“আয় ছেলেরা, আয় মেয়েরা চল ছুটে যাই, কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে কৃমির ঔষুধ খাই”-এ আহবানে জাতীয় কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ (১৬ মে থেকে ২০ মে) পালনে জনসচেতনতা বাড়াতে সর্ববৃহৎ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে শেরপুরের নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রচার-প্রচারনা চালানো হচ্ছে।
জানা গেছে, করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এর দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় তথা এ ভাইরাসের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে জনগনকে সুরক্ষিত রাখতে এবারের জাতীয় কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ-২০২১ বিকল্প পদ্ধতিতে পালন করা হবে। এবার কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রভাইডার (সিএইচসিপি) ও স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে ৫ বছর থেকে ১৬ বছর বয়সী শিশু-কিশোরদের ১৬ মে থেকে ২০ মে পর্যন্ত সরকারি ব্যবস্থাপনায় কৃমি নাশক ঔষুধ খাওয়ানো হবে।
৫ বছর থেকে ১৬ বছর বয়সী শিশু-কিশোরদের ১৬ মে রবিবার থেকে ২০ মে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কৃমি নাশক ঔষুধ সেবনের জন্য জনসচেতনতা বাড়াতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার-প্রচারনা চালানো হচ্ছে। প্রচারনার অংশ হিসেবে নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ফেইসবুক পেইজসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত চিকিৎসক, নার্স, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজ নিজ ফেইসবুক পেইজ ও নিজ নিজ টাইম লাইনে প্রচারনা মূলক লেখা পোস্ট করেছেন। বিশেষ করে উপজেলার সকল কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রভাইডারগন তাদের নিজ নিজ ফেইসবুক টাইম লাইনে প্রচারনা মূলক লেখা পোস্ট করে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন।
নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ফেইসবুক পেইজ ও মেডিকেল টেকনোলজিস্ট আবু কাউছার বিদ্যুতের টাইম লাইনে পোস্ট করা লেখা অনুযায়ী জানা গেছে, ১৬ মে রবিবার থেকে ২০ মে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জাতীয় কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ পালিত হবে। নির্ধারিত তারিখের মধ্যে ও অফিস চলাকালীন সময়ে ৫ বছর থেকে ১৬ বছর বয়সী সকল শিশু-কিশোরদের একটি করে কৃমি নাশক ঔষুধ (মেবেন্ডাজল ট্যাবলেট, ৫০০ মি.গ্রা) খাওয়ানো হবে। তবে শর্ত হলো- কৃমি নাশক ঔষুধ সেবন করতে আসা সকল শিশু-কিশোরদের ভরাপেট থাকতে হবে। ভরাপেট ছাড়া এ ঔষুধ না খাওয়া উত্তম বলে জানা গেছে।
তাদের লেখায় সন্তাদেরকে নিকটস্থ কমিউনিটি ক্লিনিকে পাঠিয়ে কৃমি নাশক ঔষুধ করাতে অভিভাবকদের তাগিত দেওয়া হয়েছে। এমনকি একই সময়ে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরিবারের অন্যান্যকেও কৃমি নাশক ঔষুধ সেবনের জন্য তাদের পোস্টের মাধ্যমে বলা হয়েছে।
কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রভাইডার (সিএইচসিপি) এস.এম মনিরুজ্জামান, মাহবুবর রহমান মিঠু, হামিদুল, সুমা খাতুন, রেজুয়ানা পারভিন, জুয়েল, লুৎফর রহমান ও শহিদুজ্জামান ডালিমসহ অনেকে জানান, তারা ১৬ মে রবিবার থেকে ২০ মে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জাতীয় কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ-২০২১ পালন উপলক্ষে সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক ৫ বছর থেকে ১৬ বছর বয়সী সকল শিশু-কিশোরদের ৫০০ মি.গ্রা. একটি করে কৃমি নাশক মেবেন্ডাজল ট্যাবলেট খাওয়ানোর জন্য সকল প্রকার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বলেন, জনসচেতনতা বাড়াতে উপজেলার সবকয়টি এলাকায় মাইকিং করা হবে। কৃমি প্রাণির দেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর একটি পরজীবি। কৃমি পুষ্টিহীন করে, শারীরিক ও মেধা বিকাশে ব্যাঘাত ঘটায়। তাই কৃমি নিয়ন্ত্রণে কিছু করনীয় বিষয় মেনে চলা জরুরি। কৃমি নিয়ন্ত্রণে প্রাথমিকভাবে করনীয় বিষয় গুলো হলো- প্রতি ৬ মাস পর পর পরিবারের সকলে একসাথে কৃমি নাশক ঔষুধ সেবন করা, স্বাস্থ্য সম্মত টয়লেট ব্যবহার করা, টয়লেট থেকে ফিরে সাবান দিয়ে ভালো ভাবে হাত পরিষ্কার করা, নিয়মিত নখ কাটা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ভাবে খাবার গ্রহন করাসহ অধিকতর স্বাস্থ্য সচেতন হওয়া একান্ত আবশ্যক বলে তিনি জানান।