক্লাবের উদ্যোগে ভার্চুয়াল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ আলোচনা সভায় সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের বিরোদ্ধে সাজানো ঘটনার তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করা হয়।
মঙ্গলবার বিকেলে নকলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. মোশারফ হোসাইনের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নূর হোসেনের পরিচালনায় এ ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন- নকলা প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি খন্দকার জসিম উদ্দিন মিন্টু, সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন সরকার বাবু, যুগ্ম সম্পাদক নাসির উদ্দিন ও দেলোয়ার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ফজলে রাব্বী রাজন, দপ্তর সম্পাদক সেলিম রেজা, কোষাধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ আল-আমিন, প্রচার-প্রকাশনা সম্পাদক নাহিদুল ইসলাম রিজন, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান সৌরভ, কার্যকরী সদস্য সীমানুর রহমান সুখন, মোশাররফ হোসেন শ্যামল, সদস্য মোফাজ্জল হোসেন ও সুজন মিয়া প্রমুখ। প্রতিবাদী এ ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় নকলা প্রেসক্লাবের অন্যান্যরা পর্যায়ক্রমে সংযুক্ত হন।
বক্তারা বলেন, বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলোতে আইন কমিশন ও বিচার বিভাগীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ঐতিহ্যগতভাবে সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে সুদৃঢ় করতে ভূমিকা পালন করে থাকে। কিন্তু বিভিন্ন দেশে গণমাধ্যমের উপর চাপ ও ভয়ভীতি আমাদের সবাইকে উদ্বিগ্ন করে তুলছে। মত প্রকাশের স্বাধীনতা পর্যবেক্ষণ করে এমন কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের নিরপেক্ষ জরিপ ও তাদের মূল্যায়নে দেখা যাচ্ছে সারা বিশ্বেই গণমাধ্যমের ঝুঁকি দিন দিন বেড়েই চলেছে। আর যেসব দেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সংকুচিত হচ্ছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ একটি। সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে হেনস্তা, শারীরিক নির্যাতন ও মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা এর উজ্জল প্রমান বলে নকলা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা মনে করেন। এ ন্যাক্কার জনক ঘটনা সাংবাদিক মহলকে নতুন করে ভাবনায় ফেলেছে বলে তারা জানান।
বক্তারা এ ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং রোজিনা ইসলামের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান। ঘটনার সঙ্গে জড়িত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মচারীদের অসৌজন্যমূলক আচরণের তীব্র্র নিন্দা জানিয়ে সাংবাদিকরা বলেন, সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের সঙ্গে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অসৌজন্যমূলক আচরণ নিন্দনীয় ও দুঃখজনক। মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে রোজিনাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর এবং তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা আরও নিন্দনীয়। তারা বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেছা বেগম ও তার সহযোগি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দিতে হবে। স্বাস্থ্য বিভাগ তাদের অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও লুটপাটের তথ্য আড়াল করতে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে পরিকল্পিতভাবে সাজানো মামলায় ফাঁসানো হয়েছে তাদের দাবী। তাকে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিক নিপীড়নের মতো জঘন্যতম ঘটনা গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করার শামিল বলে মন্তব্য করেন তারা। তাদের প্রত্যাশা সাংবাদিক নির্যাতন বন্ধসহ সব ধরনের কালাকানুন, প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য বাধা ও হুমকির অবসান ঘটাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ খুব দ্রুত পদক্ষেপ নিবেন।